অস্ট্রেলিয়ার জন্য ম্যাচটা ছিল সেমিফাইনালের আগে নিজেদের ঝালাই করে নেয়ার সুযোগ, অন্যদিকে বাংলাদেশের প্রাথমিক লক্ষ্য চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে জায়গা পাওয়ার দৌড়ে এগিয়ে যাওয়া। অজিদের আট উইকেটে জয় পাওয়ার দিনে অবশ্য দুই দলের লক্ষ্যই পূরণ হয়েছে; তবে মুশফিক, মাহমুদউল্লাহদের শেষ বিশ্বকাপ ম্যাচে এমন অসহায় পরাজয় নিশ্চয়ই অতৃপ্ত করবে সমর্থকদের।
আরো একবার পুনের মাঠে ব্যাটিংয়ে নামতেই ভারত ম্যাচের স্মৃতি ফিরিয়ে এনেছিলেন দুই ওপেনার লিটন দাস এবং তানজিদ হাসান তামিম। নতুন বলে অস্ট্রেলিয়ান পেসারদের দারুণভাবে সামলান এই দুজনে। পাওয়ার প্লেতে কোন উইকেট না হারিয়ে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৬২ রান। অবশ্য ৩৬ রান করা তামিমকে ফিরিয়ে উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন শেন অ্যাবট।
তিন নম্বরে নামা নাজমুল শান্তের সঙ্গেও মানিয়ে নিয়েছিলেন লিটন; কিন্তু লং অনে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান তিনি। তৃতীয় উইকেট জুটিতে অবশ্য টাইগারদের বড় রান করার মঞ্চ গড়ে দেন তাওহীদ হৃদয় ও শান্ত। দলীয় ১৭০ রানে এই বাঁ-হাতি রান আউটে কাটা পড়লে থামে তাঁদের ৬৪ রানের জুটি। উড়ন্ত শুরু পেলেও শান্তর মতই আবারো রান আউটে আটকা পড়েন মাহমুদউল্লাহ।
এরপর আর রানের গতি বাড়াতে পারেনি বাংলাদেশ, যদিও হৃদয় নিজের ইনিংস টেনে নিয়েছেন ৪৭তম ওভার পর্যন্ত। ডিপ মিড উইকেটে ফিল্ডারের তালুবন্দি হওয়ার আগে তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে ৭৯ বলে ৭৪ রানের ঝকঝকে এক ইনিংস। আর তাতে ভর করেই ৩০৬ রান করতে পেরেছে টিম টাইগার্স।
বিশ্বকাপে কখনোই ৩০০ বা তার বেশি রান চেজ করতে না পারা অস্ট্রেলিয়া এদিন অবশ্য প্রথম থেকেই ইতিবাচক ছিল। ওপেনার ট্রাভিস হেডকে তৃতীয় ওভারে হারালেও আক্রমণাত্মক ছিলেন অজি ব্যাটাররা। বিশেষ করে মিচেল মার্শের ব্যাটে দেখা যায় বাউন্ডারি বৃষ্টি; তাঁর সঙ্গে ওয়ার্নার যোগ দিলে ১৫ ওভারেই দলীয় শতক পূর্ণ করে পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।
ব্যক্তিগত ফিফটির পরপরই ওয়ার্নারকে আউট করে বাংলাদেশকে ব্রেক থ্রু এনে দেন তাসকিন আহমেদ। তবে মার্শকে প্রতিরোধ করা যায়নি, ৮৭ বলেই সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি। এরপরও আগ্রাসন কমেনি এই ব্যাটারের, স্টিভ স্মিথের সঙ্গে তাঁর শতরানের জুটির কল্যাণে ম্যাচ থেকে কার্যত ছিটকে যায় মেহেদি, মুস্তাফিজরা। শেষপর্যন্ত মার্শের ১৭৭ রানের অতিমানবীয় ইনিংস আর স্মিথের ফিফটিতে ভর করে ৩২ বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় প্যাট কামিন্সের দল।