নারাইন-রাসেলের কেকেআরে কাজ কি?
জয় দিয়েই এবারের আইপিএল মৌসুম শুরু করলেও টানা তিন হারে পয়েন্ট তালিকায় পিছিয়ে পড়েছে কলকাতা নাইট রাইডার্স। আগামী দিনগুলোতে তাই টানা জয়ের বিকল্প নেই দলটির, নইলে বিদায় নিতে হবে শেষ চারের আগেই। এমতাবস্থায় প্রশ্ন উঠছে দলের অভিজ্ঞ দুই ক্যারিবীয় তারকা আন্দ্রে রাসেল এবং সুনীল নারিনের ফর্ম নিয়ে। অতীতে দলকে দুবার আইপিএলের শিরোপা জেতালেও বর্তমানে বয়সের ভার এবং ফর্মহীনতায় ভুগছেন এই দুই তারকা।
পরাজয় দিয়ে এবারের আইপিএল মৌসুম শুরু। এরপর আবার জয়ের ধারায় ফিরেও টানা তিন হারে পয়েন্ট তালিকায় পিছিয়ে পড়েছে কলকাতা নাইট রাইডার্স। আগামী দিনগুলোতে তাই টানা জয়ের বিকল্প নেই দলটির। তা না হলে বিদায় নিতে হবে শেষ চারের আগেই। এমতাবস্থায় প্রশ্ন উঠছে দলের অভিজ্ঞ দুই ক্যারিবীয় তারকা আন্দ্রে রাসেল এবং সুনীল নারাইনের ফর্ম নিয়ে। অতীতে দলকে দু’বার আইপিএলের শিরোপা জেতালেও বর্তমানে বয়সের ভার এবং ফর্মহীনতায় ভুগছেন এই দুই তারকা।
বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি কার্যকরী আন্দ্রে রাসেলের বোলিং এবং দুর্দান্ত ফিল্ডিং দক্ষতার সুনাম আছে আইপিএলে। গত এক দশকে কলকাতা দলটির অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে আছেন তিনি। দলে তাঁর জায়গা নিয়ে কখনোই প্রশ্ন তোলার অবকাশ ছিল না। ২০১৯ মৌসুমে নিজের সেরা সময় কাটান এই তারকা, সেবারে ১৪ ম্যাচে দুইশো ছাড়ানো স্ট্রাইকরেটে ৫১০ রান করেন রাসেল। কিন্তু বর্তমানে যেন নিজের পুরনো সময়ের ছায়া হয়ে আছেন এই তারকা।
ব্যাটে রান নেই, বোলিং যেন নখদন্তহীন – সবমিলিয়ে রাসেল যেন বয়সের ভারে ন্যুব্জ এক অলরাউন্ডার। শেষ দশ ম্যাচে সব ধরনের ক্রিকেট মিলিয়ে তাঁর সর্বোচ্চ ইনিংস ৩৮ রানের। এবারের আইপিএলের পরিসংখ্যান তো আরো ভয়াবহ, ছয় ম্যাচ খেলে করেছেন মোটে ৯৮ রান। স্ট্রাইকরেটটাও রাসেলসুলভ নয়, ১৪০।
কেবল এবারের আসর নয়, বিগত তিন আসর ধরেই রাসেল ফর্মহীনতায় ভুগছেন। ২০২০ মৌসুম ইনজুরিতে মিস করার পর ২০২১ মৌসুমে সাত ম্যাচে ১৪২ স্ট্রাইকরেটে সংগ্রহ করেন মাত্র ১৬৩ রান। আগে তবু ব্যাটিংয়ে ব্যর্থ হলেও বোলিংয়ে সেটা পুষিয়ে দিতেন রাসেল।
ম্যাচের পরিস্থিতি বিবেচনায় উইকেট এনে দেয়ার সুনাম ছিল রাসেলের। কিন্তু গত দুই মৌসুমে ইনজুরির শংকায় বোলিং থেকে এক প্রকার নিজেকে গুটিয়েই নিয়েছেন এই অলরাউন্ডার। এবারের মৌসুমে ছয় ম্যাচে মাত্র চার ওভার বল করেছেন।
এছাড়া বয়স বাড়ার সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে রাসেলের ইনজুরিতে ম্যাচ মিসের সংখ্যা। গত কয়েক মৌসুমে বড় একটা অংশ রাসেলকে মাঠের বাইরে থাকতে হয়েছে। সবমিলিয়ে সময় গড়ানোর সাথে সাথে কলকাতায় রাসেলের ক্যারিশমা ক্রমশই কমছে।
অন্যদিকে কলকাতার আরেক ক্যারিবীয় তারকা সুনীল নারাইন আইপিএল ইতিহাসেরই অন্যতম সেরা বোলার। সেই ২০১২ সালে কলকাতায় যোগ দেবার পর বনে গেছেন দলটির ঘরের ছেলে। কিন্তু গত কয়েক মৌসুমে নারাইনের সেই রহস্যময় বলের রহস্যই যেন হারিয়ে গেছে।
গত মৌসুমে ১৪ ম্যাচ খেলে মাত্র নয় উইকেট শিকার করেন নারাইন। এবারের মৌসুমেও চিত্রটা বদলায়নি বিন্দুমাত্র, এখনো পর্যন্ত ছয় ম্যাচে ২৩ ওভার বল করে শিকার করেছেন মাত্র ছয় উইকেট। শুরুর দিনগুলোতে পাওয়ার প্লে’তে বিধ্বংসী ব্যাটার হিসেবে সুখ্যাতি ছিল নারাইনের। তাঁর মারকুটে ব্যাটিংয়ের সুবাদে বড় সংগ্রহ পেতে তেমন সমস্যা হত না কলকাতার।
২০১৮ মৌসুমে ব্যাট হাতে দারুণ সময় কাটান নারাইন, সেবারে ১৮৯ স্ট্রাইকরেটে সংগ্রহ করেন ৩৫৭ রান। কিন্তু শর্ট বলে তাঁর দুর্বলতা আবিষ্কারের পর থেকে ব্যাটসম্যান হিসেবে নিজের কার্যকারিতা হারিয়েছেন এই তারকা। ফলে জায়গা হারান টপ অর্ডার থেকে, গত মৌসুমে মোটে ৭১ রান করেন নারাইন। এবারের মৌসয়েছ ছয় ম্যাচে মাত্র একটি ছক্কা হাঁকিয়েছেন, মোট রানের সংখ্যাও কোন মতে ছুঁয়েছে দুই অংক।
কলকাতার তাই শেষ চারে যেতে হলে এই দুই তারকার ফর্মে ফেরা ভীষণ প্রয়োজন। অন্যথায় কোচ চন্দ্রকান্ত পন্ডিতকে কঠিন সিদ্ধান্তে পৌঁছুতে হবে। চাইলে দুজনের একজনকে হয়তো ইম্প্যাক্ট প্লেয়ার হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে অন্যথায় মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের ন্যায় তরুণ কাউকে সুযোগ দেয়া যেতে পারে। এখন দেখা যাক কলকাতা কতদিন এই দুই তারকার কাঁধে ভরসার হাত রাখতে পারে।