তিন আসরের তিন বিশ্ব চ্যাম্পিয়নকে হারিয়ে দিয়ে আফগানিস্তান শুধু বিশ্বকেই চমকে দেয়নি; ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় আসরের সেমিফাইনালে খেলার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে। আর সেই স্বপ্ন দেখার পথে বাধা হতে পারেনি আরেক ‘জায়ান্ট কিলার’ নেদারল্যান্ডস। ইউরোপীয়ান দলটিকে সাত উইকেটে হারিয়েছে রশিদ, মুজিবরা।
বরাবরের মতই টসে জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ডাচ অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডস। প্রথম ওভারেই ওপেনার ওয়েসলি বারেসি বিদায় নিলেও শুরুটা ভাল হয়েছিল তাঁদের। কলিন আকারম্যান ও ম্যাক্স ও’ডউডের ৭০ রানের জুটিতে বড় রান করার সুযোগ তৈরি হয় নেদারল্যান্ডসের সামনে।
কিন্তু হঠাৎ যেন রান আউটের হিড়িক পড়ে যায় বাইশ গজে। ৪২ রান করে ও’ডউড প্যাভিলিয়নে ফেরেন রান আউটের ফাঁদে পড়ে; একই ঘটনা ঘটে আকারম্যানের সঙ্গেও। পরের বলে এডওয়ার্ডসও বিব্রতকরভাবে রান আউটের শিকার হন। অভিজ্ঞ বাস ডি লিডও হাল ধরতে পারেননি; ৭৩/১ থেকে ৯৭/৫ এ পরিণত হয় স্কোরবোর্ড।
সেই চাপ থেকে আর বের হতে পারেনি ব্যাটাররা। সাকিব জুলফিকার, ভ্যান বিক, ভ্যান ডার মারইউ সবাই সাজ ঘরের পথ ধরেন দ্রুতই। তবে সতীর্থদের আসা যাওয়ার মিছিলে ব্যতিক্রম ছিলেন সাইব্রান্ড এঞ্জেলব্রেখট।
লোয়ার অর্ডারের সঙ্গে ছোট ছোট জুটি গড়ে দলকে এনে দিয়েছেন সম্মানজনক সংগ্রহ। শেষপর্যন্ত ৫৮ করে তিনি থামলে থেমে যায় নেদারল্যান্ডসও; সবকয়টি উইকেট হারিয়ে ১৭৯ রান জমা করতে সক্ষম হয় তাঁরা।
জবাবে আফগানিস্তান আধিপত্য দেখিয়েই জয় তুলে নিয়েছে। যদিও ষষ্ঠ ওভারে রহমানউল্লাহ গুরবাজের উইকেট তুলে নিয়ে আশার আলো দেখিয়েছিলেন ভ্যান বিক; আবার ইব্রাহিম জাদরানও বড় রান করতে পারেননি এদিন। কিন্তু দুই ভরসা রহমত শাহ এবং অধিনায়ক হাসমতউল্লাহ শহীদি বিপদে পড়তে দেননি আফগানদের।
এই দুই ব্যাটারের ৭৪ রানের জুটিতে ম্যাচ থেকে পুরোপুরি ছিটকে যায় ডাচরা। তবে ৫২ রানের মাথা ডানহাতি ব্যাটারকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন জুলফিকার। জয়ের পথে অবশ্য সেটা বাঁধা হতে পারেনি, আফগান দলপতি অপরাজিত ফিফটিতে বন্দরে পৌঁছে দিয়েছেন তরী। আর তাঁকে যোগ্য সমর্থন দিয়েছেন তরুণ আজমতউল্লাহ ওমরজাই।
এই জয়ে সেমিফাইনালের আরো কাছে পৌঁছে গিয়েছে আফগানিস্তান। নিজেদের বাকি দুই ম্যাচ জিতলে তো বটেই, এক ম্যাচ জিতলেও সেরা চারে খেলার দারুণ সম্ভাবনা রয়েছে তাঁদের। এমনকি আর কোন ম্যাচ না জিতলেও নেট রান রেটের হিসেবে পরের রাউন্ডে উঠে যেতে পারে দলটি।