চাপের মুহূর্তে মেহেদীকে কী বলেছিলেন লিটন?

ওয়ানডে থেকে টি-টোয়েন্টি। ফরম্যাট বদলে গেলেও বদলালো না দৃশ্যপট। আবারো নেপিয়ারে বাংলাদেশের দাপট। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচে জয় পেল টাইগাররা। এর আগে ২০ ওভারের খেলায় নিউজিল্যান্ডের মাটিতে ৯ ম্যাচ খেলে সব কটিতে হেরেছে বাংলাদেশ। দশম ম্যাচে এসে অধরা জয়ের দেখা পেল নাজমুল হোসেন শান্তর দল।

নিউজিল্যান্ডের দেওয়া ১৩৫ রানে তুলনামূলক সহজ লক্ষ্য তাড়ায় যদিও শেষদিকে কিছুটা চাপে পড়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। তবে লিটন দাসের দায়িত্বশীল ব্যাটিং আর মাহেদীর দারুণ সঙ্গে ৮ বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। সাময়িক চাপের ওই পরিস্থিতিতে দুজন যে কৌশলে খেলেছেন ম্যাচের পর জানিয়েছেন ম্যাচ সেরা মেহেদী।

ম্যাচের এক পর্যায়ে ৯৭ রানে পাঁচ উইকেট হারানোয় কিছুটা চাপে পড়া বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল একটা ছোট জুটি। লিটন-মাহেদীর দারুণ বোঝাপড়ায় ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে ৪০ রানের নেপিয়ারে ম্যাচভাগ্য চলে যায় বাংলাদেশ শিবিরে। এ নিয়ে ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে খোলামেলা কথা বলেছেন মেহেদী।

তাঁর ভাষায়, ‘যেহেতু লিটন লম্বা সময় ধরে ব্যাটিং করছিল, উইকেট সম্পর্কে একটা ভাল ধারণা হয়ে গিয়েছিল। এই ম্যাচটা জিততে হলে হয়তোবা ছোট আরেকটা জুটি দরকার ছিল। যেহেতু আমাদের ভালো জুটি হচ্ছিল মাঝখানে আবার দুইটা তিনটা ব্রেকথ্রু চলে গেছে কিউইদের পক্ষে। সেখান থেকে কামব্যাক করতে লিটন শুধুই আমাকে পজিটিভ ক্রিকেট খেলতে বলেছিল। আমিও নরমালি ব্যাট করেছি। ভাবনাটা ছিল, এভাবে খেললে শেষ দুই ওভারে ম্যাচ বের করে নেওয়া যাবে। আমরা সেভাবেই এগিয়েছি।’

নেপিয়ারের এই উইকেটে ১৩৫ রান চেজ করতে গিয়ে কিছুটা বেগই পেতে হয়েছে বাংলাদেশকে। তবে এমন রান টপকানো এই উইকেটে মোটেই কঠিন ছিল না মন্তব্য করে মেহেদী বলেন, ‘উইকেট সহজই ছিল। চেজ না করার মতো কিছু ছিল না।  তারপরও গোল বলের খেলা, যে কোনো সময় মোমেন্টাম পরিবর্তন হয়ে যেতে পারে। ইনিংসের প্রথম অর্ধে আমরা এগিয়ে ছিলাম। মাঝে ওরা ব্যাক করেছে। তবে শেষটা আমরাই ভাল করেছিল। এমন মোমেন্টামের পরিবর্তন হবেই। এটাই ক্রিকেট।’

নেপিয়ারে আগের ম্যাচে প্রতাপ ছড়িয়েছিল পেসাররা। তবে এ দিন শুরুতেই বাংলাদেশকে ব্রেক থ্রু দেন স্পিনার মেহেদী। মাঠে স্পিনাররা কেমন সুবিধা পেয়েছেন এমন প্রশ্নের জবাবে মাহেদী বলেন, ‘এই কন্ডিশনে স্পিন বল করা সত্যি কষ্টকর। তবে আমি আমার লাইন-লেন্থ সঠিকভাবে কার্যকর করার চেষ্টা করেছি এবং তাতে ফল পেয়েছি।’

৪ ওভারে ১৪ রান দিয়ে ২ উইকেট নেওয়া মেহেদী এ দিন কিউই ব্যাটারদের চাপে রেখেছিলেন দারুণভাবে। তাঁর বোলিংয়েই আগ্রাসী শুরু পায় বাংলাদেশ।

এ নিয়ে তিনি বলেন, ‘উইকেট কিছুটা মন্থর ছিল। একটা বল স্লো আসছিল, টার্ন হচ্ছিল, আবার আরেকটা সোজা আসছিল। আমি গুড লেন্থে টানা বল করে গেছি। এ কারণে আমি পাওয়ার-প্লেতে ভালো করতে পেরেছি এবং দলের জন্য ভালো কিছু এনে দিতে পেরেছি।’

বোলিংয়ের পাশাপাশি দলের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ব্যাট হাতে ১৬ বলে ১৯ রান করেন মাহেদী।  লিটনকে দারুণ সঙ্গ দিতে গিয়ে চার হাঁকিয়ে জয়সূচক রানটিও এনে দেন তিনি। তার ইনিংস থেকে আসে একটি করে চার ও ছক্কা। নিজের ব্যাটিং নিয়ে তিনি বলেন, ‘যখন আমি ভালো বোলিং করি, তারপর ব্যাটিংয়ের সময়ও সেটা আমাকে আত্মবিশ্বাস দেয়। আমি সব সময়ই আমার ব্যাটিং উপভোগ করি।’

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link