আসছে বছর ইংল্যান্ডের বার্মিংহামে অনুষ্ঠিত হবে কমনওয়েলথ গেমসের ২২তম আসর। দীর্ঘ বিরতির পর আবারও এই মেগা ইভেন্টে ক্রিকেট অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্বান্ত নেওয়া হয়েছে। আটটি দল টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে কমনওয়েলথ গেমসে অংশ নেবে। তবে ক্রিকেট ফিরলেও এই মেগা ইভেন্টে সরাসরি অংশ নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে না বাংলাদেশ। বাংলাদেশের অংশগ্রহণের ব্যাপারে আইসিসি কিছু না জানালেও এটুকু বোঝা যাচ্ছে যে – বাছাইপর্বের বাঁধা পেড়িয়ে আসতে হবে বাংলাদেশের মেয়েদের। তবে, আইসিসির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই প্রসঙ্গ একেবারেই উল্লেখ না থাকায় ধোয়াশা থাকছেই।
কমনওয়েলথ গেমসের ২২তম আসরে ১১ টি ইভেন্টে ৭২ টি দেশের মোট ৪৫০০ অ্যাথলেট অংশ নেবে। আগামী বছরের ২৮ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট বার্মিংহামে অনুষ্ঠিক হবে এই মেগা ইভেন্ট। এজবাস্টনের মাঠে অনুষ্ঠিত হবে নারী ক্রিকেটের ম্যাচ গুলো।
কমনওয়েলথ গেমসে ক্রিকেট ফেরানোর সাথে প্রথম বারের মতো নারী ক্রিকেটের অন্তর্ভুক্তির কথা ঘোষণা দিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) ও কমনওয়েলথ গেমস ফেডারেশন (সিজিএফ)। এর আগে ১৯৯৮ সালে কমনওয়েলথ গেমসে ক্রিকেট অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। ঐ আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা।
এবারের কমনওয়েলথ গেমসে ক্রিকেট ইভেন্টে অংশ নেবে ৮ টি দেশ। স্বাগতিক ইংল্যান্ডের সাথে অংশ নেওয়া বাকি দেশ গুলো হলো অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, ভারত ও পাকিস্তান। টি-টোয়েন্টি র্যাংকিংয়ে এক এপ্রিল পর্যন্ত শীর্ষে থাকা ছয় দল সরাসরি জায়গা পেয়েছে এই মেগা ইভেন্টে।
আর ক্যারিবিয়ান অঞ্চল থেকে জায়গা পাবে এক দল। ক্রিকেট ও ক্রিকেটের কোন আসরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ নামে অংশ নিলেও অলিম্পিক সহ এমন মেগা ইভেন্টে ক্যারিবিয়ান অঞ্চল থেকে নিজ নিজ দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন
অ্যাথলেটরা।
সেই কারণেই এই ইভেন্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট দল সরাসরি অংশ নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে না। ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে বাছাইপর্ব শেষে এক দল নির্বাচন করা হবে। আরেকটি দলও নির্বাচন করা হবে বাছাইপর্ব আয়োজন করেই। আগামী বছর অনুষ্টিত হবে বাছাইপর্ব।
কমনওয়েলথ গেমসে ক্রিকেট ফেরানোর পর উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন কমনওয়েলথ গেমস ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট ডেম লুইস মার্টিন। নারী ক্রিকেট অন্তর্ভুক্ত করে তিনি জানিয়েছেন এই ইভেন্টে অংশ নেওয়াতে নারী ক্রিকেট আরো প্রসারিত হবে।
তিনি বলেন, ‘বার্মিংহামের কমনওয়েলথ গেমসে ক্রিকেটের দেশ গুলোর নাম ঘোষণা করতে পেরে আমরা রোমাঞ্চিত। এটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। ক্রিকেট কমনওয়েলথের সমার্থক। ১৯৯৮ সালে কুয়ালালামপুরের পর ক্রিকেটকে আবার অন্তর্ভুক্ত করতে পেরে আমরা খুবই আনন্দিত।’
নারী ক্রিকেট বিষয়ে তিনি বলেন, ‘নারীদের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে আত্নপ্রকাশ হওয়াটা ঐতিহাসিক হয়ে থাকবে। এতে করে নারীদের ক্রিকেট সারা বিশ্বে আরও প্রসারিত হবে। আমি এজবাস্টনের টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণকারী নারী দল গুলোকে অভিনন্দন জানাই।’
নারী ক্রিকেট অন্তর্ভুক্ত করার পর আইসিসির অন্তবর্তীকালীন প্রধান নির্বাহী অ্যালারডাইসও উচ্ছাস প্রকাশ করেছেন। তিনিও মনে করেন বিশ্বের কাছে নারী ক্রিকেট পরিচিত করার এটা অনেক বড় সুযোগ।
তিনি বলেন, ‘আমরা এই ইভেন্টে নারীদের ক্রিকেট অন্তর্ভূক্ত করতে পেরে আনন্দিত এবং গর্বিত। নারীদের ক্রিকেটকে বিশ্বের কাছে পরিচিত করার সুবর্ণ সুযোগ এটি। গত বছর মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে নারী বিশ্বকাপের ফাইনাল দেখেছিল ৮৬১৭৪ জন দর্শক। এটা নারীদের ক্রিকেটের জন্য আরো একটি বড় মঞ্চ। আমাদের পাশে থাকার জন্য কমনওয়েলথ গেমস কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাই। আমরা দুর্দান্ত ক্রিকেট দেখার প্রত্যাশা করছি।’