জিম্বাবুয়ে রাজার, রাজা জিম্বাবুয়ের

স্রোতে ভেসে যাওয়া মানুষ খড়কুটো আকড়ে হলেও বাঁচতে চায়। এরপর স্রোতের তীব্রতা কমে গেলে মানুষ সে খড়কুটোকেই ঘর বানিয়ে রয়ে যায়। সিকান্দার রাজার ক্ষেত্রেও বিষয়টা তেমনই। জিম্বাবুয়েতে তার পুরো পরিবার গিয়েছিল ভাগ্যের অন্বেষণে। সেখানে স্রোতের তোরে সম্ভবত হারিয়েই যেতেন রাজা।

তার জন্য জিম্বাবুয়ের ক্রিকেট হাত বাড়িয়ে দিল। তিনি আকড়ে ধরলেন। জীবনের নতুন মানে খুঁজতে শুরু করলেন। জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটই এখন তার ঘর-বাড়ি। তাই তো নি:সংকোচে তিনি বলেন, ‘জিম্বাবুয়ে আমার, আমি তাদের।’

মূলত ঘটনার উৎপত্তি ঘটে একজন ভক্তের প্রশ্নের মধ্য দিয়ে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক প্রশ্ন-উত্তর পর্বে সিকান্দার রাজাকে প্রশ্ন করা হয়, তিনি এই মুহূর্তে পাকিস্তানের হয়ে খেলবেন কিনা। এমন প্রশ্নের প্রেক্ষিতে কোন প্রকার কালক্ষেপণ না করেই জিম্বাবুয়ের প্রতি তার আনুগত্য প্রকাশ করেন রাজা।

তিনি বলেন, ‘আমি পাকিস্তানে জন্ম নিয়েছি তবে আমি জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটের প্রোডাক্ট। আমি শুধু জিম্বাবুয়ের প্রতিনিধিত্ব করব। তারা আমার পেছনে সময় ও অর্থ খরচ করেছে এবং আমি স্রেফ চেষ্টা করছি তাদের বিশ্বাসের প্রতিদান দিতে।’

সিকান্দার রাজা জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটের প্রতি প্রচণ্ড কৃতজ্ঞ। তাই তো তিনি আরও বলেন, ‘আমি যা কিছুই অর্জন করি না কেন তা কখনোই প্রতিদানের কাছাকাছিও হবে না। জিম্বাবুয়ে আমার, আমি পুরোপুরিই তাদের।’ এভাবেই জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন সিকান্দার রাজা।

জিম্বাবুয়ের ক্রিকেট রয়েছে আইসিইউ-তে। এমন এক পরিস্থিতিতে রাজা চাইলেই হয়ত জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটকে বিদায় বলে খেলে বেড়াতে পারতেন ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেট। তার গ্রহণযোগ্যতা তো দিনকে দিন ক্রমশ বেড়েই চলেছে। তবুও তিনি সর্বাধিক প্রাধান্য দেন জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটকে।

আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার জন্যও জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট বোর্ডকে ব্যবহারের সুযোগ নেই রাজার সামনে। তবুও তিনি কৃতজ্ঞতা বোধ থেকেই জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটের জন্য একাই লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। নিভু নিভু করে জ্বলতে থাকা প্রদীপে জ্বালানির জোগান দিচ্ছেন। বিশ্ব ক্রিকেটে সিকান্দার রাজাই যে জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটর প্রতিনিধি।

যদিও পাকিস্তান দলে মিডল অর্ডারের সমস্যা সমাধান হচ্ছে না কোনভাবেই। দলের তরুণ কিংবা অভিজ্ঞ ক্রিকেটার, কেউই আসলে সেই সমস্যার সমাধান করতে পারছেন না। ঠিক সে কারণেই সিকান্দার সুযোগ পেলে খেলবেন কি-না পাকিস্তানের হয়ে, সে প্রশ্ন উঠেছিল। তবে তিনি কখনোই জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটকে ছেড়ে না যাওয়ার বিষয়ে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link