উইল জ্যাকস শো

বিপিএলের শুরুটা দারুণ করেছিল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। তবে হঠাত করে মিরাজকে অধিনায়কত্ব থেকে সরানোর পর একটা ঝড় গিয়েছে দলটির উপর দিয়ে। তবে এরপর আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে দলটি। আর এই চট্টগ্রামের ব্যাটিং লাইন আপটাকে পুরোটা সময় আগলে রেখেছেন উইল জ্যাকস।

আজ চট্টগ্রামের কোয়ালিফায়ার খেলার জন্য জিততেই হতো। সিলেটে বিপক্ষেই হারলেই বিপিএল থেকে বাদ পড়ে যেত দলটি। এমন বাঁচা মরার লড়াইয়ে বোলিংটা খুব একটা ভালো হয়নি। একমাত্র মৃত্যুঞ্জয় বাদে কেউই তেমন বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারেননি। ফলে সিলেট ১৮৬ রানের বিশাল লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয় চট্টগ্রামের সামনে।

বাঁচা মরার এমন দিনে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে আরেকবার আগলে রাখলেন ইংল্যান্ডের এই হার্ড হিটিং ব্যাটসম্যান। তাঁর ৫৭ বলে ৯১ রানের বিশাল ইনিংসে সহজেই বড় রানের টার্গেট টপকে যায় চট্টগ্রাম। উইল জ্যাকস ব্যাটিং করেন ১৫৯.৬৪ স্ট্রাইকরেটে। ৮ টি চার ও ৪ টি ছয় দিয়ে সাজান নিজের এই ইনিংস।

এছাড়া পুরো টুর্নামেন্ট জুড়েই চট্টগ্রামের ব্যাটিং লাইন আপের মূল ভরসা এই উইল জ্যাকস। নিয়মিত রান করে গেছেন একবারে শুরু থেকে। তবে টুর্নামেন্ট যত গড়িয়েছে উইল জ্যাকসের কার্যকারিতাটা তত বেশি প্রকাশ পেয়েছে। তুলে নিয়েছেন ৪ টি হাফ সেঞ্চুরিও।

ব্যাট হাতে ১০ ম্যাচ খেলে ৪৩.৪৪ গড়ে করেছেন ৩৯১ রান। ব্যাটিং করেছেন ১৫২.৭৩ গড়ে। এবারের বিপিএলে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় তামিমে পরেই আছেন এই ব্যাটসম্যান। টুর্নামেন্টে সবচেয়ে বেশি ১৭ টি ছয় মেরেছেন এই পাওয়ার হিটার।

উইল জ্যাকসের এই ঝড়ো ব্যাটিং অবশ্য নতুন কিছু নয়। ইংল্যান্ড ক্রিকেট অনেকদিন ধরেই পরখ করছেন এই হার্ড হিটার ব্যাটসম্যানকে। একটি আন অফিশিয়ার টি-টেন ম্যাচে ২৫ বলে সেঞ্চুরি করে ফেলেছিলেন। সেই থেকেই হার্ড হিটিং ব্যাটসম্যান হিসেবে তাঁকে নিয়ে আলোচনাটা শুরু হয়। ইংল্যান্ডের সহ-অধিনায়ক হিসেবে অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপও খেলেছেন। তবে ধারাবাহিকতার অভাবে এখনো জাতীয় দলের হয়ে ডাক পাননি। যদিও এবার বিপিএলে নিজের ধারাবাহিকতার প্রমাণও দিয়ে দিলেন জ্যাকস।

এছাড়া কাউন্টি ক্রিকেটেও তরুণ ক্রিকেটারদের মধ্যে অন্যতম সেরা পারফর্মার ছিলেন উইল জ্যাকস। লম্বা এই ব্যাটসম্যান পরিচিত হয়ে উঠেছিলেন তাঁর ক্লিন হিটিং অ্যাবিলিটির জন্যই। এছাড়া বল হাতেও বেশ কার্যকর এই স্পিনার।

ইংল্যান্ড ক্রিকেটও প্রত্যাশা করে আছে এই ব্যাটসম্যানের উপর। ধারণ করা হয় ইংল্যান্ডের ক্রিকেটের অন্যতম তারকা হতে পারেন উইল জ্যাকস। তবে তাঁর আগে তো জাতীয় দলে জায়গা পাওয়া জরুরি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা দেয়ার আগে নিজেকে প্রমানের বড় জায়গা ছিল এই বিপিএল। আর সুযোগটা একেবারে লুফে নিলেন এই ব্যাটসম্যান।

কোয়ালিফায়ারের ম্যাচগুলোতেও এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখলে বিপিএলের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হওয়ার সম্ভাবনাও আছে এই ব্যাটসম্যানের। তামিমকে টপকাতে এই ব্যাটসম্যানের আর প্রয়োজন মাত্র ১০ রান। ফলে পরের পর্বের ম্যাচ গুলোতে চট্টগ্রাম যেমন তাকিয়ে থাকবে এই ব্যাটসম্যানের দিকে তেমনি ইংল্যান্ড ক্রিকেটও হয়তো নজর রাখবে উইল জ্যাকসের উপর।

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link