পুরনো খামে বোল্টের নতুন চিঠি

টানা চার ম্যাচ জেতার পর আবার চারটা হার – সেমিফাইনালে উঠতে হলে তাই শেষ ম্যাচে জয়ের কোন বিকল্প নেই নিউজিল্যান্ডের সামনে। শুধু জিতলেই হবে না, নিরাপদে থাকতে হলে ব্যবধানটাও বড় হতে হবে। এমন মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে নিজের বোলিং জাদু আরো একবার দেখালেন ট্রেন্ট বোল্ট; একাই ধ্বসিয়ে দিলেন শ্রীলঙ্কার ব্যাটিং অর্ডার।

কুশল মেন্ডিস, সাদিরা সামারাবিক্রমা আর চারিথ আসালঙ্কা – বিশ্বকাপ জুড়ে লঙ্কান ব্যাটিং লাইনআপের ভরসা হয়ে থাকা এই তিনজনকে একাই ঝুলিতে পুরেছেন তিনি। আর দশ ওভার হাত ঘুরিয়ে খরচ করেছেন মাত্র ৩৭ রান; এই ম্যাচেই নিজের বিশ্বকাপ ক্যারিয়ারের ৫০তম উইকেটের দেখা পেয়েছেন এই পেসার।

যাত্রাটা করেছিলেন কুশল মেন্ডিসকে দিয়ে। পঞ্চম ওভারের প্রথম বলে ট্র্যাডিশনাল ইনসুইং করেছিলেন তিনি। ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে খেলতে গিয়ে সোজা থার্ড ম্যানে ক্যাচ তুলে দেন লঙ্কান অধিনায়ক। একই ওভারের চতুর্থ বল, এবার আউটসুইং। ফ্রন্টফুটে ডিফেন্স করতে গিয়ে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে বসেন সামারাবিক্রমা; সেখান থেকেই ব্যাটারদের আসা যাওয়ার মিছিল দেখা যেতে শুরু করেছিল।

 

তবে বোল্টের সুন্দরতম উইকেট সম্ভবত আসালঙ্কার সেই আউটটা। হালকা ভিতরে দিকে বলটা আঘাত করিয়েছিলেন এই বামহাতির প্যাডে; এরপর এলবিডব্লু। না, আম্পায়ার প্রথমে আউট দেননি; এমনকি নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনও ভেবেছিলেন আউট হয়নি।

কিন্তু আত্মবিশ্বাসী ছিলেন কিউই পেসার, অধিনায়ককে রিভিউ নিতে একপ্রকার জোর করেছিলেন। ফলাফল, আউট!

নতুন বলে উইকেট পেয়েছেন, পুরনো বলে উইকেট পাননি। কিন্তু তাই বলে দ্বিতীয় স্পেলে এক বিন্দুও ছাড় পায়নি প্রতিপক্ষ। সেসময় চার ওভার বল করে আদায় করেছেন দুইটি মেডেন; দিয়েছেন ৭ রান! ক্যারিয়ারের সম্ভাব্য শেষ বিশ্বকাপ ট্রেন্ট বোল্টের; শেষ সুযোগ বিশ্বকাপ ট্রফি জেতার। তাই তো তাঁকে ঘিরে প্রত্যাশাও রয়েছে অনেক।

যদিও খারাপ বা গড়পড়তা বোলিং করেছেন সেটা বলার সুযোগ নেই তবে আগ্রাসী বোল্টের স্বভাবসুলভ স্পেলের দেখা মেলেনি পুরো আসরে। অবশেষে সেই অপেক্ষা ফুরিয়েছে, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দেখিয়েছেন তিনি কি করতে পারেন।

অঘটন না ঘটলে টানা দ্বিতীয়বার বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলবে নিউজিল্যান্ড। আগের বারের অসমাপ্ত কাজ কি এবার শেষ করতে পারবে তাঁরা?

এর আগে অবশ্য ভারত বাঁধা টপকাতে হবে; ২০১৯ বিশ্বকাপের পুনরাবৃত্তি ঘটাতে হবে। লঙ্কানদের বিপক্ষে এমন পারফরম্যান্স সেই লক্ষ্য পূরণে নিশ্চয়ই আত্মবিশ্বাস জোগাবে এই বাঁ-হাতি পেসারকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link