বিশ্বকাপ দলে রিয়াদকে জায়গা দেবেন তো সাকিব!

অধিনায়ক সাকিবের কাছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে নিয়ে প্রশ্ন করা এই মুহূর্তে অপ্রাসঙ্গিক। ওদিকে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন আবার বলছেন ভিন্ন কথা। তাঁর ভাষ্যমতে, বিশ্বকাপের আগে নিউজিল্যান্ড সিরিজেই রিয়াদের মিলতে পারে সুযোগ।

বিসিবি প্রধানের এমন ভাষ্যে, রিয়াদকে নিয়ে বিশ্বকাপ স্বপ্নে যেখানে অনেক বুঁদ হচ্ছেন, ঠিক সেখানেই যেন অকাট্য মন্তব্য করে রিয়াদ ইস্যুতে আরো শঙ্কা বাড়িয়ে দিচ্ছেন সাকিব আল হাসান। প্রশ্ন হচ্ছে, সাকিবের বিশ্বকাপ দলে রিয়াদ জায়গা পাবেন তো?

চলতি এশিয়া কাপে অনেক পরীক্ষা নিরীক্ষা করছে বাংলাদেশ। আর সেই প্রক্রিয়ায় এখন পর্যন্ত সাত নম্বর পজিশন নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত পৌঁছাতে পারেনি বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্ট। শামীম পাটোয়ারি কিংবা আফিফ, কেউই প্রত্যাশার প্রতিদান দিতে পারেননি। ফলত, অনেকে ভেবেই নিচ্ছেন, ৭ নম্বর পজিশনে শেষমেশ সমাধান হিসেবে ডাক পড়তে পারে রিয়াদেরই।

তবে দলের অধিনায়ক সাকিবের সুর অবশ্য এমন নয়। কলম্বোতে শ্রীলঙ্কার কাছে হারের পর উঠে এসেছিল মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের কথা। সে ইস্যুতে সাকিব জানান, ‘সর্বশেষ তিন সিরিজে রিয়াদ ভাই দলে ছিলেন না। তখন আপনারা এসব কথা বলেছেন কি না, জানি না। কিন্তু এখন বলছেন। আমার মনে হয় বিষয়টা অপ্রাসঙ্গিক।’

সাকিব শুধু এখানেই থেমে থাকেননি। এক সাংবাদিকের করা প্রশ্নে জানিয়ে দেন, রিয়াদের জায়গায় আফিফ, শামীমরা আসেনি। রিয়াদের জায়গায় এসেছিল তাওহীদ হৃদয়।

সাকিব অবশ্য এখানে ভুল কিছু বলেননি। ২০১৮ এর পর থেকে ৬ নম্বরেই ব্যাটিং করেছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। রিয়াদ দলে থাকাকালীনও সাত নম্বরে খেলেছেন আফিফ হোসেন ধ্রুব। রিয়াদ যে আয়ারল্যান্ড সিরিজ থেকে দলের বাইরে গেলেন তখন দলে ঢুকে পড়েন তাওহিদ হৃদয়। যদিও ৬ নম্বরে এখন খেলছেন মুশফিক।

আর ৪ বা ৫ নম্বরে ব্যাটিংয়ে দেখা যায় হৃদয়কে। আর হৃদয় এখন অবধি ব্যাট হাতে সামর্থ্যের প্রতিদান দিয়েছেন দারুণ ভাবেই।বর্তমান দলের কাঠামোতে ব্যাটিং ইউনিটে প্রথম ৬ টি জায়গা বরাদ্দই বলা চলে। বাকি রয়েছে শুধু একটি পজিশন, ৭।

বর্তমান ক্রিকেটের বাস্তবতা বলে, এই মুহূর্তে সাত নম্বরে শুধুমাত্র ব্যাটার হিসেবে খেলছেন না কেউই। অন্তত এবারের বিশ্বকাপে খেলা বাকি ৯ টি দেশের নিয়মিত একাদশের দিকে তাকালে সেটিই পরিলক্ষিত।

সাকিবের বিশ্বকাপ দলে রিয়াদের জায়গা পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা আরো দুটি। প্রথমত, গত প্রায় ৬ মাস ধরেই ক্রিকেটের বাইরে রিয়াদ। এমন দীর্ঘ বিরতির পর সরাসরি বিশ্বকাপে রিয়াদ পারফর্ম করতে পারবেন কিনা, সেই শঙ্কা থেকেই যায়। আর সেই শঙ্কার কারণেই বিশ্বকাপ দলে নাও থাকতে পারেন রিয়াদ।

দ্বিতীয়ত, সাত নম্বর পজিশনে রিয়াদের স্ট্রাইকরেট। এই পজিশনে ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান করলেও ব্যাটিং করেছেন ৭৭.৩০ স্ট্রাইকরেটে। সাত নম্বর পজিশনটা মূলত পাওয়ার হিটারদের জন্যই বিবেচনা করা হয়। শেষ দিকে দ্রুত গতিতে রান তুলে ম্যাচের দৃশ্যপট পাল্টে দেওয়াই থাকে এই পজিশনের লক্ষ্য। কিন্তু মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ সেটিতে তেমন সফল হতে পারেননি। অন্তত বিগত বছরগুলোতে দলের ম্যাচ বদলের দেওয়ার নায়ক হতে পারেননি। আর সেই বিবেচনাতেও রিয়াদ থাকতে পারেন দলের বাইরে।

শেষ পর্যন্ত মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ বিশ্বকাপ দলে থাকবেন কি থাকবেন না, তা সময়ই বলে দিবে। তবে অদ্যাবধি, সাকিবের মন্তব্য যে রিয়াদের বিশ্বকাপ খেলার আশার পালে একটুও হাওয়া দিচ্ছে না, তা এক প্রকার নিশ্চিতই।

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link