শচীন পরবর্তী যুগে ভারতের ব্যাটিংয়ের সবচেয়ে বড় চরিত্র বিরাট কোহলি। দ্বিমত করবার নিশ্চয়ই সুযোগ খুব একটা নেই। ধারাবাহিকতার অনন্য মূর্তি হয়ে তিনি এখনও বিরাজমান বিশ্ব ক্রিকেটে। দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন বিশ্বকাপও।
ছয় ম্যাচে ভারতের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রহ করেছেন তিনি। ৩৫৪ রানের পাশে রয়েছে ৮৮.৫০ গড়। স্ট্রাইকরেটটাও কাটায় কাটায় ৮৮.৫০। তবে তার গড়ই প্রমাণ করে যে ঠিক কতটা ধারাবাহিক তিনি। যখনই ভারত রান তাড়া করেছে তখনই যেন ভিন্ন এক অবতারে হাজির হয়েছেন বিরাট কোহলি।
ঠিক কি করে তিনি পারেন এমনটা? এই ধরণের প্রশ্ন আসা স্বাভাবিক বটে। একটু হলেই ছুঁয়ে ফেলবেন শচীন টেন্ডুলকারের বিশ্বকাপে করা ৪৯ সেঞ্চুরির রেকর্ড। তাছাড়া শচীনের ১০০ শতকের রেকর্ডে ভাগ বসানোর দ্বার এখনও উন্মোচিত করে রেখেছেন তিনি। অথচ ক্যারিয়ারের বয়সের ব্যাপ্তিতে রয়েছে ভীষণ ফারাক।
বিরাট এমন মোহনীয় পারফরমেন্সের জন্যে নিজেকে বারংবার বদলেছেন। স্থির থেকে স্রেফ ভাগ্যের দয়ার অপেক্ষা করেননি। বরং তিনি সময়ের প্রয়োজনের সাথে তাল মিলিয়ে নিজের বহু অভ্যাস বদলে ফেলেছেন। নিজের খাদ্যাভাস থেকে শুরু করে বদলের ফেলেছেন জীবনের চলার রুটিন।
তবে বিরাট এমন ধ্রুব এক পারফরমার হওয়ার পেছনের কৃতীত্ব দিয়েছেন নিজের পেশাদারিত্বকে। তিনি দলের জয়ের অবদান রাখবার তাড়না বাড়িয়েছেন নিজের মধ্যে। এই নিয়ে বিরাট বলেন, ‘আমার মধ্যে সবসময় সেই তাড়না ছিল, কিন্তু আমার পেশাদারিত্বের অভাব ছিল। এখন আমার একমুখী ফোকাস থাকে কিভাবে আমি খেলাটা খেলতে চাই।’
ক্রিকেট সবসময়ই পরিশ্রমীদের ফিরিয়ে দেয়। দু’হাত ভরে অর্জন গছিয়ে দেয়। তেমন সব অর্জনেই সিক্ত বিরাট কোহলি। তিনি বলেন, ‘ক্রিকেট সবসময় প্রচেষ্টার স্বীকৃতি দেয়। সত্যি বলতে, আমি সেটাই শিখেছি আমার ক্যারিয়ার জুড়ে।’
তবে সেটি পাওয়ার ক্ষেত্রে বিরাট নিজেকে করেছেন আরও বেশি শৃঙ্খল। বিরাট বলেন, ‘সেজন্য আমি বহু পরিবর্তন এনেছি, আমার জীবনধারায় আরও বেশি সুশৃঙ্খল হয়েছি।’ বয়স ৩০ এর কোটার মধ্যভাগে। তবুও যেন মাঠের বিরাট-কে দেখলেই মনে হয় কিশোর কোন ছোকড়া অনায়াসে উপভোগ করছে ক্রিকেট।
বিরাটরাই আসলে প্রমাণ করেন, যে আপনি শুধু জেগে থেকে স্বপ্ন দেখলেই হবে না। আপনাকে নিজের জীবন পুরোদমে বদলে ফেলতে হবে। সেটা খাবার থেকে শুরু করে জীবন যাত্রার গতিপথ। আপনাকে প্রতিনিয়ত নিজের উন্নতির জন্যে কাজ করে যেতে হবে। কথায় আছে না, কিছু পেতে হলে কিছু হারাতে হয়! ঠিক তেমন।
ত্যাগের বিনিময়েই বিরাটদের স্বপ্ন ছাপিয়ে যায়। তারা বিশ্বের বুকে উজ্জ্বল এক নক্ষত্রে পরিণত হন। বাচ্চা থেকে বুড়ো সবাই বিরাটদের ভক্তে পরিণত হয়। তাদেরকে অনুসরণ করতে চায় খুব করে। তবে অধিকাংশ সময়েই তাদের প্রচেষ্টায় থেকে যায় ঘাটতি। তাইতো বিরাট একজনই হন।