প্রশান্তি নয়, টাকার জন্যই যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছেন মেসি!

মেসি আমেরিকান ফুটবল পাল্টে দিবেন। এমনটাই প্রত্যাশা ছিল সবার। আর্জেন্টাইন এ মহাতারকা সেই প্রত্যাশা মিটিয়েছেনও বটে। লিওনেল মেসিকে পেয়ে ইন্টার মায়ামির খেলায় যেমন বৈপ্লবিক উন্নতি হয়েছে। একই সাথে যুক্তরাষ্ট্রের ফুটবলও আমূলে বদলে গেছে। দেশটিতে ফুটবলের বাজারও ব্যাপক প্রসারিত হয়েছে। তবে ক্যারিয়ারের শেষ সময়ে মেসির আগমনে আসলেও কি যুক্তরাষ্ট্রের ফুটবলে এই পরিবর্তন দীর্ঘমেয়াদে রূপ নেবে? প্রশ্নটা সেখানেই।

মেজর সকার লিগের দল চার্লোট এফসির কোচ ক্রিশ্চিয়ান ফাকস মনে করেন, এমএলএস এখন উঠতি লিগের পর্যায়ে আছে। এখন ক্যারিয়ারের শেষ পর্যায়ে থাকা বড় তারকাদের না ভিড়িয়ে প্রতিভাবান ফুটবলারের পিছনে বিনিয়োগ করা উচিৎ। আর মেসি দুর্দান্ত খেলোয়াড় কোনো সন্দেহ নেই। তবে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে শুধুই ফুটবলটা উপভোগ করতে আসেননি, বড় অঙ্কের আর্থিক প্রাপ্তিও এর ভিতরে কাজ করেছে।

শেষ মৌসুমে মেসির ইন্টার মায়ামিকে হারিয়েই প্লে-অফে জায়গা পাওয়ার দৌড়ে এগিয়ে গিয়েছিল চার্লোট এফসি। তবে অস্ট্রিয়ান এ কোচের তৃপ্ততা মেসির দলকে হারিয়ে নয়, তাঁর কাছে ভালো লাগার বিষয়টা ছিল, ওই ম্যাচ জিতে প্লে-অফের দৌড়ে এগিয়ে যাওয়ার ব্যাপারটা। এ নিয়ে তিনি বলেন, ‘দেখুন । মেসি প্রতিপক্ষ। তাঁকে হারানো আমার কোনো বড় কোনো অর্জন না। আমার দল সেই ম্যাচ জিতে প্লে-অফে উঠেছে। এটাই ছিল আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার।’

এরপর এমএলএস নিয়ে এ কোচ বলেন, ‘যে কোনো লিগের উন্নতি হয় তরুণ, প্রতিভাবান ফুটবলারদের দিয়ে। ক্যারিয়ারের শেষ পর্যায়ে থাকা ফুটবলারকে এখন অনেক দলই ভেড়াচ্ছে। ইন্টার মায়ামি যেমন মেসির পর আলবা, বুস্কেটসকে নিয়েছে। এরপর এবার সুয়ারেজকে টানলো। কিন্তু এই ট্রান্সফার গুলোতে এই লিগের কোনো ভবিষ্যৎ ঠিক হয় না। কারণ এরা কেউই দীর্ঘমেয়াদে থাকবে না। এ জন্য বড় তারকাদের পিছনে না ছুটে লিগের মান কীভাবে উন্নত করা যায় সেটা ভাবা উচিৎ।’

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগকে উদাহরণ টেনে তিনি আরো বলেন, ‘ইপিএল কি শুধু ২/৩ টা ফুটবলারের জন্য জনপ্রিয়? মোটেই না। সেখানে কোয়ালিটি প্লেয়ার রয়েছে প্রচুর। শুধু ২/১ জনের জন্য ওই লিগের প্রতি সবার আগ্রহ থাকে না। এ কারণে হাতে গোনা কয়েক বড় তারকাকে আনলেই যে লিগ আমূলে বদলে যাবে এটা ভাবা ভুল।’

অবশ্য ইন্টার মায়ামির ইতিহাস এক রকম বদলেই দিয়েছেন লিওনেল মেসি। অভিষেক মৌসুমে এসে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ১৪ ম্যাচে করেছিলেন ১১ গোল, সতীর্থদের দিয়ে করিয়েছিলেন ৫টি। তাঁর হাত ধরেই লিগস কাপে চ্যাম্পিয়ন হয় ইন্টার মায়ামি। যা দলটির ইতিহাসের প্রথম শিরোপা। লিগ কাপ জিতলেও অবশ্য এমএলএসে সেভাবে সুবিধা করতে পারেনি মায়ামি। মেসিও পুরো মৌসুম পাননি। এবার শুরু থেকেই খেলবেন। নিশ্চয়ই এমএলএস জয়ের দিকেও ছুটবেন তিনি।

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link