ডিম্বাকৃতি সবুজ মাঠটা থেকে আহমেদাবাদের ড্রেসিংরুমে পৌছুতে ঠিক কতটা পথ হাঁটতে হয়? রোহিত শর্মা হয়তো এমন প্রশ্নের উত্তরে স্বর্গের দিকে তাকিয়ে বলবেন অনন্তকাল। বুকের মাঝে লালিত স্বপ্ন যখন হাত মুঠো থেকে হারিয়ে যায় তখন কষ্টে ভারী হয়ে ওঠা এই হৃদয় নিয়ে অনন্তকাল ধরে হেঁটে পৌছানো লাগে ডাগআউটে। রোহিতকে তাই করতে হয়েছে, একাকীত্বকে সঙ্গী করে ছাড়তে হয়েছে মাঠ।
ফাইনালের এই হার ভারতীয় অধিনায়ককে স্বপ্নভাঙ্গার তীব্র যন্ত্রণা উপহার দিয়েছে তবু ভারতের ক্রিকেটের স্বার্থে তাঁকে ভেঙ্গে পড়ার কোন সুযোগ দেয়নি। এই মুহূর্তে তিনি হাল ছাড়তে চাইলে পথ হারাতে পারে টিম ইন্ডিয়া, কেননা দলে এখন নেই কোন ‘রেডিমেড ক্যাপ্টেন’।
২০০৭ সালে যখন রাহুল দ্রাবিড় আর্মব্যান্ড খুলে রেখেছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি ততদিনে নির্বাচকদের আস্থা হয়ে উঠেছিলেন। আবার ধোনি যখন নেতৃত্বের মসনদ ছাড়লেন বিরাট কোহলি তখন ১৪০ কোটি মানুষের প্রত্যাশার পূরণের দায়িত্ব নিতে পুরোপুরি প্রস্তুত ছিলেন। কিন্তু এখন সেরকম কেউ নেই; লোকেশ রাহুলের কথা হয়তো বলা যায়, তবে নির্ভর করার মত জায়গায় এখনো পৌঁছুতে পারেননি তিনি।
রোহিতের বয়স এখন ৩৬, ২০২৭ বিশ্বকাপে তাই তাঁকে দেখা যাবে এমন সম্ভাবনা ক্ষীণ। তবু টিম ম্যানেজম্যান্টের উচিত অধিনায়ক পরিবর্তন না করে আগামী দুই বছর চালিয়ে যাওয়া। পরবর্তী বিশ্বকাপের পরিকল্পনা করার ক্ষেত্রে এটি নিশ্চিতভাবেই ভারতকে সহায়তা করবে।
ওয়ানডেতে এই ওপেনার নি:সন্দেহে বিশ্বসেরা ব্যাটারদের একজন। কোভিড-১৯ পর থেকে টেস্টেও দারুণ পারফর্ম করছেন তিনি। এই দুই ফরম্যাটে তাই তাঁকে বড্ড প্রয়োজন টিম ইন্ডিয়ার। বিশেষ করে ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি এবং ২০২৩-২৫ টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপের ভাবনা মাথায় রেখে এই তারকাকে দলে রাখতেই হবে।
‘ক্যাপ্টেন শর্মা’-এর অধীনে নতুন দর্শনে দীক্ষিত হয়েছেন কোহলি, বুমরাহরা। এই দর্শনে খেলা চালিয়ে যেতে, নতুন অধিনায়ক তৈরি করতে নিশ্চয়ই রোহিত শর্মাকে সময় দেবে ভারতীয় ক্রিকেটের নীতিনির্ধারকরা।