অনিশ্চয়তা – শব্দটি যেন পাকিস্তান ক্রিকেটের জন্যই সৃষ্টি হয়েছে। আর এই সিদ্ধান্তের জের ধরেই পাকিস্তানের কোচ হওয়ার প্রস্তাব থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার করলেন শেন ওয়াটসন। শত জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে এ সিদ্ধান্তের আগমন ঘটল।
অস্ট্রেলিয়ার সাবেক এই অলরাউন্ডার পাকিস্তান সুপার লিগে (পিএসএল) কোয়েটা গ্ল্যাডিয়েটর্সের কোচ। পাকিস্তানের সাদা বলের কোচের দায়িত্ব নেয়ার আলোচনায় তাঁর নাম ছিল সবার শীর্ষে। পিএসএল চলাকালীন পাকিস্তানে তাঁর পুরোটা সময় উপভোগ করেন।
খেলোয়াড়দের মাঝে সম্ভাবনা দেখতে পান। তিনি প্রস্তাবটি গুরুত্বের সাথে নিয়েছিলেন। তাঁর বেশ আগ্রহও ছিল। তবে বর্তমানে বোঝা যায় যে, সেই আগ্রহ ছিল শুধুই সম্মান রক্ষার জন্য।
ওয়াটসন বর্তমানে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) ধারাভাষ্য করার চুক্তিতে রয়েছে। তাছাড়া, মেজর লিগ ক্রিকেটের দল স্যান ফ্র্যান্সিসকো ইউনিকর্নের প্রধান কোচের ভূমিকা পালন করতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। সিডনিতে তাঁর পরিবার থাকে। সব বিবেচনা করে, পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবির) দেওয় আকাশচুম্বী পারিশ্রমিকের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছেন তিনি।
এপ্রিলে পাকিস্তানের মাঠেই হবে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ। পিএসএলের সুবাদে পাকিস্তানে বেশ অনেকটা সময় ধরে অবস্থান করছিলেন তিনি। পাকিস্তান ক্রিকেটের ব্যাপারে ওয়াটসনের বোঝাপড়াও ভাল বলে, তিনি ছিলেন কোচ হওয়ার দৌড়ে সবচেয়ে এগিয়ে।
পিসিবি চেয়ারম্যান মহসিন নাকভির সাথে আলোচনা অনেক দূর এগিয়েও যায়। তবে, সমস্যা হল পাকিস্তানের ক্রিকেট সংস্কৃতি খুবই গোলযোগপূর্ণ। কোনো কিছুই পিসিবিতে দীর্ঘস্থায়ী নয় – সেটা কোনো সিদ্ধান্ত হোক কিংবা হোক কোনো পদ। তাই, এই দফায় পিসিবির মিষ্টি কথায় ভুলতে নারাজ ছিলেন ওয়াটসন।
অবশ্য, আর্থিক ভাবে বেশ লাভবানই হওয়ার সুযোগ ছিল ওয়াটসনের। বার্ষিক দুই মিলিয়ন মার্কিন ডলার পারিশ্রমিকের প্রস্তাব ছিল। এর অর্থ হল তিনি প্রতি মাসে গুণতেন চার কোটি ষাট লাখ পাকিস্তানি রুপি। এই চুক্তি বাস্তবায়িত হলে, ওয়াটসন পাকিস্তান ক্রিকেট ইতিহাসের সর্বোচ্চ বেতনভোগী প্রধান কোচ বনে যেতেন।
তবে, সেই আশায় গুড়ে-বালি। ওয়াটসনের সরে যাওয়ার অর্থ হল, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে প্রধান কোচ ছাড়াই খেলতে হবে পাকিস্তানকে। জুন মাসে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্বকাপ সামনে রেখে মে মাসে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার কথা রয়েছে পাকিস্তানের। এবার এর আগে নতুন কোচ পেলেই হয়!
জানিয়ে রাখা ভাল, ২০২৩ সালের শেষ দিকে কোয়েটা গ্ল্যাডিয়েটর্সের প্রধান কোচের দায়িত্ব পান ওয়াটসন। তিনি ২০১৯ সালে খেলোয়াড় হিসেবে গ্ল্যাডিয়েটর্সের সাথে একটি শিরোপা জিতেছিলেন। তিনি কোচ হিসেবে বেশ কিছু পরিবর্তন আনেন গ্ল্যাডিয়েটর্সের শিবিরে। তার মধ্যে সরফরাজ আহমেদ এর পরিবর্তে দক্ষিণ আফ্রিকার রাইলি রুশোকে অধিনায়কত্ব দেয়া অন্যতম।
গ্ল্যাডিয়েটর্সররা অত্যন্ত দৃঢ়ভাবে শুরু করেছিল। পাঁচ মৌসুমের মধ্যে প্রথমবারের মত প্লে অফ খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছিল। যাই হোক, শেষের দিকে তাঁরা গতি হারায়। ইসলামাবাদ ইউনাইটেডের কাছে হেরে তারা বাদ পড়ে।