সাদা বলের ক্রিকেটে ভারতের মিডল অর্ডারের মধ্যমণি তিনি। ঘরের মাটিতে হওয়া ওয়ানডে বিশ্বকাপেও ছিলেন দারুণ ছন্দে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ফাইনালে পেয়েছিলেন ফিফটি। কিন্তু ফরম্যাট বদলে যখন মঞ্চটা টেস্টে ক্রিকেটের হয়ে ওঠে, তখনই অচেনা এক ‘লোকেশ রাহুল’কে আবিষ্কার করে ভারত।
২০২২ এর শেষ দিক থেকেই এই ফরম্যাটে ম্লান লোকেশের ব্যাট। ২০২৩-এও সেই চিত্র একটুও পাল্টায়নি। বরং একাদশ থেকেই বাদ পড়েছিলেন তিনি। তবে ফিরলেন বছরের শেষ দিকে, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সেঞ্চুরিয়নে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে। লোকেশ রাহুলের সেই ফেরাটা যেন ফ্লুক ছিল তার প্রমাণ এবার মিল ঘরের মাটিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টেও। কোহলির অবর্তমানে ৪ নম্বরের ভরসা হয়ে উঠলেন তিনিই। খেললেন ৮৬ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস।
আগেই জানা গিয়েছিল, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এই সিরিজের প্রথম ২ ম্যাচে থাকবেন না কোহলি। ভারতের টিম ম্যানেজমেন্টের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াল তখন, ৪ নম্বরে কে ব্যাট করবেন— এই দ্বিধান্বিত প্রশ্নে। আগের সিরিজে উইকেটরক্ষক ব্যাটার হিসেবে খেলা লোকেশের উপরেই অবশেষে আস্থা টিম ম্যানেজমেন্টের। একদম পুরেদস্তুর ব্যাটার হিসেবেই মাঠে নামলেন এ ব্যাটার।
আর তাতে প্রথম পরীক্ষাতেই উতরে গেলেন তিনি। ফিফটি পেরিয়ে ছুটলেন শতকের পথে। শেষ পর্যন্ত সেই শতক অবশ্য ছোঁয়া হয়নি। তবে ঠিকই ভারতের চালকের আসনে আসীত করার নেপথ্যে ছিলেন এ ব্যাটার। তাঁর দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়েই হায়দ্রাবাদ টেস্ট জয়ের পথে দাঁড়িয়ে ভারত।
রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামের দ্বিতীয় দিনের সকালে শতকের সম্ভাবনা নিয়ে নেমেছিলেন যশস্বী জয়সওয়াল। তবে দারুণ আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ৮০ রানেই থেমে যান তিনি। তবে তাতে দলের ক্ষতি হয়নি। দিনের মধ্যভাগ একাই সামলেছেন লোকেশ রাহুল।
চারে নামা রাহুল চতুর্থ উইকেটে প্রথমপ শ্রেয়াস আইয়ারের সঙ্গে ৬২ আর পঞ্চম উইকেটে জাদেজার সঙ্গে গড়েন ৫৫ রানের জুটি গড়েন এ ব্যাটার। ৭২ বলে ১৪তম অর্ধশতক পূর্ণ করা রাহুল এগিয়েছিলেন শতকরের দিকেই। তবে অভিষিক্ত টম হার্টলির বলে রেহানের তালুবন্দী হন তিনি। আর তাতেই শতকের আক্ষেপ সঙ্গী হয় রাহুলের।
লোকেশের ব্যাটে সেঞ্চুরি আসেনি। তবে লাল বলেট ক্রিকেটে এমন রঙিন রাহুলকেই তো চেয়েছিল টিম ইন্ডিয়া। তার উপর বিরাট কোহলির অনুপস্থিতিতি যেভাবে শুরুর আগেই ধাক্কা খেয়েছিল ভারত, তার একটুও অভাব বুঝতে দেননি এ ব্যাটার। উইকেটরক্ষকের আলাদা চাপ থেকে বেরিয়ে এসেই নিজের সেরাটা দেখালেন তিনি। ওয়ানডের পর তাই টেস্টে ভারতের মিডল অর্ডারের প্রাণ হওয়ার পথে লোকেশ রাহুল। বলাই বাহুল্য, তিনিই এখন ভারতের নতুন ক্রাইসিস ম্যান।