বিশ্বরেকর্ডের সামনে মিতালির রাজের ভারত, আড়ম্বরহীন ব্রিস্টলে সাত বছর পর সাদা পোশাকে ভারতের নারী ক্রিকেট দল।
ভারতের পুরুষ দল বিলেত সফর করছে সেই ১৯৩২ (পালওয়ানকর বালু খ্যাত ১৯১১ সালের সফর বাদ দিয়ে) থেকে। টেস্ট জয় সাকুল্যে ৭। হার অজস্র। আর ভারতের নারী ক্রিকেট দল ইংল্যান্ডে টেস্ট সফর করছে ১৯৮৬ থেকে। জয়ের সংখ্যা ২। হারের সংখ্যা শুনলে পাঠক চমকাতে বাধ্য-শূন্য।
অথচ মেয়েদের টেস্টে ভারত এবং ইংল্যান্ডের অভিজ্ঞতার ফারাক আকাশ পাতাল। ভারত খেলেছে ৩৬ টেস্ট এবং ইংল্যান্ড ৯৫। ভারতের নারীরা শেষ দুবারই ইংল্যান্ডে গিয়ে এক টেস্টের সিরিজ জিতে এসেছে। আগামীকাল, আবার মিতালিরা নামছেন ব্রিস্টলে হিথার নাইটের দলের বিরুদ্ধে।
২৪০১ দিন বাদে আবার সাদা পোশাকে। এমনিতেই মেয়েদের ক্রিকেটে টেস্ট খুব বেশি গুরুত্ব পায় না। তাও যে কয়েকটি দল নিয়মিত টেস্ট খেলে, ভারত তাদের মধ্যে নেই। ইংল্যান্ড আছে। তবুও, ইংল্যান্ডের ভারতকে সমীহ না করে উপায় নেই।
কেননা, মিতালির ভারত নিজেদের ওজনের অতিরিক্ত পাঞ্চ করতে করতে আজ বজ্রমুষ্টি। প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, ২০১৭ সালে নারী বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারত ওঠার পর, নারী ক্রিকেট নাকি ভারতে একটু হলেও জনপ্রিয় হয়েছে। আসলে চন্দ্রিলের কথা ধার করলে বলা যায়, ‘ঘন্টার মাথা’।
সমাজ মাধ্যমে স্মৃতি মান্ধানার ব্যাটিংয়ের চেয়েও বেশি বিখ্যাত তাঁর গালের টোল বা হাসি। শেফালী বর্মা বা পুনাম যাদবরা গড়িয়াহাটের ফুটপাথ দিয়ে হেঁটে গেলেও কজন চিনতে পারবেন, বলা মুশকিল। এই তো সেদিন বেডা কৃষ্ণমূর্তির মা এবং দিদি একই সাথে করোনা ভাইরাসে মারা গেলেন।
ক’টাই বা টুইট হয়েছে? ক’টা ফেবু পোস্ট? নারী ক্রিকেটে না আছে টাকা, না স্পন্সর, না আম জনতার উৎসাহ। তবু মিতালিরা খেলে চলেছেন, জিতে চলেছেন। গত ৭ বছর ধরলে, নারী ক্রিকেটের অন্যতম ধারাবাহিক দল কিন্তু ভারত। মহিলা ক্রিকেটে ইংল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়ার ডুওপলিকে নাড়ানো শক্ত। তবু কোনো দল যদি তা করে থাকে, তা ভারত। নিউজিল্যান্ড না, দক্ষিণ আফ্রিকা না।
এক অনন্য বিশ্ব রেকর্ডের মুখে দাঁড়িয়ে, কাল ব্রিস্টলের মাঠে টস করতে নামবেন মিতালি। মেয়েদের ক্রিকেটে পরপর সব চেয়ে বেশি জয়। ভারত তাদের শেষ তিনটি টেস্ট ম্যাচ জিতেছে। কাল থেকে শুরু হওয়া ম্যাচ জিতলে হবে ৪।
পরপর এতগুলো টেস্ট ম্যাচ আর কেউ জেতেনি মেয়েদের ক্রিকেটে। বাকি বিশ্বচরাচরের অবশ্য তাতে কোনো মাথাব্যাথা নেই। আমারও ছিলোনা। তবু কিভাবে যেন লিখে ফেললাম। আসলে মেয়েদের ক্রিকেট টাই দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক। নাহলে শান্তা রঙ্গস্বামীর ফেসবুক প্রোফাইল নীল টিক বহির্ভূত হয় কি?