যেন এক রুপকথার সকাল! ১৯ বারের চেষ্টায় নিউজিল্যান্ড দূর্গে অবশেষে স্বাগতিকদের হারাতে পারল বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে টেস্ট জিতলেও এর আগে কখনোই সীমিত ওভারের ক্রিকেটে জয় দেখেনি বাংলাদেশ। নেপিয়ারে তাই শুধু হোয়াইট ওয়াশ এড়ানো নয়, জয়শূন্যতার দুঃস্মৃতি মুছে ফেলতে মাঠে নেমেছিল টাইগাররা। আর তাতে এবার রীতিমত ব্যঘ্র গর্জনে কুপোকাত নিউজিল্যান্ড। কিউইদের মাত্র ৯৮ রানে গুটিয়ে দিয়ে ৯ উইকেট আর ২০৯ বল হাতে রেখে ম্যাচটি জিতে নিয়েছে নাজমুল হোসেন শান্তর দল।
নেপিয়ারে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে এ দিন ৩১ ওভার ৪ বলে সবকটি উইকেট হারিয়ে ৯৮ রানে থামে নিউজিল্যান্ড। বাংলাদেশের হয়ে ৩টি করে উইকেট নেন তানজিম সাকিব, শরিফুল ইসলাম ও সৌম্য সরকার। জবাবে খেলতে নেমে এক উইকেট হারিয়ে ১৫ ওভার ১ বলে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ।
ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল অবশ্য প্রথম ভাগেই। সকালবেলার সুইং কাজে লাগিয়ে এ দিন কিউই ব্যাটিং অর্ডারে রীতিমত ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছিলেন শরিফুল-তানজিমরা। শুরুটা করেছিলেন তানজিম সাকিব। এরপর মাঝে মিডল অর্ডারে আঘাত হেনেছিলেন শরিফুল। আর বাকি কাজটা সারেন সৌম্য সরকার। এ তিন বোলারই নেন ৩ টি করে উইকেট। তাতেই ১০০-এর নিচে অলআউট হয় নিউজিল্যান্ড।
স্কোরবোর্ডে ছোট রান নিয়ে এ দিন একদমই লড়াই করতে পারেনি নিউজিল্যান্ড। শান্ত ও এনামুল হকের আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ২০৯ বল বাকি থাকতেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। এ নিয়ে ওয়ানডেতে কেবল তৃতীয় বার ২০০-এর বেশি বল হাতে রেখে জিতল টাইগাররা। ব্যাটিংয়ের সময় ইনজুরিতে পড়ায় সৌম্য সরকার শুরুতেই মাঠ থেকে উঠে আসলে শান্ত-এনামুলের ৬৯ রানের জুটিতে তেমন একটা বেগ পেতে হয়নি।
বরং সিঙ্গেলের চেয়ে বাউন্ডারির দিকেই বেশি নজর ছিল এ দুই ব্যাটারে। ৩৩ বলে ৩৭ রানের ইনিংস খেলার পথে ৭ টি চার মারেন এনামুল। আর ৪২ বলে ৫১ রানের ইনিংস খেলার পথে অধিনায়ক শান্ত বাউন্ডারির পথ খুঁজে নেন ৮ বার।
আগেই সিরিজ হেরে যাওয়ার এ ম্যাচের গুরুত্ব ততটা ছিল না। তবে কিউই কন্ডিশনে বারবার মাথা নোয়ানোর গল্পটা এবার পাল্টে দিল শান্তর বাংলাদেশ। নেপিয়ারের এ দিনের পুরো দৃশ্যপটেই যেন টাইগারদের গর্জনে নিউজিল্যান্ডের অসহায়ত্বের চিত্র ফুটে উঠেছে বারবার। এমন আগ্রাসী জয়ে তাই কিছুটা ইতিবাচকতা খুঁজে নিতেই পারে শান্তর বাংলাদেশ।