মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশ জাতীয় দলের অধিনায়ক। হোক সেটা একদিনের জন্য কিংবা একটা ম্যাচের জন্য। তবুও তো তাঁর নামের পাশে অধিনায়ক শব্দটা বসে যাবে। একটা ম্যাচেই বা বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নেতৃত্ব দেয়া কম কিসের। মোদ্দাকথা জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে বাংলাদেশের অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজে দায়িত্ব পাওয়া অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচের সময়েই আঙুলে চোট পেয়েছেন। তবে তিনি যে পুরো সফর থেকেই ছিটকে গিয়েছেন সেটা জানা যায় গতকাল রাতে। ফলে কাল রাত থেকেও প্রশ্ন ছিল সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিবেন কে? দলে তো আর কোন সিনিয়র ক্রিকেটারও নেই এবার। ফলে আগে থেকে অনুমান করাও কঠিন।
তবুও দারুণ ছন্দে থাকা লিটন দাসের নাম আসছিল বারবার। এছাড়া টেস্ট ক্রিকেটেও তিনি বাংলাদেশের সহ-অধিনায়ক। ফলে এই টি-টোয়েন্টি দলে অধিনায়ক হবার যোগ্য দাবিদার তো তিনিই। তবুও যেহেতু টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট এবং বাংলাদেশ বেশ পরীক্ষা নীরিক্ষা চালাচ্ছে ফলে অন্য কেউও হতে পারতো।
হয়েছেও তাই, শেষ ম্যাচে অধিনায়কত্বের দায়িত্ব পেয়েছেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। অথচ এই মুহূর্তে বিসিবির কোন ফরম্যাটের চুক্তিতেও নেই মোসাদ্দেক। এমনকি কিছুদিন আগেও তাঁর একাদশে জায়গা পাওয়া নিয়ে ছিল সংশয়।
এই সিরিজে তিনি খেলবেন কিনা তাও নিশ্চিত ছিল না। কেননা স্পিনিং অলরাউন্ডার হিসেবে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে নিয়মিত পারফর্ম করছিলেন শেখ মেহেদী হাসান। তবে মেহেদীকে বাদ দিয়ে এই সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে খেলানো হলো মোসাদ্দেককে।
মোসাদ্দেক মূলত কাজের কাজটা করে দিয়েছেন গতকাল। অর্থাৎ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে। জিম্বাবুয়ের ব্যাটিং লাইন আপে ধস আনার জন্য মোসাদ্দেক একাই যথেষ্ট ছিলেন। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ক্যারিয়ারের প্রথম পাঁচ উইকেট পেলেন মোসাদ্দেক। এমনকি জিম্বাবুয়ের প্রথম পাঁচ উইকেটের পাচটাই গেছে মোসাদ্দেকের ঝুলিতে।
বল হাতে এমন অবিশ্বাস্য পারফর্মেন্সের পুরষ্কারও পেলেন এক রাতের মধ্যেই। আগামীকাল তিনি বাংলাদেশের হয়ে টস করতে নামবেন। মোসাদ্দেকের এই অধিনায়কত্ব পাওয়া খানিকটা সিলেবাসের বাইরেই। তবুও এতে আপত্তি জানানোর খুব বেশি কারণ নেই।
কেননা প্রথমত দায়িত্বটা মাত্র এক ম্যাচের জন্য। আর টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে বাংলাদেশ এখন পরীক্ষা-নীরিক্ষার মধ্য দিয়েই যাচ্ছে। ফলে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একটা টি-টোয়েন্টি ম্যাচে মোসাদ্দেকের নেতৃত্ব পাওয়া নিয়ে খুব বেশি প্রশ্ন তোলারও নেই।
তবে এটি ছাড়াও ঘটনা ঘটেছে আরো একটি। নুরুল হাসান সোহানের ইনজুরির কারণে তাঁর বদলি হিসেবে দলে ডাক পেয়েছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। আর এখানেই ঘটেছে বিপত্তি।
কেননা কিছুদিন আগেই টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট থেকে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে বিশ্রাম দেয়া হয়েছে। অফ ফর্মের কারণে রিয়াদ দল থেকে বাদ পড়েছেন বা অধিনায়কত্ব হারিয়েছেন এমন কোন কিছুই একবারো বিসিবি থেকে বলা হয়নি।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) থেকে পরিষ্কার বার্তা ছিল মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে সাময়িক বিশ্রাম দেয়া হয়েছে। আর বিসিবির এই উক্তিকে আমরা বেদবাক্য হিসেবে ধরে নিচ্ছি। কিন্তু আজকের সিদ্ধান্তের পর আবার সেই হিসেব মিলে না।
একটু খুলে বলা যাক। বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে বিশ্রামে পাঠানো হয়েছিল। তিনি আবার দলে ফিরে এসেছেন বিশ্রাম ভেঙে। ফলে স্বাভাবিক ভাবে তো তাঁরই আবার অধিনায়ক হবার কথা। অথচ মূল অধিনায়ক দলে ফেরার পরেও খুঁজতে হলো নতুন অধিনায়ক। তাহলে কী বিশ্রামের আড়ালে রিয়াদকে কার্যত বহিষ্কারই করা হয়েছে। এই হিসেবটা যে কিছুতেই মিলছে না।