ঋষি ধাওয়ান, লার্জার দ্যান লাইফ

আইপিএলের মঞ্চে খেলতে নেমেছেন ছয় আসর পর। মুখে বিশেষ একধরনের মাস্ক। মাস্ক না বলে ‘প্রোটেকশন গিয়ার’ বলা ভাল। দূর থেকে প্রথম দেখায় বড় কোনো চশমা মনে হতে পারে। ফুটবল মাঠে এই প্রোটেকশন গিয়ারের ব্যবহার বহুবার দেখেছে ক্রীড়াপ্রেমীরা। এই প্রোটেকশন গিয়ার পড়েই এখন ক্রিকেট পাড়ায় বেশ ভাইরাল পাঞ্জাব কিংসের পেসার ঋষি ধাওয়ান।

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) গতকাল রাতে চেন্নাই সুপার কিংসের বিপক্ষে মুখোমুখি হয় পাঞ্জাব কিংস। ৬ বছর পর আইপিএলে খেলার সুযোগ পান ঋষি ধাওয়ান। তবে সেটি ছাপিয়ে ক্রিকেট সমর্থকদের বেশ অবাক করেছেন প্রোটেকশন গিয়ার পড়ে।

এবারের রঞ্জি ট্রফিতে বল করার সময় ফলো থ্রু’র সময় বল মুখে আঘাত হানে ঋষির। এর কারণে হাসপাতালেও নেওয়া হয় তাঁকে। নাক ফেটে যাওয়ায় অস্ত্রোপচারও করা হয়। পুনরায় মাথায় আঘাত পেলে সম্ভাবনা আছে বড় দূর্ঘটনার। আর ডাক্তারের পরামর্শেই মূলত সেইফটি মাস্ক বা প্রোটেকশন গিয়ার পড়ে খেলতে নামেন ধাওয়ান।

চেন্নাইয়ের বিপক্ষে ম্যাচের আগে পাঞ্জাব কিংসের পক্ষ থেকে এক ভিডিও বার্তায় ধাওয়ান বলেন, ‘আমি চার আসর পর আইপিএলে খেলতে নামছি। রঞ্জি ট্রফিতে চোট পাওয়ার পর মনও খারাপ ছিল। আমার অস্ত্রোপচার করা হয়। প্রথম চার ম্যাচেও খেলতে পারিনি। এখন আমি পুরোপুরি সুস্থ। আমি দলে ঢুকার জন্য প্রস্তুত। আমি দীর্ঘসময় অনুশীলন করেছি। দুর্দান্ত একটা প্রত্যাবর্তন আশা করি।’

আইপিএলের পঞ্চদশ আসরের মেগা নিলামে ৫৫ লাখ রুপিতে ঋষি ধাওয়ানকে দলে ভেড়ায় পাঞ্জাব কিংস। ২০১৬ সালে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের হয়ে খেলেছিলেন তিনি। ঘরোয়া ক্রিকেটে হিমাচল প্রদেশের অধিনায়ক এই বোলিং অলরাউন্ডার। আইপিএল ইতিহাসে তিনি প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে প্রোটেকশন মাস্ক পড়ে মাঠে নেমেছেন।

প্রত্যাবর্তনের ম্যাচে বল হাতে শিকার করেন দুই উইকেট। শিভাম দুবে ও মহেন্দ্র সিং ধোনির মূল্যবান উইকেট শিকার করেন এই পেসার। ৪ ওভারে ৩৯ রানের বিনিময়ে শিকার করেন ২ উইকেট। পাঞ্জাব কিংসও জয় পায় ১১ রানে।

নিউজিল্যান্ডের ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট সুপার স্ম্যাশে ফেস শিল্ড পড়ে খেলতে দেখা গিয়েছিল নিউজিল্যান্ডের ওয়ারেন বার্নসকে। অনুশীলন এবং ম্যাচে অনবরত আঘাত পাওয়ার সম্ভাবনা থেকে বাঁচতে মূল ম্যাচেই এই বিশেষ ধরনের হেলমেট পরে বোলিং করেন বার্নস।

২০১৬ সালে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের হয়ে খেলার সুযোগ পান ২ ম্যাচে। এই ২ ম্যাচে ৮ ইকোনমি আর ২৮ গড়ে শিকার করেন ২ উইকেট। এরপর গেল ৬ আসরে আর আইপিএলের মঞ্চে দেখা যায়নি এই বোলিং অলরাউন্ডারকে।

ঘরোয়া ক্রিকেটে গেল মৌসুমে ছিলেন দুর্দান্ত। ২০২১-২২ বিজয় হাজারে ট্রফিতে প্রথমবার তাঁর অধীনে শিরোপা জেতে হিমাচল প্রদেশ। বিজয় হাজারে ট্রফিতে এক আসরে সর্বোচ্চ পাঁচ উইকেটশিকারি ও রান সংগ্রাহের তালিকায় থাকা একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে রেকর্ড গড়েন ঋষি ধাওয়ান। ৪৫৮ রান নিয়ে ব্যাট হাতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ও ৮ ম্যাচে ১৭ উইকেট নিয়ে ছিলেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী। এক আসরে তিনশোর বেশি রান ও দশ উইকেট নেওয়া মাত্র পঞ্চম ক্রিকেটার তিনি।

ঘরোয়া ক্রিকেটে দুর্দান্ত পারফরম করে ছয় আসর পর আবার আইপিএলের মঞ্চে প্রত্যাবর্তন করলেন এই অলরাউন্ডার। যদিও ব্যাটে বলের পারফরম্যান্স দিয়ে নয় প্রোটেকশন গিয়ার দিয়ে নজর কেড়েছেন ক্রিকেট সমর্থকদের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link