গত জুলাইয়ে হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটে মাঠের বাইরে চলে যেতে হয়েছিল ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গাকে; খেলতে পারেননি এশিয়া কাপ, বিশ্বকাপের মত আসর। সেই ক্ষোভ হয়তো জমিয়ে রেখেছিলেন মনে; মাঠে ফিরেই তাই আগ্নেয়গিরির মত লার্ভা উদগীরণ করলেন তিনি, একাই ধসিয়ে দিয়েছেন জিম্বাবুয়ের ব্যাটিং লাইনআপ।
মাত্র ৫.৫ ওভার হাত ঘুরিয়ে সাত উইকেট শিকার করেছেন এই লেগ স্পিনার, বিনিময়ে খরচ করেছেন স্রেফ ১৯ রান। এই দুর্ধর্ষ বোলিংয়ের দিনে সিকান্দার রাজারা অলআউট হয়েছে ৯৬ রানেই, স্বাভাবিকভাবেই ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরষ্কার উঠেছে তাঁর হাতে।
বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে শুরুটা ভালোই হয়েছিল সফরকারীদের। বৃষ্টির আগে আট ওভারে কোন উইকেট না হারিয়ে ৪১ রান তুলেছিলেন দুই ওপেনার কাইতানো ও জয়লর্ড গামবি। কিন্তু নবম ওভারে হাসারাঙ্গা আক্রমণে আসতেই বদলে যায় চিত্রপট, ব্যক্তিগত প্রথম ওভারেই কাইতানোকে আউট করে ব্রেক থ্রু এনে দেন তিনি।
দ্বিতীয় ওভারে আরো বিধ্বংসী হয়ে উঠেন, তুলে নেন গামবি আর ক্রেইগ আরভিনের উইকেট। ধারাবাহিকতা ধরে রেখে মিল্টন সুম্বাকে এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলেন এই ডানহাতি। ৪৮ রানে চার উইকেট হারিয়ে তখন দিশেহারা অবস্থা জিম্বাবুয়ের, কিন্তু তাণ্ডব থামেনি একটুও।
শেষপর্যন্ত সাত উইকেট নিয়েই থামেন এই তারকা। পুরো ইনিংসে তাঁকে খেলা তো দূরে থাক, তার বল বুঝতেই পারেনি জিম্বাবুয়ের ব্যাটাররা। বিশেষ করে কুইক গুগলির বিপক্ষে কোন জবাব জানা ছিল না তাঁদের।
এমন অসাধারণ পারফরম্যান্সে একাধিক রেকর্ডও গড়েছেন ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে এর আগে কোন বোলারই এক ইনিংসে সাত উইকেট নিতে পারেননি। এমনকি শ্রীলঙ্কার ওয়ানডে ইতিহাসে এর চেয়ে ভাল বোলিং ফিগার কেবল একজনের, তিনি চামিন্দা ভাস। এই কিংবদন্তি পেসার ১৯ রানে আট উইকেট পেয়েছিলেন।
অথচ কিছুদিন আগেও হাসারাঙ্গাকে ঘিরে হয়েছে সমালোচনা। শরীরের ওজন বেড়ে যাওয়াই যার মূল কারণ। তবে সেসবকে পাশ কাটিয়ে নিজের সামর্থ্যের প্রমাণই রাখলেন। সবকিছু মিলিয়ে মনে রাখার মতই প্রত্যাবর্তন হয়েছে এই বোলারের। এখন শুধুই ধারাবাহিকতা ধরে রেখে সামনে এগিয়ে যাওয়ার পালা, সাদা বলে তাঁর পারফরম্যান্স শ্রীলঙ্কার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ; বিশেষ করে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে লঙ্কানরা নিশ্চয়ই তাকিয়ে থাকবে হাসারাঙ্গার দিকে।