২০০৪ সালে ভারত সফরে এসে মুম্বাইয়ের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে নামে। সেই ম্যাচে ১৭ বছর বয়সী এক ব্যাটারকে দলে নেন মুম্বাই কোচ; কিন্তু ম্যাচের দিন সেই কিশোর কিট ব্যাগ আনতে ভুলে যায়, সে ভেবেছিল একাদশে জায়গা হবে না তাই কিটের কথা গুরুত্ব দিয়ে ভাবেইনি।
এরপর বহু সময় পেরিয়ে গিয়েছে, কিন্তু ভুলোমনা ছেলেটা এখনো ভুলোমনা রয়ে গিয়েছে। প্রায়ই বিভিন্ন জায়গায় পাসপোর্ট, ওয়ালেট, ফোন ভুলে রেখে আসে সে – তবে সে পরিণত হয়েছে ঠিকই, ভারতীয় দলের নেতৃত্বও এখন তাঁর কাঁধে; কারণ গল্পটা যে রোহিত শর্মার।
অনেকটা কিছু ভুলে গেলেও রোহিত অবশ্য অস্ট্রেলিয়াকে শাসন করতে ভোলেন না। অজিদের বিপক্ষে তাঁর ব্যাট আরো চওড়া হয়ে ওঠে, অনায়াসে রান করেন তিনি। ওয়ানডেতে দলটির সাথে আটটি সেঞ্চুরি আর নয়টি হাফসেঞ্চুরি রয়েছে এই ওপেনারের। এর মধ্যে জয়পুরের সেই ১৪১ রানের ইনিংস বোধহয় সবচেয়ে বিশেষ, কেননা সেই ইনিংসে ভর করেই ভারত ৩৬০ রানের টার্গেট টপকে জয় পেয়েছিল।
তাই তো রবিবারের শিরোপার শেষ লড়াইয়ে অধিনায়কের দিকেই চেয়ে থাকবে পুরো ভারত। পুরো টুর্নামেন্ট জুড়েই দলকে উড়ন্ত সূচনা এনে দিয়েছেন তিনি, ফাইনালেও তাঁর কাছ থেকে এমন কিছুই প্রত্যাশা করছে স্বাগতিক দর্শকেরা। শুধু ব্যাটার হিসেবে নয়, ক্যাপ্টেন হিসেবেও তাঁর কাছ থেকে সেরাটা চায় সবাই। অবশ্য দুর্দান্ত ছন্দে থাকা টিম ইন্ডিয়ার চালিকাশক্তি রোহিতের কাপ্তানি।
মাঠে ক্যাচ মিস কিংবা ডিআরএস ইস্যুতে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া দেখালেও সবসময় মনোযোগী থাকেন তিনি। এখন পর্যন্ত তাঁর বোলিং চেঞ্জ, ফিল্ডিং সেটআপ সবকিছুই শতভাগ সফল। এই ডানহাতির ছোটবেলার কোচ দিনেশ ল্যাড বলেন, ‘মাঠে তাঁকে কেমন দেখা যায় সেটা দিয়ে বিচার করা বোকামি হবে। সে স্মার্ট এবং মনোযোগী; তাঁর সব বোলিং চেঞ্জ কাজে দিয়েছে, ফিল্ডিংও যখন যেমন প্রয়োজন সেভাবে সাজিয়েছে।’
২০০৮ সালে বোর্ড প্রেসিডেন্ট একাদশের হয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মাঠে নেমেছিলেন বিরাট কোহলি এবং রোহিত শর্মা। দুজনেই সেদিন ১০৫ রান করেছিলেন। দেড় দশক পর তাঁরা আবার অজিদের মুখোমুখি হবেন; তবে লক্ষ্য ভিন্ন, স্বপ্ন ভিন্ন।
এবারও কি এই দুই মহাতারকা দুর্দান্ত কিছু করবেন? নিজেদের শেষ বিশ্বকাপ ম্যাচটা স্মরণীয় করে রাখবেন চিরকালের জন্য? উত্তরটা জানা যাবে আর খানিকটা অপেক্ষার পরেই।