শরিফুল, যিনি ছুটছেন গোটা বছর জুড়েই

নেপিয়ারের ম্যাকলিন পার্ককে এক কথায় বলা যায় পেস-স্বর্গ। দারুণ পেস, উঁচু বাউন্স, সুইং ও দুর্দান্ত সিম মুভমেন্ট-সব মিলিয়ে পেসারদের উল্লাসনৃত্যই ছিল প্রত্যাশিত। বাংলাদেশের পেস বোলিং লাইনআপ যেন সেই প্রত্যাশাকেও ছাপিয়ে গেছে। আর সেটিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন শরিফুল ইসলাম। 

নেপিয়ারের ম্যাকলিন পার্ককে এক কথায় বলা যায় পেস-স্বর্গ। দারুণ পেস, উঁচু বাউন্স, সুইং ও দুর্দান্ত সিম মুভমেন্ট-সব মিলিয়ে পেসারদের উল্লাসনৃত্যই ছিল প্রত্যাশিত। বাংলাদেশের পেস বোলিং লাইনআপ যেন সেই প্রত্যাশাকেও ছাপিয়ে গেছে। আর সেটিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন শরিফুল ইসলাম।

কিউই ইনিংসে শুরুর ধাক্কাটা দিয়েছিলেন তানজিম সাকিব। তবে মাঝে নিউজিল্যান্ডের মিডল অর্ডার রীতিমত ছত্রখান করে দিয়েছিলেন শরিফুল। ৩ টা উইকেট নিয়েছেন। তাঁর দুটোতেই স্ট্যাম্প উড়িয়েছেন। আর এতেই বাংলাদেশের ১৪তম বোলার হিসেবে ওয়ানডে্তে ৫০ উইকেটের মাইলফলক ছুঁয়েছেন এ পেসার।

নিজের প্রথম স্পেলে কিছুটা এলোমেলো বোলিং করেছিলেন বটে। তবুও ড্রিংকস ব্রেকের পর দ্বিতীয় স্পেলে তাঁকে ফিরিয়ে আনেন শান্ত। নিউজিল্যান্ডের ইনিংসে নতুন করে ভাঙনের শুরু সেখান থেকেই। সাকিবের জোড়া ধাক্কার পর নিউজিল্যান্ড কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছিল টম ল্যাথাম আর উইল ইয়াংয়ের জুটিতে। ৩৬ রানের জুটি গড়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন প্রতিরোধ গড়ার পথে।

তবে এ জুটি বড় হওয়ার আগেই আঘাত হানেন শরিফুল। ১৭তম ওভারে অফ স্টাম্পের কিছুটা বাইরে থেকে ভেতরে ঢোকা বলে ব্যাট ছোঁয়াতে পারেননি নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক ল্যাথাম। সরাসরি বোল্ড। বুনো উল্লাসে মেতে ওঠেন শরিফুল। সেই উল্লাসের প্রতিচ্ছবি আঁকেন পরের ওভারেও। এবার তাঁর শিকার উইল ইয়াং। কভার ড্রাইভ করতে গিয়ে সজোরে চালিয়েছিলেন ইয়াং। কিন্তু পয়েন্টে থাকা মেহেদী হাসান মিরাজের হাতে ধরা পড়েন তিনি।

নতুন ব্যাটার হিসেবে ক্রিজে এসেছিলেন মার্ক চাপম্যান। চাপের মধ্যে নিজের ব্যাটিং দিয়ে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে ফেলার সুখ্যাতি আছে তাঁর। তবে নেপিয়ারের দৃশ্যপট জুড়ে যেন টাইগারদের আগ্রাসনই চলমান থাকলো। শরিফুলের বোলিং তোপে উড়ে যায় চাপম্যানের স্ট্যাম্প। ব্যাস। শরিফুলের ঐ এক স্পেলেই মাত্র ৬৩ রানে ৫ উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড।

শরিফুলের সেই মরণকামড়ের পর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি কিউইরা। এমনকি নিউজিল্যান্ড তাদের রানসংখ্যা তিন অঙ্কেও নিয়ে যেতে পারেনি। ৯৯ রানের লক্ষ্যটা তাই বাংলাদেশ পেরিয়েছে অনায়াসেই, আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে। আর এতেই হয়েছে ইতিহাস। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে ১৮ টা ওয়ানডের পর এই প্রথম জয়ের মুখ দেখলো বাংলাদেশ।

 

এবারের বিশ্বকাপে বাংলাদেশের হয়ে যুগ্মভাবে সর্বোচ্চ ১০ টি উইকেট নিয়েছিলেন মিরাজ আর শরিফুল। ২০২৩ সালটা সন্দেহাতীত ভাবেই বাংলাদেশের ভাল কাটেনি। শেষটা জয় দিয়ে শেষ করা গিয়েছে, এটার মাঝেই কিছুটা প্রাপ্তি খুঁজে নেওয়া যায়।

তবে আরেকটি প্রাপ্তি হলো, গোটা বছর জুড়ে শরিফুলের বোলিং। এ বছরে বাংলাদেশের হয়ে ওয়ানডে সর্বোচ্চ উইকেট শিকার করেছেন এই বাঁহাতি পেসার। ১৯ ম্যাচে ৩২ উইকেট নেওয়া শরিফুল এ বছরে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী বোলারদের তালিকায় উঠে এসেছেন ১০-এ।

২০২০-সালে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জিতেছিলেন। এর তিন বছর বাদে বাংলাদেশের জার্সি গায়ে খেললেন বিশ্বকাপ। শুধু খেললেনই না, মাতালেনও বটে। শরিফুলের গল্পটা এগিয়ে যাচ্ছে দারুণ গতিতে। এই গতিটা নিশ্চিতভাবেই দীর্ঘমেয়াদের রূপান্তর করতে চাইবেন এ পেসার।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...