৪৩ রানে অপরাজিত থেকেই চতুর্থ দিন শুরু করেছিলেন মুশফিকুর রহিম। টেস্ট জয়ের সম্ভাবনা তখনও বেশ উজ্জ্বল। ঠিক যেন শীতের দিনেও সিলেটে সকালের তীব্র রোদের মতই। মুশফিকের সাথে এদিন ব্যাট হাতে শুরু করেছেন সেঞ্চুরি করা নাজমুল হোসেন শান্ত।
এই দু’জনের উপরই দায়িত্ব ছিল দলের সংগ্রহ বাড়িয়ে নেওয়ার। মুশফিকুর রহিম সেই ভাবনা থেকেই ব্যাট করতে শুরু করেন একটু রয়েসয়ে। লেগ স্ট্যাম্পের খানিকটা বাইরে থেকেই ব্যাটিংয়ের জন্যে প্রস্তুতি নিয়েছেন এদিন মুশফিক।
যাতে করে ভেতরের দিকে বাঁক খাওয়া বলগুলোকে খেলার জন্যে যথেষ্ট সময় পাওয়া যায়। সেই পরিকল্পনায় সফলতাও পাচ্ছিলেন মুশফিক। রান আসছিল নিয়ম করেই। তবে সেই ব্যাটিং স্টান্সই খানিকটা বিপাকে ফেলে দিল যেন।
এজাজ প্যাটেলের মিডেল স্ট্যাম্পে পিচ করা ফুলার লেন্থের বলটি আঘাত করে মুশফিকের প্যাডে। সামনে ঝুকে সেই বলে বাহিরমুখী বাঁকই আসা করছিলেন মুশফিক। তবে বলটা এ দফা আর কোন প্রকার টার্ন করেনি। সোজা উইকেট মুখেই হয়েছে অগ্রসর। তাতে করে রিভিউ নিয়েও রক্ষে হয়নি মুশফিকের।
তবে ততক্ষণে অবশ্য মুশফিক পেরিয়ে গেছেন পঞ্চাশ রানের গণ্ডি। ব্যক্তিগত ২৭ তম হাফ সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন তিনি সাদা পোশাকে। আরও একটি সেঞ্চুরির পথেই হাটতে চেয়েছিলেন মুশফিকুর রহিম। তবে এদিন আর তেমনটি ঘটেনি।
বলের ধরণ বুঝতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়ে ফিরেছেন মুশফিক। বলের বেশ দূরেই ছিল ফরোয়ার্ড ডিফেন্সের জন্যে আগত হওয়া মুশফিকের ব্যাট। এর আগের বলগুলোতে মুশফিকের ব্যাটের খোঁচা পেতে টার্ন করিয়েছিলেন এজাজ। তবে আউট করা বলটি তিনি রেখেছিলেন একেবারেই তীরের মত সোজা।
তিনি যখন আউট হয়ে ফেরেন তখন বাংলাদেশের দলীয় রান ২৭৮। দলীয় লিড ২৭১। আরও খানিকটা দূর নিশ্চয়ই ব্যাট করতে চেয়েছিলেন মুশফিকুর রহিম। তবে তেমনটি ঘটেনি। অবশ্য চতুর্থ দিন সকালেই যে উইকেট পতন হএব সেটা ছিল অনুমিতই। দিনের একেবারেই শুরুর দিকে বাজে একটি বলে আউট হয়ে ফিরেছেন শান্ত। লেগ সাইড দিয়ে বেড়িয়ে যাওয়া বলটায় গ্লান্স করতে গিয়েই আউট হয়েছিলেন শান্ত।
অভিষেক হওয়া শাহাদাত হোসেন দিপুও লম্বা সময় ধরে টিকতে পারেননি। তবুও একটা প্রান্ত থেকে রান আদায় করার কাজটি করে যাচ্ছিলেন মুশফিকুর রহিম। তাতেই তো দলীয় রান ৩০০ এর কাছাকাছি অবধি নিয়ে যেতে পেরেছেন। তবে প্রথম সেশন শেষ না করে আসার আফসোস নিশ্চয়ই রয়েছে তার।
তাছাড়া ১১ তম সেঞ্চুরিটাও যে থেকে গেল অপূর্ণ। সেই আক্ষেপও নিশ্চয়ই করেছেন মুশফিকুর রহিম। স্পিন ধরতে থাকা উইকেটে তিনিই হতে পারতেন বাংলাদেশের যোগ্য প্রতিনিধি। স্পিনারদের বিপক্ষে যে তিনি বড্ড সাবলীল। তবে ভাগ্যটা এদফা সহায় হয়নি মুশফিকের।