ব্যাট হাতে রোহিত শর্মার আগ্রাসন চলছেই। এবারের বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত ওপেনারদের মধ্যে কুইন্টন ডি ককের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান এসেছে ভারতীয় এই অধিনায়কের ব্যাট থেকেই। তবে রোহিত শর্মা যেন আলাদা করে নজর কাড়ছেন প্রতি ম্যাচেই দলকেই উড়ন্ত সূচনা এনে দিয়ে। তাঁর আক্রমণাত্বক ব্যাটিংয়েই রান পাহাড়ে চড়া কিংবা রানতাড়ায়- সব কিছুতেই অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে টিম ইন্ডিয়া।
প্রায় প্রতিটি ম্যাচে ইনিংসের শুরুতেই রোহিত শর্মা কতটা ব্যাট হাতে কতটা আক্রমণাত্বক ছিলেন, তার প্রমাণ মেলে পাওয়ার প্লে-র পরিসংখ্যানে। রাউন্ড রবিন লিগ শেষে পাওয়ার প্লে-তে সর্বোচ্চ ৩০৭ রান এসেছে রোহিতের ব্যাট থেকেই। যেখানে তাঁর ব্যাটিং স্ট্রাইকরেট ছিল ১২৯.৫৪।
শুধু তাই নয়,পাওয়ার প্লে-তে চার ছক্কা হাঁকানোর দিক দিয়ে এ ওপেনার রয়েছেন সবার শীর্ষে। ওপেনার হিসেবে প্রথম পাওয়ার প্লে অর্থাৎ ইনিংসের ১ থেকে ১০ ওভারের মধ্যে সর্বোচ্চ ১৭ টা ছক্কা মেরেছেন তিনি। একই সাথে, প্রথম পাওয়ার প্লে-তে সর্বোচ্চ ৩৮ টা চারের রেকর্ডও রোহিত শর্মার।
অবশ্য নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে আজ ৬১ রানের ইনিংসে দুটি নতুন রেকর্ড গড়েছেন ভারতীয় এ ওপেনার। ডাচদের বিপক্ষে এই ইনিংস খেলার পথে ৮ চারের বিপরীতে ছক্কা হাঁকান দুটি। আর এই ছক্কাতেই তিনি ছাপিয়ে গিয়েছেন এ বি ডি ভিলিয়ার্সের গড়া একটি রেকর্ডকে।
এক পঞ্জিকাবর্ষে সবচেয়ে বেশি ছক্কার রেকর্ডে এত দিন সবার ওপরে ছিলেন এ বি ডি ভিলিয়ার্স। ২০১৫ সালে তিনি মোট ৫৮ টি ছক্কা মেরেছিলেন। তবে সেই রেকর্ডটাই এখন অতীত হয়ে গেল। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ইনিংসের সপ্তম ওভারে কলিন অ্যাকারম্যানের বলে রোহিত যে ছক্কাটি মেরেছেন, তা এ বছরে তাঁর ৫৯তম ছক্কা।
এ ছাড়া অধিনায়ক হিসেবে বিশ্বকাপের এক আসরে বেশি ছয়ের রেকর্ডও নিজের করে নিয়েছেন রোহিত। ২০১৯ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের ইয়ন মরগান মেরেছিলেন ২২ ছক্কা। ডাচদের বিপক্ষে দুই ছক্কায় এরই মধ্যে এবারের আসরে ২৩ ছক্কাতে পৌঁছে গিয়েছেন রোহিত।
অবশ্য আন্তর্জাতিক ক্রিকেট নতুন ছক্কামানব তো এখন রোহিতই। এই কিছুদিন আগেই তিনি ক্রিস গেইলকে টপকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সর্বোচ্চ ছক্কার মালিক বনে গিয়েছেন। তবে দিনশেষে রোহিতের এমন ব্যক্তিগত অর্জনে সুফলটা পাচ্ছে দলই। রোহিতের কাছেও যেটি মূখ্য ব্যাপার।
এবারের বিশ্বকাপে হয়তো উড়ন্ত শুরু করেও ইনিংস বড় করতে পারছেন না রোহিত। তবে তাঁর আক্রমণাত্বক ব্যাটিংই পরের ব্যাটারদের জন্য সহজ করে দিচ্ছে। আর দলের এই সংমিশ্রণেই বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত অপরাজেয় ভারত। বিশ্বকাপ জয়ের জন্য মেন ইন ব্লুজদের বাঁধা আর দুটি ম্যাচ। ‘অপরাজেয়’ তকমা রেখেই হয়তো এই দুই বাঁধা টপকাতে চাইবে রোহিত শর্মার দল।