বারবার ভারতের কাছে আটকে যাওয়া অভ্যাসে পরিণত হয়েছিল বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের। এশিয়া কাপ, বিশ্বকাপের মত টুর্নামেন্টে ভারতীয় যুবাদের কাছে হেরেছিল তাঁরা। এবারের এশিয়া কাপেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতে যাচ্ছিলো; তবে আরিফুল ইসলাম, আহরার আমিনদের দৃঢ়তায় প্রতিশোধ নিতে সক্ষম হলো লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।
শীতের সকালে আগে বোলিং পেয়ে পূর্ণ ফায়দা তুলে নিয়েছিলেন মারুফ মৃধা। প্রথম ওভারেই ওপেনার আদার্শ সিংকে এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলেন তিনি। ব্যক্তিগত দ্বিতীয় ওভারে আবারো উদযাপনের উপলক্ষ তৈরি করেন এই তরুণ, আরেক ওপেনার আর্শিন কুলকার্নিকে ফিরতে হয় মাত্র ১ রানে। অধিনায়ক উদয় শাহারন অবশ্য রানের খাতাই খুলতে পারেননি।
মারুফ ঝড় সামলে ওঠার আগেই ভারতীয় শিবিরে জোড়া আঘাত হানেন রোহানাত দৌল্লা বর্ষণ। এর সাথে এক রান আউটের বদৌলতে ৬১ রানেই ৬ উইকেট হারিয়ে বসে টিম ইন্ডিয়া। সেখান থেকে দলের হাল ধরেন মুশির খান ও মুরুগান অভিষেক। সপ্তম উইকেট জুটিতে এই দুজন যোগ করেন ৮৪ রান। আর এর ফলেই চ্যালেঞ্জিং পুঁজি পায় দলটি।
এদিন মুশিরের ব্যাট থেকে এসেছিল পঞ্চাশ রান আর অভিষক করেছিলেন ৬২। লোয়ার অর্ডারে আর কেউ দাঁড়াতে না পারলে শেষপর্যন্ত ৪৪ বল হাতে রেখে গুটিয়ে যায় ভারত, স্কোরবোর্ডে তখন ১৮৮ রান।
মাঝারি সংগ্রহ তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশের শুরুটাও ভাল হয়নি। ইনফর্ম আশিকুর রহমান শিবলি এদিন ফিরে গিয়েছেন পাওয়ার প্লের মধ্যেই, এর আগে জিসান, রিজওয়ানরা আউট হয়েছেন এক অঙ্কের ঘরে। সবমিলিয়ে ৩৪ রানে তিন উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়েছিল; সেসময় ত্রাতা হয়ে আবির্ভূত হন আরিফুল এবং আহরার।
দুজনে প্রথম দিকে খেলেছেন দেখেশুনে, সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে ধীরে ধীরে হাত খুলেছেন। বিশেষ করে আরিফুল ছিলেন সাবলীল, ১০০ ছুঁই ছুঁই স্ট্রাইক রেটে রান করে গিয়েছেন তিনি। সে তুলনায় আহরার ব্যাট করেছেন রয়ে সয়ে। দীর্ঘ অপেক্ষার পর রাজ লিম্বানি ব্রেক থ্রু এনে দিলেও দেরি হয়ে গিয়েছিল তখন। এই দুই তরুণের ১৩৮ রানের জুটিতে বাংলাদেশ ততক্ষণে পৌঁছে গিয়েছে জয়ের দ্বারপ্রান্তে।
যদিও ছয় রানের আক্ষেপ ছিল আরিফুলের, ৯৪ রানের মাথায় প্যাভিলিয়নে ফিরতে হয়েছে তাঁকে। তবে চার উইকেটে ভারতকে হারানোর দিনে নিশ্চয়ই মন খারাপ করবেন না তিনি। আর এই জয়ে শিরোপার আরো কাছে পৌঁছে গেল টিম টাইগার্স। ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ সংযুক্ত আরব আমিরাত। এই দলকেই গ্রুপ পর্বে ৬১ রানে হারিয়েছিল মাহফুজুর রহমান রাব্বির দল।