হু ইজ ওয়াটলিং!

আজকের লেখাটা গাধার বাচ্চা দিয়েই শুরু করি।

কিছুদিন আগে এমনই একজনকে দেখি, নাইট রাইডার্স একাদশে সাকিব আল হাসান, তিনি মন্তব্য করলেন কামিন্স, রাসেল, হরভজন, বরুন আছে সাকিব কী করে বল পায়!

নরমাল! লেম্যান মন্তব্যই, আজ আবার দেখলাম! হু ইজ বিজে ওয়াটলিং! এবার অন্য ব্যক্তি কিন্তু পার্থক্য নাই দুজনই লেম্যান! যারা ক্রিকেট দেখে শোনে না, কিন্তু ভাবে সাকিবের কাছ থেকে লোকি ফার্গুসন টাকা খায়।

দেখবেন উৎপল শুভ্র ভাইয়ের কমেন্ট বক্স থেকে শুরু করে তরুণ কোন সাংবাদিকের মন্তব্যে এরাই মন্তব্য করে জ্ঞান দেবে। আদতে নিজের কোন কাজ নাই বলার মতো!

এই যেমন ধরেন ছুটির দিন চলে আমার, আমারও কাজ নাই বিশেষ এরই মধ্যে। তাই আপনাদের কাছে ব্র‍্যাডলি জন ওয়াটলিং এর গল্প বলতে আসলাম বিশেষত একটা মন্তব্য দেখেই – ‘হু ইজ ওয়াটলিং’!

ক্রিকেটে আসলে এমন কিছু চরিত্র থাকে যাকে আপনার অনুসরণ না করাটা অপরাধ না কিন্তু যদি আপনি ক্রিকেট পাতা ফলো করেন আর ক্রিকেট সাংবাদিকদের পোস্টে নিয়মিত ঢু মারেন তাইলে আগে চরিত্র চেনা জরুরি –

এক হচ্ছে! কে?

দুই, কেন সে?

তিন, কীভাবে সেই!

ব্র‍্যাডলি জন ওয়াটলিং ঘোষণা দিয়েছেন ভারতের বিপক্ষে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল তার শেষ টেস্ট ম্যাচ। এটা শুনে ফেললে আমি কোচ হলে পরে তার প্রতি বীতশ্রদ্ধ হইতাম, একটা মানুষ যে কিনা অধিনায়ক না, দলের সেরা পারফর্মার না সে কী না এমন এক ম্যাচে বিদায় নেবে যেখানে সেরা এগারো জন সেরা এফোর্ট না দিলে চলবেই না।

কিন্তু না! এটা নিউজিল্যান্ড টেস্ট টিম ভাই, শতাব্দী পেরিয়ে ওরা বিশ্বের এক নম্বর টেস্ট দল হলো এই বছর । আর এই দলের মূল চালিকাশক্তি তিনজন। অধিনায়ক উইলিয়ামসন, টানা পেস বল করে যাওয়া নেল ওয়াগনার! আর এই ‘হু ইজ বিজে ওয়াটলিং’!

নিউজিল্যান্ডের উইকেটরক্ষকের জায়গা নেয়া কখনো সহজ কাজ না! অ্যাডাম প্যারোরে থেকে ব্রেন্ডন ম্যাককালাম দুর্দান্ত অ্যাথলেট। ব্যাট হাতেও রেকর্ডধারী তাঁরা।

কিন্তু ম্যাককালাম হঠাৎ সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি অন্তত টেস্টে আর কিপিং করবেন না, এরপর সেরা কিপার খোঁজার পথে ওয়াটলিং-এর সাথে দেখা, ততদিনে তিনি বাংলাদেশে অনূর্ধ্ব উনিশ বিশ্বকাপ, শিল্ডে গোটা কয়েক রেকর্ড করে ফেলেছেন।

২০০৯ থেকে নিয়মিত টেস্ট খেলাও শুরু করেন, ন্যাপিয়ারে পাকিস্তানের সাথে ম্যাড়ম্যাড়ে ড্র ম্যাচে ৬০ রানের ইনিংস দিয়ে শুরু, এরপর নিয়মিত টেস্ট দলের উইকেটরক্ষক সে। জিম্বাবুয়ে ও বাংলাদেশের সাথে সেঞ্চুরি দিয়ে শুরু এরপর আরো ছয়টি শতক হাঁকান তিনি সবই মোটামুটি গুরুত্ববহ সময়ে স্পেশালি লিডসে ইংল্যান্ডের সাথে যে বার নিউজিল্যান্ড বড় জয় পায় সেখানে ওয়াটলিং করেন ১২০ এর মতো, এই ম্যাচে নিউজিল্যান্ড চাইলে তিন কিপার নামাতে পারে, একই টেস্টের একাদশে লাথাম, রংকি আর ওয়াটলিং।

কিন্তু ওয়াটলিং টিকে ছিলেন! ম্যাককালামের সাথে সাড়ে তিনশোর জুটি থেকে শুরু করে, দলকে এক নম্বরে তোলা পর্যন্ত। দ্য হিন্দুর আর্টিকেল অনুযায়ী, ‘The numbers suggest that Watling is one of the best-performing keeper-batsmen in Test history.’

টেস্টে উইকেটরক্ষক হিসেবে যারা খেলেছেন তাদের মধ্যে চল্লিশ গড় গিলক্রিস্ট, অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার, ম্যাট প্রায়র, সাঙ্গাকারা, আর এবি ডি ভিলিয়ার্সের! সাথে আছেন ওয়াটলিং। প্রথম শ্রেণি ক্রিকেটে তার ব্যাটে দশ হাজার রানও আছে।

জনি বেয়ারস্টো আর কুইন্টন ডি কক কাছাকাছি আছেন তবে চল্লিশ পার করেননি। ওয়াটলিং আর ওয়াগনার টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে থাকবেন শুধু এসব নিউমেরিক হিসেবে না, অধ্যবসায় আর খেলাটার প্রতি ভালোবাসার কারণে।

যারা নিজের দলকে এক নম্বরে নিয়ে দেখিয়েছেন, ওয়াগনার আরেকটু স্পেশাল! যিনি কখনো আন্তর্জাতিক ওয়ানডে বা টি-টোয়েন্টি খেলেনইনি! তার গল্প অন্যদিন হবে, আজ বারোই মে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link