ব্যাটসম্যান হিসেবে সেরার তালিকায় বাবর আজম যতটা ওপরে থাকবেন, ততটা ওপরে থাকবেন না নেতৃত্বের বিবেচনায়। দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই তাঁর অধিনায়কত্ব নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হয়েছিল, আর সেসব সংশয় আরো দৃঢ় হয়েছে এবারের বিশ্বকাপে পাকিস্তানের ছন্নছাড়া পারফরম্যান্সে।
বাবরের ব্যাটও কথা বলছে না আগের মত, পাঁচ ম্যাচ খেলেও অর্জন কেবল একটি ফিফটি। তাই তো ক্যাপ্টেন্সি থেকে তাঁকে সরিয়ে দেয়ার গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডে। যদিও কোন ভাবে সেমিফাইনাল খেলতে পারলে এই যাত্রায় বেঁচে যেতে পারেন এই তারকা।
বোর্ডের সংশ্লিষ্ট একজন বলেন, ‘পাকিস্তান যদি অলৌকিক ঘটনা ঘটিয়ে এই বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলতে পারে তাহলে তাঁর(বাবর) অধিনায়ক হিসেবে টিকে থাকার সম্ভাবনা আছে। তবে সেক্ষেত্রে তাঁকে শুধুমাত্র লাল বলের ফরম্যাটে রাখা হতে পারে।’ অবশ্য সেরা চারে উঠতে না পারলে বাবর নিজেই পদত্যাগ করবে বলে মনে করেন এই ক্রিকেট কর্তা।
তিনি আরো যোগ করেন যে, ‘বাবরের জন্য এটাই শেষ সুযোগ কেননা তাঁকে পুরো ক্ষমতা দেয়া হয়েছিল। এমনকি সে সবসময় তাঁর পছন্দের যেকোনো ক্রিকেটারকে স্কোয়াডে রাখতে পারতো। সেজন্যই এশিয়া কাপ এবং বিশ্বকাপে ব্যর্থতার দায়ভার তাঁর কাঁধেই উঠবে।’
সর্বশেষ এশিয়া কাপেও প্রত্যাশিত ফলাফলের দেখা পায়নি পাকিস্তান। সেসময় স্কোয়াডে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনতে চেয়েছিলেন দুই সাবেক ক্রিকেটার মোহাম্মদ হাফিজ এবং মিসবাহ উল হক। কিন্তু পাক কাপ্তান সতীর্থদের উপর ভরসা রাখেন, প্রধান নির্বাচকও তাঁকে সমর্থন করে। তাই তো বিশ্ব মঞ্চে আবারো ভরা ডুবি হওয়ায় তাঁর দিকেই আঙুল তুলছেন প্রায় সবাই।
সম্ভাব্য অধিনায়ক নিয়েও ইতোমধ্যে আলোচনা শোনা যাচ্ছে পাকিস্তানের ক্রিকেটাঙ্গনে। দলের বাইরে থাকা সরফরাজ আহমেদ, শান মাসুদদের পাশাপাশি মোহাম্মদ রিজওয়ান, শাহীন শাহ আফ্রিদির মত গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের নাম বেশি উচ্চারিত হচ্ছে।
খুব সম্ভবত এবার ফরম্যাট ভেদে আলাদা আলাদা ক্যাপ্টেন নির্বাচন করবে পিসিবি। সেক্ষেত্রে টেস্ট এবং ওয়ানডে দলের আর্মব্যান্ড পেতে পারেন সরফরাজ, আর টি-টোয়েন্টিতে টস করবেন শাহীন শাহ।
অভ্যন্তরীণ সূত্র মতে, ‘সরফরাজ হয়তো টেস্ট এবং ওয়ানডে দলের দায়িত্ব পাবে, সেই সাথে শাহীনকে টি-টোয়েন্টি দলের নেতৃত্ব দিতে দেখা যেতে পারে।’
শুধু অধিনায়ক নয়, কোচিং প্যানেলেও বড়সড় পরিবর্তন আনতে চাচ্ছে পিসিবি। মিকি আর্থার, গ্র্যান্ট ব্র্যাডবার্ন, মরকেলদের আপাতত চোখে চোখে রাখা হচ্ছে। এবং বিশ্বকাপ শেষেই তাঁদের চাকরি ছাড়তে বলা হবে। আকস্মিক অপ্রত্যাশিত কিছু না ঘটলে, নতুন কোচিং স্টাফের অধীনেই নভেম্বর-ডিসেম্বরে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড সফরে যাবে পাকিস্তান ক্রিকেট দল।