তাওহীদ হৃদয়ের ইনিংস, স্বস্তি কিংবা আক্ষেপ

ইনজুরির কারণে দলে নেই সাকিব। আর সেই ‘না’ থাকাটাই লাইফলাইন হিসেবে কাজে লাগালেন তাওহীদ হৃদয়। সাকিবের অনুপস্থিতিতে আজ চার নম্বরে  ব্যাটিংয়ে এসেছিলেন তরুণ এ ব্যাটার। আর উপরে ব্যাটিংয়ে সুযোগ পেয়েই করলেন বাজিমাত। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৭৯ বলে খেললেন ৭৪ রানের ইনিংস।

ইনজুরির কারণে দলে নেই সাকিব। আর সেই ‘না’ থাকাটাই লাইফলাইন হিসেবে কাজে লাগালেন তাওহীদ হৃদয়। সাকিবের অনুপস্থিতিতে আজ চার নম্বরে  ব্যাটিংয়ে এসেছিলেন তরুণ এ ব্যাটার। আর উপরে ব্যাটিংয়ে সুযোগ পেয়েই করলেন বাজিমাত। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৭৯ বলে খেললেন ৭৪ রানের ইনিংস।

লিটন দাস আউট হওয়ার পর এ দিন বাংলাদেশের ইনিংসে কিছুটা ধাক্কাই লেগেছিল। তবে সেই ধাক্কাটা ঠিকই পরবর্তীতে সামলে নেন হৃদয়। নাজমুল হোসেন শান্তর সাথে গড়ে তোলেন দুর্দান্ত এক জুটি। শুরু থেকেই ছিলেন আক্রমণাত্মক। ট্রাভিস হেডকে ২৫তম ওভারের শেষ বলে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে এসে লং অনের ওপর দিয়ে ছক্কা মেরে শুরু। এরপর থেকেই ইতিবাচক ব্যাটিং করার একটা রসদ পেয়ে যান হৃদয়।

কিন্তু শান্ত-হৃদয়ের দারুণ জুটিতে দল যখন শক্ত ভিত দাঁড় করানোর দিকে, তখনই রান আউটে কাঁটা পড়েন শান্ত। শান্তর উইকেটে বড় এক ধাক্কায় খায় বাংলাদেশ। তবে পুনের উইকেটে এ দিন ছন্দেই ছিলেন হৃদয়। দলের রানগতি কখনোই থামতে দেননি। যদিও রিয়াদের সাথে জুটিতে মাঝে ব্যাটিংয়ে কিছুটা স্ট্রাগল করছিলেন হৃদয়। তাতে অবশ্য দলের ক্ষতি হয়নি। কেননা, ক্রিজে নেমেই ছক্কা মারা মাহমুদউল্লাহও দিয়েছিলেন আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়েরই আভাস। আর এতেই বড় রানের একটা ভিত্তি পেয়ে যায় বাংলাদেশ।

শান্তর মতোই দারুণ খেলতে মাহমুদউল্লাহও এ দিন ফিরে যান রানআউটের দুষ্টচক্রে পড়ে। আর তাতেই দারুণ অবস্থান থেকে রানআউটে নিয়ন্ত্রণ হারায় বাংলাদেশ। যদিও ততক্ষণে উইকেটে থিতু হয়ে পড়েছিলেন হৃদয়। আর তাতেই উইকেটে যতক্ষণ হৃদয় ছিল, ততক্ষণ স্বস্তিতে সময় কাটিয়েছে বাংলাদেশ।

রিয়াদ ফিরে যাওয়ার পর হৃদয় জুটি বাঁধেন মুশফিকের সাথে। আর এর মধ্যেই বিশ্বকাপের মঞ্চে তিনি তুলে নেন প্রথম ফিফটি। ৬১ বলে পৌঁছে যান ৫০-এ। তবে পঞ্চাশ পূরণের পর যে কাজটা হৃদয়ের করার কথা ছিল সেটিই করতে পারেননি তিনি। নিজের ইনিংসটাকে বড় করতে পারেননি। শেষ দিকে এসে ব্যাটে বলে তেমন সংযোগ ঘটাতে পারেননি। আর তাতেই মার্কাস স্টয়নিসের পাতা ফাঁদে পা দেন তিনি।

বারবার ডাউন দ্য উইকেটে উঠে আসছিলেন দেখে, হৃদয়কে ফুলটস দিয়েছিলেন স্টয়নিস। আর সেটিতেই মিডউইকেটে ক্যাচ দেন হৃদয়। মিড উইকেটে থাকা মার্নাস লাবুশ্যানের বিশ্বস্ত হাত প্রতারণা করেনি। ৭৯ বলে ৭৪ রান করে ফিরে যান হৃদয়। যে ইনিংসটা পেতে পারতো আরো সমৃদ্ধি। হয়তো তিন অঙ্কও ছোঁয়ার সুযোগ ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। অবশ্য হৃদয় সেঞ্চুরি না পেলেও ৩০০ পেরিয়েছে বাংলাদেশ। এবারের বিশ্বকাপে বাংলাদেশের দলগত সর্বোচ্চ সংগ্রহ গড়ার দিনে তাই হৃদয়ের অবদান কোনো অংশেই কম নয়।

এবারের বিশ্বকাপে ব্যাট হাতে সময়টা মোটেই ভাল যায়নি হৃদয়ের। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩৯ রানের এক ইনিংস ব্যতিত প্রতিটি ম্যাচেই তিনি সাজঘরে ফিরেছেন হতাশাকে সঙ্গী করে। তবে শেষ দিকে এসে এমন একটা ইনিংস নিশ্চিতভাবেই হৃদয়কে অনুপ্রেরণা জোগাবে।

তবে, ব্যর্থ বিশ্বকাপ মিশনের শেষটায় কিছু আলো ছড়ানো হৃদয়ের এখনও অনেক কিছু শেখার রয়েছে। গেম সেন্স কিংবা ব্যাটিং সেন্সিবিলিটিতে হৃদয় এখনও বেশ কাঁচা। পরিণত ব্যাটার হওয়ার পথে এই সব সীমাবদ্ধতাগুলোই আগে কাটিয়ে উঠতে হবে। হৃদয় হয়তো অচিরেই সেগুলো রপ্ত করে নিবেন।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...