খানদের ছাড়া প্রথম বিশ্বকাপ

নেই তামিম ইকবাল খান, দুইদিন ব্যাপী চলমান বিতর্ক আর গুঞ্জন শেষে তামিম ইকবালকে ছাড়াই বিশ্বকাপ স্কোয়াড ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। পুরোপুরি ফিট হয়ে উঠতে না পারায় ভারতের বিমান ধরা হলো না তামিমের।

নেই তামিম ইকবাল খান, দুইদিন ব্যাপী চলমান বিতর্ক আর গুঞ্জন শেষে তামিম ইকবালকে ছাড়াই বিশ্বকাপ স্কোয়াড ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। পুরোপুরি ফিট হয়ে উঠতে না পারায় ভারতের বিমান ধরা হলো না তামিমের।

খেলা হলো না ক্যারিয়ারের শেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপ। যে মঞ্চে জহির খানকে ডাউন দ্য উইকেটে ছক্কা হাঁকিয়ে ড্যাশিং হয়ে উঠেছিলেন, সেই মঞ্চে শেষবার উঠতে পারলেন না তিনি।

তামিম ইকবালের অভিষেকের পর থেকে এবারই প্রথম তাঁকে ছাড়া কোন ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলতে যাচ্ছে বাংলাদেশ দল। ২০০৭, ২০১১, ২০১৫ আর ২০১৯ – চারটি বিশ্বকাপ আসরে সন্তোষজনক পারফরম্যান্স করতে না পারলেও এবারের আসরে প্রত্যাশা পূরণের শেষ চেষ্টা করার ইচ্ছে ছিল চট্টলার খান সাহেবের; তবে ভাগ্যের পরিহাসে সেই সুযোগ আর পাওয়া হলো কই।

তামিম ইকবালকে ছাড়া তো বটেই, নিজেদের ইতিহাসেই প্রথমবারের মত কোন ‘খান’-কে ছাড়া বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট খেলতে যাচ্ছে টাইগাররা। আগের সবগুলো আসরে কেউ না কেউ থাকলেও এবারের স্কোয়াডে চট্টগ্রামের খান পরিবারের কেউই জায়গা পাননি।

লাল-সবুজের ক্রিকেটাঙ্গনে খান পরিবারের প্রভাব অনেক। শুরুর দিকে আকরাম খান ছিলেন টিম বাংলাদেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ; এরপর এসেছিলেন তাঁর ভাতিজা নাফিস ইকবাল। তিনি বেশি দিন স্থায়ী না হলেও ছোটভাই তামিম ইকবাল ঠিকই কিংবদন্তির জায়গা দখল করেছেন এই ক্রিকেট পাগল দেশে।

১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ নিজেদের প্রথম বিশ্বকাপ খেলার স্বাদ পেয়েছিল। সেই টুর্নামেন্টে দলে ছিলেন আকরাম খান; পাকিস্তানের বিপক্ষে ঐতিহাসিক জয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদানও রেখেছেন তিনি। পরের বিশ্বকাপে মানে ২০০৭ সালে এই ব্যাটার জায়গা করে নিয়েছিলেন বিশ্বকাপ দলে; ভরাডুবির সেই টুর্নামেন্টে মাশরাফি বিন মর্তুজার চোটের কারণে সুযোগ পেয়েছিলেন এই ডানহাতি।

এরপর তো বাংলার ক্রিকেট আকাশে আগমন ঘটেছিল তামিম ইকবালের। ২০০৭ আসরে ভারতের বিপক্ষে হাফসেঞ্চুরি নিজের বিশ্বকাপ ক্যারিয়ারের সূচনা করেছিলেন তামিম। পরবর্তীতে ২০১১ সালে ঘরের মাঠে ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় টুর্নামেন্টেও খেলেছিলেন তিনি।

২০১৫ এবং ২০১৯ সালের বিশ্বকাপে তামিম ইকবাল অবশ্য বাংলাদেশ দলের অটো চয়েজে পরিণত হয়েছিলেন। আশানুরূপ পারফরম্যান্স না থাকলেও সব ম্যাচই মাঠে নেমেছেন এই বাম-হাতি। যদিও ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে তাঁর ছন্দহীন ব্যাটিং একটু বেশিই পীড়া দিয়েছে সমর্থকদের।

খান পরিবারের বিশ্বকাপ খেলার এই ধারাবাহিকতায় অবশেষে ছেদ পড়েছে। ভারতের মাটিতে কোন ‘খান’কে ছাড়াই পা রাখবে সাকিব আল হাসানের দল। অবশ্য সব ঠিক থাকলে অধিনায়ক হিসেবেই এই আসরে খেলার কথা ছিল তামিম ইকবালের; অথচ নিয়তি চক্রে তিনি দলেরই বাইরে।

তামিম না থাকলেও তাঁর ভাই নাফিস ইকবাল চাইলে এবার বিশ্বকাপে থাকতে পারতেন। টিম ম্যানেজার হিসেবে। তবে, বিশ্বকাপ দলে তাঁকে চাননি সাকিব আল হাসান। তাই, এই খানকেও সরে দাঁড়াতে হয়েছে।

নাফিসের ফেরার তেমন কোনো সুযোগ নেই। তবে, তামিমের আছে। শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি। ২০০৩ সালে যেভাবে বিশ্বকাপে ফিরেছিলেন আকরাম খান, এবার সেভাবে যদি ফিরে যান তামিম? স্বপ্ন দেখতে ক্ষতি কি!

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...