বাংলাদেশের ক্রিকেটাঙ্গনে হুট করেই উদিত হয়েছিলেন হ্যাংলা পাতলা গড়নের এক তরুণ। নাম তাঁর আনিসুল ইসলাম ইমন, ক্রিকেটীয় পরিচয় – ওপেনার ব্যাটার, সেই সাথে টুকটাক মিডিয়াম পেস বোলিং করতে জানেন। পারফরম্যান্স দিয়ে দ্রুতই ক্রিকেটপ্রেমীদের মন জয় করে নিয়েছিলেন তিনি, অথচ সময় গড়াতে এখন রীতিমতো গাঢ় অন্ধকারে হারিয়ে গিয়েছেন।
করোনা পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপ শুরু করেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। সেই টুর্নামেন্টে মিনিস্টার গ্রুপ অব রাজশাহীর হয়ে খেলেছিলেন ইমন, ইনিংস উদ্বোধন করতেন নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গে।
বলা নেই, কওয়া নেই হঠাৎ করে এত বড় সুযোগ পেয়ে কিন্তু ভড়কে যাননি তিনি। বরং ইতিবাচক মানসিকতায় ভর করে প্রায় প্রতিটা ম্যাচেই দলকে ভাল শুরু এনে দিয়েছিলেন এই ডানহাতি। সবমিলিয়ে আট ম্যাচ খেলে ২৫ গড়ে ১৯৯ রান করেছেন তিনি; তাঁর স্ট্রাইক রেট ছিল ১৩০ এর বেশি।
পরের বছরই ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে সুযোগ দেয়া হয় তাঁকে, সেখানেও মুগ্ধ করতে ভোলেননি এই সম্ভাবনাময়ী তারকা। ১৩ ম্যাচে দুই ফিফটি সহ করেছেন ৩৫৮ রান, ওয়ানডে ফরম্যাটে খেলা হওয়া সত্ত্বেও ১১৪ স্ট্রাইক রেটে রান তুলেছিলেন তিনি – সবমিলিয়ে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে দারুণ আবিষ্কার ভাবা হচ্ছিলো তাঁকে, অথচ পরের সময়টাতে সবকিছু বদলে গেলো।
গত দুই আসরে বিপিএলে কোন ফ্রাঞ্চাইজি নজর দেয়নি তাঁর দিকে। পেস বোলিং অলরাউন্ডার ট্যাগ থাকা সত্ত্বেও কোন দলে জায়গা পাননি এই ওপেনার। কিন্তু এই সময়ে অনেক গড়পড়তা মানের দেশি-বিদেশি ক্রিকেটে ভরপুর ছিল ফ্রাঞ্চাইজিগুলোর ডাগআউট। অর্থাৎ দুর্দান্ত প্রতিভা নিয়ে বিশ ওভারের সংস্করণে পা রাখলেও পরবর্তীতে নিজেকে প্রমাণের কোন সুযোগই পাননি তিনি।
ঘরোয়া ক্রিকেটের আরেকটি বড় টুর্নামেন্ট ডিপিএলে অবশ্য নিয়মিত খেলছেন আনিসুল ইমন। ২০২৩ সালে ব্রাদার্স ইউনিয়নে ছিলেন তিনি, ১০ ম্যাচ খেলে করেছেন ৩৫১ রান; আর স্ট্রাইক রেট ৮৫ ছুঁই ছুঁই। বলাই যায়, টি-টোয়েন্টিতে সুযোগ না পেলেও ওয়ানডেতে ঠিকই ধারাবাহিকতা ধরে দেখেছেন এই তরুণ।
ডিপিএলের আরেকটি আসর কড়া নাড়ছে দরজায়, আরো একবার নিজেকে চেনানোর সুযোগ পাবেন তিনি। তবে বিপিএলের মত টুর্নামেন্টে না খেলার আক্ষেপ থেকে যাবে তাঁর মনে, যদিও এই আক্ষেপ তাঁকে আগামী দিনে আরো ভাল করার জ্বালানি দিবে।