শত আলোচনার মাঝে একটা নাম যেন প্রায় অদৃশ্য। যেই সাত নম্বর পজিশনের জন্য হাহাকার, সেই হাহাকারের সমাধান হতে পারতেন ইয়াসির আলী চৌধুরী রাব্বি।
দলের সাথে ছিলেন তিনি দীর্ঘদিন। মূলত সাইডবেঞ্চে বসেই দিন পার করেছেন অধিকাংশ সময়। ক্ষণ গুনেছেন একটানা সুযোগ পাওয়ার কিন্তু সেই সুযোগ তিনি কখনোই পাননি।
এমনকি খোদ তামিম ইকবাল খান চট্টগ্রামে আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডের আগেও একই কথা বলেছিলেন। তার মতে, রাব্বি যথাযথ সুযোগটুকু পাননি কখনোই।
মিরপুর হোম অব ক্রিকেটে, চলছে খেলোয়াড়দের মেডিকেল পরীক্ষা-নিরীক্ষা। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের কেন্দ্রীয় চুক্তিভুক্ত খেলোয়াড়রা যেমন অংশ নিচ্ছেন, তেমনি হাই পারফরমেন্স ও বাংলাদেশ টাইগার্স প্রোগ্রামে থাকা খেলোয়াড়রাও অংশ নিচ্ছেন নিয়মিত চেক আপে।
বৃষ্টিস্নাত সকালে, তাই রাব্বিও হাজির। শারীরিকভাবে নিজেকে একটু যাচাই করে নেওয়ার প্রচেষ্টা। বিভিন্ন ধরনের প্যাথলজিক্যাল টেস্টের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন খেলোয়াড়রা। শারীরিক কোন অসঙ্গতি রয়েছে কিনা সে সবই খুঁজে দেখার চিরায়ত প্রক্রিয়া।
জাতীয় দলের জন্য আলোচনায় না থাকলেও, দলের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় হয়ত রয়েছেন ইয়াসির আলী রাব্বি। বয়স ২৮ এর ঘরে। একেবারেই পেছন দিকে হাঁটা শুরু না করলে নিদেনপক্ষে বছর পাঁচেক দলকে সার্ভিস অন্তত দিতে পারবেন ইয়াসির আলী রাব্বি। সে জন্যে অবশ্য নিজেকে প্রস্তুত রাখা দরকার তার।
সেই ২০১৯ সালে প্রথমবারের মত জাতীয় দলের সাথে সংযুক্তি ঘটেছিল রাব্বির। এরপর দেশ-বিদেশে ঘুরে বেড়িয়েছেন তিনি জাতীয় দলের সাথে। নিজের অভিষেকের অপেক্ষা করেছেন পুরোটা সময় জুড়ে।
এরপর প্রায় তিন বছর বাদে জাতীয় দলের জার্সি গায়ে মাঠে নামার সুযোগ পান তিনি। ২০২১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে তার অভিষেক হয়। এর মাস তিনেক পরে ওয়ানডেতে অভিষেক। এর এক মাস বাদে টি-টোয়েন্টি।
দীর্ঘ অপেক্ষার পর পাওয়া সুযোগটা কখনোই দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। প্রায় চার বছর ধরে জাতীয় দলের সঙ্গে থাকা ইয়াসির আলী রাব্বি সব মিলিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেছেন মাত্র ২৫টি।
নিজের সম্ভাবনার প্রতিফলন তিনি ঘটাতে পারেননি, সে কথা অস্বীকার করা সম্ভব নয়। তবে তার প্রতি টিম ম্যানেজমেন্টের দ্রুত ফলাফল চাই চিন্তাধারাই ব্যাকফুটে ঠেলে দিয়েছে তাকে। ভীষণ চাপ নিয়েই তাকে মাঠে নামতে হয়েছে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের চাপ সেই সাথে দলের প্রত্যাশার চাপ। তাছাড়া পারফর্ম করতে না পারলেই বাদ। এসব মিলিয়ে খাবি খেয়েছেন রাব্বি।
তাতে করে, নিজেকে আর মেলে ধরতে পারেননি। একটা সময় আড়াল হতে হতে, চলে গেছেন আলোচনার বাইরে। অথচ পর্যাপ্ত সুযোগ তিনি পেলে হয়ত দৃশ্যপট হতে পারত অন্যরকম। উদাহরণ তো দলেই রয়েছে কত।