আগামী বিপিএল খেলবে না কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস!

বিপিএলের ছয় আসরে খেলে চারবারই চ্যাম্পিয়ন। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের চোখ এবার পেন্টাজয়ের দিকে। তবে বিপিএলের ইতিহাসের সফলতম দলটিই নাকি আগামী আসরে অংশ নিবে না! এমনটিই জানিয়েছেন দলটির কর্ণধার নাফিসা কামাল। তাঁর দাবি, বিপিএলের রাজস্ব আয়ের ভাগ দিতে হবে ফ্র্যাঞ্চাইজিদের। নয়তো আগামী আসরে অংশ নেবে না তাঁর দল।

আইপিএল, পিএসএলের মতো বিপিএলে নেই রাজস্ব বণ্টনের কাঠামো। তাই তো দীর্ঘমেয়াদে কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজিকে দেখা যায়। ২০১৫ সালে প্রথম অংশ নেওয়া কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসই এবারের আসরে সবচেয়ে পুরোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি। মূলত বিপিএলে অংশ নেওয়া দলগুলো বিসিবির আয়ের ভাগ পায় না। শুধুই স্পন্সর-নির্ভর হয়ে দলগুলোকে চলতে হয়। আর এ কারণেই বিপিএলের প্রতি আসরেই দল চালাতে রীতিমত হিমশিম খেতে হয় ফ্র্যাঞ্চাইজিদের।

২০১৯ সালে সর্বপ্রথম বিসিবিকে রেভিনিউ শেয়ারের প্রস্তাব দিয়েছিল ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো। তবে সে দাবির কোনো বাস্তবায়ন হয়। এবার তাই পুরনো দাবিই করে রীতিমত হুমকি দিলেন নাফিসা কামাল। গণমাধ্যমের সামনে মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, ‘এভাবে চলতে থাকলে আমরা আগামী বার অংশ নিব না। বিসিবি মিডিয়া রাইটস, টিকিট রাইটস, গ্রাউন্ড রাইটস-সব পায়। তবে সেটির রেভিনিউ শেয়ারে নারাজ। এভাবে হলে আমার মনে হয় না আমার পক্ষে দল করা সম্ভব হবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘এ বছর একটা মিটিং করতে চেয়েছিলাম বিসিবির সঙ্গে। গত বছর চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরও প্রেস কনফারেন্সে আমি এটাই অনুরোধ করেছিলাম। মিটিং হলে রংপুরের মালিকপক্ষও বসবে। অন্যান্য দলগুলোও বসবে। সবাইকে সমান সম্মান দেওয়া উচিত। তারা সবাই কমবেশি বিনিয়োগ করছে। সবাইকে সম্মান দেওয়া উচিত।’

বিপিএল থেকে বিসিবির আয়ের সবচেয়ে বড় খাত সম্প্রচার স্বত্ব। গত বছর বিপিএলের নবম, দশম ও একাদশ আসরের সম্প্রচার স্বত্ব বিক্রি হয়েছে ১০৫ কোটি টাকায়। টুর্নামেন্ট থেকে আয়ের আরেকটি বড় খাত ফ্র্যাঞ্চাইজি ফি। প্রতি মৌসুমের জন্য প্রতিটি ফ্র্যাঞ্চাইজি বিসিবিকে দেয় দেড় কোটি টাকা। প্রতি মৌসুমে শুধু ফ্র্যাঞ্চাইজি ফি বাবদ বিসিবির আয় সাড়ে ১০ কোটি টাকা। তিন আসরের জন্য বিপিএলের টাইটেলসহ স্পনসরশিপ বিক্রি হয়েছে ১৬ কোটি টাকা। এ ছাড়া গ্রাউন্ড ফি তো আছেই। কিন্তু কোনো আয়ই বিসিবি দলগুলোর সাথে শেয়ার করে না।

তবে নাফিসার দাবি, অন্যান্য ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ গুলোর আয়ের চিত্র সবার জন্য উন্মুক্ত থাকলেও বিপিএলে তা হয় না। তাঁর চাওয়া বিসিবি অন্তত এটা শুরু করুক। এ  নিয়ে তিনি বলেন, ‘তাঁরা যেটা ভালো মনে করে দিবে, সেটাই নিতে রাজি আছি। যদি আমাদের একদম কমটাও দেয়, তবু মডেলটা অন্তত তৈরি করুক। কাঠামোটা তৈরি করুক। প্রথম পদক্ষেপটা নিক। অন্যান্য দেশের লিগে এটা স্বাভাবিক ঘটনা।’

নাফিসা কামাল অবশ্য অযৌক্তিক কিছু বলেননি। আইপিএলের একটি দল দেড়শ কোটি রুপির ওপর রাজস্ব ভাগ পায়। পিএসএলের দলগুলোর জন্যও অঙ্কটা বেশ বড়। কিন্তু গলদটা শুধু বিপিএলেই। আর সে কারণেই এ আসরের আগমনী বার্তায় কোনো জৌলুশ আসে না। আসে শুধু অনিশ্চয়তা আর আক্ষেপের সুর।

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link