ভিনিসিয়াস জুনিয়র, মরুর বুকে জোগো বোনিতোর ধারক

যেন 'জোগো বোনিতো' হঠাতই নেমে এসেছিলেন মর্ত্যে। ধমনিতে যার ছিল স্কটিশ রক্ত। কিন্তু ব্রাজিলে শৈল্পিক ফুটবলের গোড়াপত্তনকারী তো তিনিই ছিলেন। তাঁর উত্তরসূরি হিসেবে লাতিন আমেরিকার দেশটিতে একে জন্মেছে ফুটবল মাঠের ছান্দসিক কবি। এবার সেই ছন্দের জাদুটা যেন দেখালেন ভিনিসিয়াস জুনিয়র। মরুর বুকে রীতি কাঁপন ধরালেন বার্সার রক্ষণ সীমান্তে। তাঁর হ্যাটট্রিকেই যে এখন স্প্যানিশ সুপার কাপের বিজয়োল্লাসে রিয়াল মাদ্রিদ।

যেন ‘জোগো বোনিতো’ হঠাৎই নেমে এসেছিলেন মর্ত্যে। ধমনিতে যার ছিল স্কটিশ রক্ত। কিন্তু ব্রাজিলে শৈল্পিক ফুটবলের গোড়াপত্তনকারী তো তিনিই ছিলেন। তাঁর উত্তরসূরী হিসেবে লাতিন আমেরিকার দেশটিতে একে জন্মেছে ফুটবল মাঠের ছান্দসিক কবি। এবার সেই ছন্দের জাদুটা যেন দেখালেন ভিনিসিয়াস জুনিয়র। মরুর বুকে রীতি কাঁপন ধরালেন বার্সার রক্ষণ সীমান্তে। তাঁর হ্যাটট্রিকেই যে এখন স্প্যানিশ সুপার কাপের বিজয়োল্লাসে রিয়াল মাদ্রিদ।

চোটের কারণে এ মৌসুমে বেশ ভুগেছেন ভিনিসিয়ুস। সম্প্রতি মাঠে ফিরলেও দেখা পাননি গোলের। কে জানত, নিজের গোলগুলো সব বার্সা ম্যাচের জন্য জমিয়ে রেখেছেন এই ব্রাজিলিয়ান। ফাইনালে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের পেয়ে রীতিমতো ছেলেখেলায় মেতে ওঠেন তিনি। গুণে গুণে বার্সার জালে ঢুকান ৩ টি গোল।

একবিংশ শতাব্দীতে এল ক্লাসিকোতে যা পঞ্চম হ্যাটট্রিক এবং রিয়ালের হয়ে দ্বিতীয়। ২০০০ সালের পর এত দিন রিয়ালের হয়ে একমাত্র হ্যাটট্রিকটি ছিল করিম বেনজেমার। নি:সঙ্গ বেনজেমাকে এবার সেই কীর্তিতে সঙ্গ দিলেন ভিনিসিয়াস জুনিয়র।

ম্যাচের ৭ থেকে ১০ মিনিট, এ তিন মিনিটের মাঝেই রিয়াল মাদ্রিদদে চালকের আসনে বসিয়ে দেন এই ব্রাজিলিয়ান। ৭ম মিনিটে জুড বেলিংহামের কাছ থেকে বল পেয়ে দারুণভাবে এগিয়ে গিয়ে ড্রিবল করীন গোলরক্ষককেও। তারপর দারুণ ফিনিশিংয়ে এগিয়ে দেন রিয়ালকে। গোল করেই নিজের আইডল ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর ‘সিউ’ উদযাপন করতেও ভোলেননি তিনি।

এরপর ম্যাচের দশম মিনিটে কারভাহাল নিজেদের অর্ধ থেকে পাস দেন রদ্রিগোকে। ডান দিক দিয়ে বক্সে ঢুকে তিনি পাস দেন অন্য পাশে স্বদেশী ভিনিসিয়াসের উদ্দেশ্যে। ব্রাজিলিয়ান এ সেনসেশনও ভুল করেননি। ছুটে গিয়ে স্লাইডে ফাঁকা জালে বল পাঠান ২৩ বছর বয়সী এ তারকা। ভিনিসিয়াসের ওই তিনি মিনিটের জোড়া ব্যবধানে বার্সা তখন রীতিমত দিশেহারা।

অবশ্য রবার্ট লেভানডফস্কি দারুণ এক শটে গোল করে ম্যাচে ফিরিয়েছিলেন। কিন্তু ম্যাচ জমে ওঠার আগেই ফাইনালের ভাগ্য নির্ধারণ করে দেন সেই ভিনিসিয়াসই। ম্যাচের ৩৯ মিনিটে তাঁকে ডি বক্সে পেয়ে ফাউল করে বসেছিলেন আরাউহো। আর তাতেই পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। সফল স্পট কিক থেকে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন ভিনিসিয়াস।

Soccer Football – Spanish Super Cup – Final – Real Madrid v FC Barcelona – Al-Awwal Stadium, Riyadh, Saudi Arabia – January 15, 2024 Real Madrid’s Vinicius Junior celebrates with the trophy and the match ball after scoring a hat-trick and winning the Spanish Super Cup REUTERS/Juan Medina

প্রথমার্ধের পর ম্যাচের ফিরতে বার্সেলোনার সকল প্রচেষ্টা এরপর  লক্ষ্যভ্রষ্টই হয়েছে শুধু। বরং এক ভিনিসিয়াসের কারণেই হাইফ ডিফেন্স লাইনের চড়া মূলে দিতে হয়েছে কাতালানদের। ম্যাচের ৬৪ মিনিটে আবারো লিড পায় রিয়াল মাদ্রিদ। ডি বক্সের ভিতর থেকে জোরালো শটে গোল করে একরকম ম্যাচের ইতি টেনে দেন আরেক ব্রাজিলিয়ান রদ্রিগো। বলাই বাহুল্য, সেই আক্রমণটিও তৈরি করেছিলেন সেই ভিনিসিয়াসই।

ব্রাজিলের মাটিতে মিশে আছে জোগো বোনিতোর বীজ। এরপর সময় পেরিয়েছে। শৈল্পিক ফুটবলের ধারক হিসেবে একেক ব্রাজিলিয়ান একেক সময়ে ব্যাটন সামলেছেন। ইউরোপিয়ান ফুটবলে এই সময়ে এসে সেই ব্যাটনটা এখন ভিনিসিয়াসের হাতে।

শৈল্পিক ফুটবলের মাধ্যমে যিনি লিখছেন সম্ভাবনার দারুণ সব গল্প। রিয়ালের হয়ে বিশ্বজয় হয়েছে এই বয়সেই। ব্রাজিলের হয়ে বিশ্বজয়টাই শুধু এখন বাকি। লাতিন ফুটবলের আগ্রাসনটা নিশ্চিতভাবেই ফেরাতে চাইবেন এই ভিনিসিয়ুস জুনিয়র।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...