একেবারে ‘সফট ডিসমিসাল’। ব্যাটের আলতো খোঁচা। আম্পায়ার আউট না দিলেও রিভিউতে স্পষ্ট ব্যাটের স্পর্শ। তাওহীদ হৃদয় ফিরে গেলেন প্যাভিলিয়নে। যদিও ঠিক আগের বলেও হৃদয় পরাস্ত হয়েছেন মিশেল স্যান্টনারের বলে। বেশ দ্বিধাগ্রস্ত করে তুলেছিলেন তিনি বাংলাদেশের ব্যাটারদের।
স্যান্টনারের বোলিং অ্যাকশনই বরং দ্বিধার কারণ সৃষ্টি করে সবচেয়ে বেশি। যেই বলে হৃদয় আউট হয়েছেন, ঠিক তার আগের বলেই হৃদয় শট খেলার জন্যে ফ্রন্ট ফুট বাড়িয়ে দিয়েছেন অফ স্ট্যাম্পের দিকে। তখনও হাত থেকে বল বেড়োয়নি স্যান্টনারের। তিনি তাই দেখে শুনে লেন্থ খানিকটা খাটো করে দিলেন। অফ স্ট্যাম্পের বাইরে পরে বল খানিকটা স্কিড করে। তাতে পরাস্ত না হয়ে উপায় ছিল না হৃদয়ের।
একই ঘরনার একটি বলে আউট হতে হয়েছে হৃদয়কে। ঠিক এমন ভাবেই খাবি খাইয়েছেন স্যান্টনার বাংলাদেশের ব্যাটারদের। তাতে করে ধসে গেছে বাংলাদেশের মিডল অর্ডার। গুণে গুণে চার খানা উইকেট গেছে স্যান্টনারের পকেটে। বাংলাদেশের চতুর্থ থেকে সপ্তম স্থানে নামা ব্যাটারদের প্রত্যেকে স্যান্টনারের ঘূর্ণি ফাঁদে কুপকাত হয়েছে।
উইকেট শিকারের যাত্রাটা অবশ্য এদিন স্যান্টনার শুরু করেছেন আফিফ হোসেনকে দিয়ে। সেটাও বরং একেবারে সফট এক ডিসমিসাল। ডাউন দ্য ট্র্যাকে এসে খেলতে চেয়েছিলেন আফিফ। সেটা বুঝতে পেরে বেশ খানিকটা ফ্লাইট দেন স্যান্টনার। সাথে গতি কমিয়ে দেন তিনি। আফিফ ততক্ষণে বোকা বনে গেছেন। লেগ সাইডে ঠেলে দিতে চাইলেও সেই বল খুঁজে নেয় ইনসাইড এডজ।
আফিফের প্যাড হয়ে সেই বল খুঁজে নেয় টিম সাইফার্টের দস্তানা। এই দুই উইকেটই বরং স্যান্টনারের ধূর্ততার দারুণ পরিচয় দেয়। পাশাপাশি স্যান্টনার ঠিক কতটা দূর্বোধ্য সেটারও একটা বার্তা দেয়। গতির মিশেল, দারুণ লাইনলেন্থ সেই সাথে বৈচিত্র্য- এসব কিছু মিলেয়ে স্যান্টনারকে বোঝা বড় দায়।
তাছাড়া তার পক্ষে বাড়তি সহয়তা দেয় তার নিজের বোলিং অ্যাকশন। তার বোলিং অ্যাকশনে ক্ষুদ্র এক ‘পজ’ রয়েছে। যা তাকে সময় দেয় ব্যাটারের উদ্দেশ্য পড়ে ফেলার। সেই সুযোগেই তিনি ব্যাটারকে পরাস্ত করবার ফন্দি এঁটে ফেলেন। তেমনই এক দিনের অবতাড়না তিনি ঘটালেন মাউন্ট মঙ্গানুয়ের বে ওভালে।
আফিফ, হৃদয়ের পর শেখ মেহেদী হাসানকেও ফিরিয়েছেন স্যান্টনার। আবারও গতি কমিয়ে ব্যাটারকে প্রলোভন দেখান। আর সেই ফাঁদে পা দিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের নায়ক। শামীম হোসেন পাটোয়ারি হয়েছেন স্যান্টনারের চতুর্থ উইকেট। ব্যাটে বলে সংযোগ ঘটেনি ঠিকঠাক। শর্ট ফাইন লেগে দাঁড়িয়ে থাকা টিম সাউদির হাতে সহজ ক্যাচ।
স্যান্টনার বিন্দুমাত্র স্বস্তিতে থাকতে দেননি বাংলাদেশী ব্যাটারদের। ব্ল্যাকক্যাপস অধিনায়ক মোটে ১৬ রান দিয়েছেন নিজের কোটার চার ওভারে। ১১০ রানে বাংলাদেশকে আটকে ফেলার সিংহভাগ কৃতিত্ব তাই তিনি পেতেই পারেন। তাছাড়া বুদ্ধিমত্তা আর ধূর্ততার পরিচয়ে তৃতীয় দফা টি-টোয়েন্টিতে চার উইকেট শিকার করেছেন তিনি। দারুণ দিনের শেষে তাই ফাইফারের মৃদু আক্ষেপ থেকেই যাচ্ছে তাঁর।