নিউজিল্যান্ডে ওয়ানডেতে নড়বড়ে বাংলাদেশ

ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের সাথে টেস্ট সিরিজ ড্র। এরপরই বাংলাদেশ উড়াল দিয়েছে সুদূর নিউজিল্যান্ডে। সাদা বলের পূর্ণাঙ্গ সিরিজই খেলবে বাংলাদেশ। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ দিয়ে দুই দলের লড়াই মাঠে গড়াবে। স্বাভাবিকভাবেই বাংলাদেশ দল খানিক চাপেই থাকছে।

চাপে থাকার বেশ কিছু কারণও রয়েছে। দলটায় পুরাতন খেলোয়াড়দের মধ্যে স্রেফ মুশফিকুর রহিমই রয়েছে। বাকিরা এখনও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ধারাবাহিকতার পরিচয় দিতে পারেননি। তার উপর নতুন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর নেতৃত্বে একেবারে বৈরি এক কন্ডিশনে খেলতে নামবে বাংলাদেশ দল।

এসব ছাড়াও অবচেতন মনে নিশ্চয়ই পীড়া দিচ্ছে নিউজিল্যান্ডে স্বাগতিকদের বিপক্ষে না পাওয়া জয়ের রেকর্ড। বিগত কয়েক বছরে বাংলাদেশ ওয়ানডে ক্রিকেটে অন্তত নজর কাড়া উন্নতি করেছে। যদিও বিশ্বকাপে একেবারেই ভরাডুবি হয়েছে দলের। তবুও আসলে ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশের উন্নতির বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।

অথচ এই দলটা নিউজিল্যান্ডের মাটিতে স্বাগতিকদের বিপক্ষে ওয়ানডে ক্রিকেটে জেতেনি একটি ম্যাচ। ১৬টি ম্যাচ খেলেছে ব্ল্যাকক্যাপসদের মাটিতে তাদের বিপক্ষে। যার সব ক’টিই হেরেছে টাইগাররা। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে সবই যে দু:খস্মৃতি তাও আবার নয়।

২০১৫ বিশ্বকাপে  স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে রেকর্ড গড়ে জয় পেয়েছিল মাশরাফি বিন মর্তুজার দল। নেলসনে স্কটল্যান্ডের দেওয়া ৩১৯ রানের লক্ষ্য বাংলাদেশ টপকে জয় নিজেদের করে নিয়েছিল। তবে, স্বাগতিকদের বিপক্ষে হ্যামিলটনে হওয়া ম্যাচটিতে জয়ের আশা জাগিয়েও শেষ অবধি হারতে হয়েছে বাংলাদেশকে।

সেই ম্যাচটিতেই কিউইদের আস্তনায় তাদের বিপক্ষে সর্বোচ্চ ২৮৮ রান জমা করতে পেরেছিল বাংলাদেশের ব্যাটাররা। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের অপরাজিত ১২৮ রানের অনবদ্য এক ইনিংসের কল্যাণে। সেটাই বাংলাদেশি ব্যাটারদের মধ্যে সর্বোচ্চ রানের ইনিংসে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তাদের ঘরের মাটিতে।

নিউজিল্যান্ডের মাটিতে  বাংলাদেশের পক্ষে আগের ১৬টি ম্যাচই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেছিলেন ওপেনার তামিম ইকবাল খান। তবে ইনজুরি ও পারিপার্শ্বিক নানা কারণে এদফা দলে নেই তামিম। ১৬ ম্যাচে ২৫ এর একটু বেশি গড়ে মোট ৪০৫ রান করেছিলেন তামিম ইকবাল খান। তার দলে না থাকাটা অবশ্যই খানিকটা সেটব্যাকের কারণ বাংলাদেশের জন্যে।

অন্যদিকে বল হাতে সর্বোচ্চ উইকেট শিকার করেছেন সাকিব আল হাসান। ইনজুরির কারণে তিনিও নেই দলে। স্পিনার হয়েও নিউজিল্যান্ডের পেস সহায়ক উইকেটে ১৭ খানা উইকেটের মালিক সাকিব। বর্তমান দলে থাকা মুস্তাফিজুর রহমান সাকিবের পরেই অবস্থান করছেন ১১ খানা উইকেট নিয়ে।

সামগ্রিক পরিসংখ্যান মোটেও বাংলাদেশের পক্ষে নেই। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে বেশ কঠিন সময়ই পার করতে হবে বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের, সেটা প্রায় নিশ্চিত। নিউজিল্যান্ডের উদ্দেশ্যে দেশ ছেড়ে যাওয়া ১৫ সদস্যের দলের অধিকাংশেরই নিউজিল্যান্ডের মাটিতে খেলার পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই।

এসব কিছু মিলিয়ে বেশ একটা চাপ অনুভব করতেই পারে বাংলাদেশ। সেটাই অবশ্য মূল চ্যালেঞ্জ। নিজেদের চাপ ঝেড়ে ফেলে পারফরম করতে পারলেই বরং জয় তুলে নেওয়া সম্ভব। তেমনটা শান্তর বাংলাদেশ দল করতে পারে কিনা, তা অবশ্য জানা যাবে সময় গড়ালেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link