অনেক অনিশ্চয়তা আর নাটকীয়তার পর অবশেষে ঘোষিত হয়েছে বিশ্বকাপের সূচী। সাধারণত এক থেকে দেড় বছর আগে বিশ্বকাপের সূচী ঘোষণার রীতি থাকলেও এবার সূচী নিয়ে হয়েছে নানান নাটকীয়তা।
বিশ্বকাপের ১০০ দিনেরও কম সময় যখন বাকি তখনো নিশ্চিত নয় পাকিস্তানের বিশ্বকাপ খেলতে ভারতে আসা। যদিও পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) জানিয়েছে তাদের ভারতে যাবার ব্যাপারটা পুরোপুরি নির্ভর করছে তাদের সরকারের সবুজ সংকেতের ওপর। তবে আইসিসি আশাবাদী, শেষ পর্যন্ত বিশ্বকাপ খেলতে যাবে পাকিস্তান।
বিশ্বকাপে খসড়া সূচী পাঠানো ছিলো প্রতিটি ক্রিকেট বোর্ডের কাছেই। বিশ্বকাপে সেই খসড়া সূচীতে তিনটি ম্যাচের ভেন্যু নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিলো পাকিস্তান। কিন্তু বিশ্বকাপের চূড়ান্ত সূচীতে পাকিস্তানের সেই আপত্তি আমলে নেয়া হয়নি।
প্রথমত ১৫ অক্টোবর আহমেদাবাদে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের ব্যাপারে আপত্তি জানিয়েছিলো পিসিবি। আহমেদাবাদে মূলত নিরাপত্তা মূল ইস্যু হলেও ভেন্যু পরিবর্তনের প্রস্তাব আমলে নেয়া হয়নি। এছাড়াও পাকিস্তানের চেন্নাইয়ে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ এবং ব্যাঙ্গালুরুতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের ভেন্যু অদল-বদলের প্রস্তাবেও সাড়া দেয়নি আইসিসি।
তাই চূড়ান্ত সূচী অনুযায়ী ১৫ অক্টোবর আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের মুখোমুখি হবে পাকিস্তান। এছাড়াও ২০ অক্টোবর ব্যাঙ্গালুরুতে অস্ট্রেলিয়া আর ২৩ অক্টোবর চেন্নাইয়তেই আফগানিস্তানের মুখোমুখি হতে হবে বাবর আজমের দলকে।
তবে আহমেদাবাদে খেলা নিয়ে এখনো নিশ্চিত নয় পাকিস্তান। পিসিবির এক কর্মকর্তা বলেন, ‘বিশ্বকাপে আমাদের অংশগ্রহণ এবং ১৫ অক্টোবর আহমেদাবাদে আমাদের খেলা কিংবা আমরা সেমিফাইনালে উঠলে মুম্বাইতে খেলা সবই নির্ভর করছে সরকারের অনুমতির ওপর।’
এছাড়াও সরকারের অনুমতি গ্রহণের বিষয়টিও আইসিসিকে জানানো হয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা, ‘আমরা ইতোমধ্যেই আইসিসিকে জানিয়েছি যে বিশ্বকাপে আমাদের অংশগ্রহণ অথবা ভেন্যু নিয়ে যেকোনো ইস্যু প্রথমত নির্ভর করে ভারতে ক্রিকেট দল ভ্রমণের ব্যাপারে পিসিবি সরকারের অনুমতি পায় কিনা তার ওপর।’
তবে বিশ্বকাপে অংশগ্রহণের ব্যাপারে আইসিসির একটি চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করতে হয় অংশগ্রহণকারী প্রতিটি দেশকেই। পাকিস্তানও সেখানে স্বাক্ষর করায় আইসিসি আশাবাদী শেষ পর্যন্ত বিশ্বকাপ খেলতে যাবে পাকিস্তান।
আইসিসির এক মুখপাত্র বলেন, ‘সকল সদস্য রাষ্ট্রকেই তাদের নিজেদের দেশের আইন মেনে চলতে হয় এবং আমরা এটাকে সম্মান করি। তবে আমরা আশাবাদী পাকিস্তান বিশ্বকাপ খেলতে ভারতে যাবে।’
তবে পাকিস্তানের বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ নিয়ে সহসাই যে কোনো সিদ্ধান্ত আসছে না তা অনুমেয়। কারণ পিসিবি সভাপতি নাজাম শেঠির দায়িত্ব ছাড়ার পর এখনো নতুন কেউ পূর্ণকালীন দায়িত্ব নেননি। পিসিবির নির্বাচন আটকে গেছে আদালতের নিষেধাজ্ঞায়।
আহমেদ শেহজাদ ফারুক রানার নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন বোর্ড এই বিষয়ে খুব একটা অগ্রগতি করতে পারবে না। তাই পিসিবির সম্ভাব্য সভাপতি জাকা আশরাফের ক্ষমতা গ্রহণের আগ পর্যন্ত বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ নিয়ে পাকিস্তানের অনিশ্চয়তা কাটার খুব একটা সম্ভাবনা নেই।