হাউজ্যাটটট – যে কোনো আউটের আবেদনের ক্ষেত্রে এই শব্দটা ক্রিকেটার কিংবা ক্রিকেট অনুরাগীদের জন্য পরিচিত শব্দই বটে। তবে এই শব্দের বিশালতা যেন ফুটে উঠলো অ্যাডিলেডের অদ্ভুত এক কাণ্ডে। রান আউট হয়েও বেঁচে গেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের আলজারি জোসেফ। কারণ অস্ট্রেলিয়ান ফিল্ডাররা যে আবেদন করতেই ভুলে গিয়েছিলেন!
আউট কেন হলো না, সেই বিতর্কের আগে মূল ঘটনায় ফেরা যাক। ম্যাচের ১৯তম ওভারে স্পেন্সার জনসনের একটি বল কাভারে খেলে সিঙ্গেল নিতে গিয়েছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের শেষ ব্যাটার জোসেফ। তবে সেখানে থাকা ফিল্ডারের থ্রো থেকে ননস্ট্রাইক প্রান্তের স্টাম্প ভাঙেন জনসন। পরে রিপ্লেতে দেখা যায়, স্ট্যাম্প ভাঙার সময় জোসেফ ছিলেন ক্রিজের বাইরেই। ফলত, নিশ্চিত আউট হয়ে যাওয়ার কথা ক্যারিবিয়ান এ ব্যাটারের।
কিন্তু জেরার্ড অ্যাবুড সবাইকে বিস্ময়ে ভাসিয়ে নট আউটের সিদ্ধান্ত দেন। এমনকি তিনি টেলিভিশন আম্পায়ারেরও কোনো সহায়তা নেননি। কারণ, তাঁর মতে অস্ট্রেলিয়ানরা যে আবেদনই করেনি। এখন ক্রিকেটীয় আইন কী বলছে? এমসিসির ৩১.১ নম্বর ধারা স্পষ্টভাবেই আছে, ‘কোনো ব্যাটার আউট হলেও কোনো ফিল্ডার যদি আবেদন না করেন, তাহলে কোনো আম্পায়ারই তাকে আউট দেবেন না।’ অ্যাবুড ঠিক সেই আইন মেনেই তাঁর সিদ্ধান্ত দিয়েছেন।
যদিও জানা যায়, স্পেন্সার জনসন ঠিকই আবেদন করেছিলেন। কিন্তু আম্পায়ারের দাবি আবার ভিন্ন। কেউই আবেদন করেনি। আম্পায়ার অ্যাবুড অবশ্য সেভাবে ভুলও দাবি করেননি। কেননা টিভি রিপ্লেতে দেখা যায়, স্ট্যাম্প ভেঙে বোলার জনসন তাঁর রানআপের দিকে ফিরে যাচ্ছেন। অর্থাৎ জোসেফ আউট ছিলেন, সেটি হয় তিনি বুঝতেই পারেননি, নয়তো নিশ্চিত আউট ভেবে তিনি আবেদন করেননি।
তবে এখানেও ক্রিকেটীয় আইনের বেড়াজালে বন্দী হয়েছে অস্ট্রেলিয়া। আরেকটি আইনে বলে, আবেদন কার্যকর হতে গেলে বোলারের রানআপ শুরুর আগেই করতে হবে। এমনকি বোলার যদি রানআপ নাও নেন, তাহলে পরের বল করার উদ্যত হওয়ার আগেই করতে হবে। কিন্তু এখানে জনসন পরের বলটি করার জন্য বোলিং প্রান্তের দিকে এগিয়েছিলেন। আইনত, যেটি আউট নয়।
তবে এমন ঘটনায় অ্যাডিলেডে মাঠ উত্তপ্ত হয়েছে ঠিকই। যদিও এমন সিদ্ধান্ত ম্যাচ ভাগ্য সেভাবে পাল্টাতে পারেনি। অস্ট্রেলিয়ার দেওয়া ২৪২ রানের লক্ষ্যে ক্যারিবিয়ানরা থেমে যায় ২০৭ রানে।