একালের বাইশ গজে ‘সেকেলে’ কুসংস্কার

ক্রিকেটারদের কুসংস্কার নিয়ে চাইলে দিস্তার পর দিস্তা কাগজ খরচ করা যায়। সাবেক ইংলিশ অধিনায়ক মাইক আথারটন নাকি অপরাজিত থেকে দিন শেষ করলে সেদিন গণমাধ্যমে কোনো কথাই বলতেন না। এমনকি সতীর্থদেরও এড়িয়ে চলতেন।

ক্রিকেটারদের কুসংস্কার নিয়ে চাইলে দিস্তার পর দিস্তা কাগজ খরচ করা যায়। সাবেক ইংলিশ অধিনায়ক মাইক আথারটন নাকি অপরাজিত থেকে দিন শেষ করলে সেদিন গণমাধ্যমে কোনো কথাই বলতেন না। এমনকি সতীর্থদেরও এড়িয়ে চলতেন।

আর মাহেলা জয়াবর্ধনের ব্যাটে চুমু খাওয়ার দৃশ্য তো লেখা হয়ে গেছে ক্রিকেটের ইতিহাসের পাতায়। অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তীতুল্য অধিনায়ক স্টিভ ওয়াহ’র ছিল দাদুর দেওয়া একটা লাল রুমাল। তিনি সব সময় সেই রুমাল নিয়ে মাঠে নামতেন, সেটা দিয়ে ঘাম মুছতেন। কেউ কেউ বলে স্টিভের অধীনে অজিদের অজেয় হয়ে ওঠার পেছনে বড় ভূমিকা নাকি এই লাল রুমালের।

আথারটন-স্টিভ-মাহেলাদের যুগ হয়েছে বাসি। তবে, কুসংস্কার পিছু ছাড়েনি ক্রিকেট মাঠের। এ কালের নামকরা সব ব্যাটসম্যানরাও এমন সব কুসংস্কার মেনে চলেন যা শুনলে যে কারোরই চোখ কপালে উঠতে বাধ্য। তেমনই কয়েক জন ক্রিকেটার ও তাদের কুসংস্কার নিয়ে আমাদের এবারের আয়োজন।

  • তামিম ইকবাল (বাংলাদেশ)

বাংলাদেশের ইতিহাসের সর্বকালের সেরা ব্যাটসম্যানদের একজন তিনি। অবিসংবাদিত সেরা ওপেনার। তামিম ইকবালও উইকেটে নামার আগে কখনও কখনও ঘাবড়ে যান। বিশেষ করে মাঠে নামার আগে কেউ যখন এসে পিঠ চাপড়ে শুভ কামনা জানায়। তাই, উইকেটে নামার আগে পারতপক্ষে কারও সঙ্গে কথাই বলেন না তামিম। যদিও, এখন তামিম না চাইলেও নামার আগে তাঁকে কথা বলতে হয় অনেকের সাথেই, কারণ তিনিই তো এখন ওয়ানডে দলের অধিনায়ক।

  • ক্রিস গেইল (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)

টি-টোয়েন্টির ফেরিওয়ালা খ্যাত ক্রিস গেইল বরাবরই তার ভয়ডরহীন ব্যাটিংয়ের জন্য পরিচিত। তবে, তিনিও কুসংস্কার থেকে দূরে নন। ক্যারিবিয়ান এই ব্যাটিং দানব নাকি উইকেটে আসার আগে তার পছন্দের শটগুলো আবারও এক দফা অনুশীলন করে নেন। এটা নাকি তার আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেয়।

  • বিরাট কোহলি (ভারত)

সময়ের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান বিরাট কোহলি। নিয়মিতই তার সঙ্গে তুলনা হয় স্বয়ং শচীন টেন্ডুলকারের। তবে, তিনিও ব্যাটিংয়ের ক্ষেত্রে বড় একটা কুসংস্কার অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলেন। কোনো একটা গ্লাভস পরে রান পাওয়া শুরু করলে, সেটাই নিয়মিত পরতে থাকেন। তা সেটা যত পুরোনোই হোক না কেন।

  • ডেল স্টেইন (দক্ষিণ আফ্রিকা)

প্রোটিয়াদের কালজয়ী পেসার ডেল স্টেইন। ক্রিকেট মাঠে যতই সাফল্য পান না কেন তিনি নিজেও কুসংস্কারমুক্ত রাখতে পারেননি নিজেকে। যখনই তিনি মাঠে নামেন আগে বাম পা মাঠে রাখেন, আর চোখ থাকে আকাশের দিকে। কখনোই এই নিয়মের ব্যতিক্রম হয় না।

  • স্টিভেন স্মিথ (অস্ট্রেলিয়া)

একালের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে ভূতুড়ে ব্যাটিং স্ট্যান্সের জন্য সবচেয়ে আলোচিত হলেন স্টিভেন স্মিথ। তবে, এই ব্যাপারটা স্মিথ নাকি করেন নিজের আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর জন্য। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার (সিএ) দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় সাবেক এই অজি অধিনায়ক বলেছিলেন, এটা নাকি তার পারফরম্যান্স ভালো করতে প্রভাব রাখে।

  • শিখর ধাওয়ান (ভারত)

পারফরম্যান্স যাতে ভালো হয়, সেজন্য আজকাল ক্রিকেটাররা কত কী কৌশলই না ব্যবহার করেন। তবে, একটু ব্যতিক্রম ভারতের শিখর ধাওয়ান।এনডি টিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে একবার তিনি জানিয়েছিলেন, মাঠে নামার আগে অবশ্যই তিনি এক বার টয়লেট ঘুরে আসেন। উদ্বোধনী জুটিতে ধাওয়ানের সঙ্গী রোহিত শর্মাও এই কথা স্বীকার করেন।

  • লাসিথ মালিঙ্গা (শ্রীলঙ্কা)

মাহেলা চুমু খেতেন বলে, আর তাঁরই সতীর্থ লাসিথ মালিঙ্গা চুমু খান বলে। এটাই নাকি তাঁর জন্য সৌভাগ্য বনে আনে। আর সেই বল দিয়ে একের পর এক টো-ক্রাশিং ইয়র্কার করে ব্যাটসম্যানদের রাতের ‍ঘুম হারাম করেন তিনি।

  • রবিচন্দ্রন অশ্বিন (ভারত)

ভারতের ইতিহাসের অন্যতম সেরা স্পিনার তিনি। রবিচন্দ্রন অশ্বিনও কুসংস্কার মুক্ত নন। তিনি সব সময়ই নিজের সাথে একটা ব্যাগ রাখেন, তা সেই ম্যাচে তিনি খেলুন আর নাই খেলুন। একটা টুর্নামেন্টে তিনি মাত্র দু’টো ম্যাচ খেলেন, কিন্তু গোটা আসর জুড়ে একটা ব্যাগ কাঁধে দিয়ে এক ভেন্যু থেকে আরেক ভেন্যুতে গেছেন, ম্যাচের দিন মাঠে গেছেন। আর সেই টুর্নামেন্টেই ২৮ বছর পর ভারত জিতে বিশ্বকাপ।

লেখক পরিচিতি

সম্পাদক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link