শরিফুল, দেশ জুড়ে সুবাসিত ফুল

সামিত প্যাটেল নিজেকে খানিকটা দুর্ভাগাই ভাবতে পারেন। আম্পায়ারের ইশারায় তাকে ফিরতেই হয়েছে প্যাভিলিয়নে। তবে শরিফুল ইসলামের দুর্দান্ত বোলিং অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে। এবারের বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে তিনি যা করে যাচ্ছেন, তা নিশ্চিতরূপেই  ভাবনার উদ্রেক ঘটায়।

ক্যারিয়ারের একেবারে চূড়ায় রয়েছেন শরিফুল সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। বাংলাদেশের বহুল আকাঙ্ক্ষিত পেস বোলিং আক্রমণের অন্যতম সেনানী তিনি। জাতীয় দলের তিন ফরম্যাটেই নিয়মিত মুখ। তিনি চাইলেই তাতে সন্তুষ্ট হতে পারতেন। তবে হননি কিংবা তাকে দেওয়া হয়নি।

পেসারদের পাইপলাইনে রয়েছে বেশ কিছু পেসার। একটু পা হড়কে গেলেই ছিটকে যেতে হবে বহুদূরে। শরিফুল সে বিষয়টা উপলব্ধি করতে পেরেছেন নিশ্চয়ই। তাইতো নিজের ঝুলিতে থাকা অস্ত্রকে আরও খানিকটা শাণিত করছেন। পাশাপাশি নতুন সব অস্ত্রও যুক্ত করবার চেষ্টা করছেন।

সে চেষ্টার বাস্তবায়নের মঞ্চ হিসেবে বেছে নিয়েছেন বিপিএলের দশম আসর। এখন অবধি সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি বোলার শরিফুল ইসলাম। ৭ ম্যাচে তার ঝুলিতে আছে ১৩ খানা উইকেট। বাংলাদেশের উইকেটে একজন পেসার উইকেট শিকার করছেন বলে-কয়ে। সেটাও নিজের মেধার জোরেই।

তার প্রধান অস্ত্র ইনসুইংকে আরও খানিকটা তীক্ষ্ণ হয়েছে। সেই সাথে বাতাসেও বলকে হেলদোল করানোর দক্ষতা অর্জন করে নিয়েছেন শরিফুল। তাতেই কুপোকাত করছেন প্রতিপক্ষ ব্যাটারদের। তেমনই আরেকটি দিন অতিবাহিত করলেন তিনি সিলেট স্ট্রাইকার্সের বিপক্ষে। এদিন স্বল্প রানের পুঁজি রক্ষার দায়িত্ব ছিল দুর্দান্ত ঢাকার বোলারদের উপর।

সেই দায়িত্ব পালনের জন্য সচেষ্ট শরিফুল। সে প্রমাণ তিনি রেখেছেন বোলিং ইনিংসের প্রথম ওভারেই। সামিত প্যাটেলকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে নিজের উইকেট শিকারের যাত্রা শুরু করেন। সিলেটের টপ অর্ডারকে আঘাত করেন তিনি বেশ জোরালভাবেই।

তাতে করে সামিতের পর হ্যারি টেক্টর ও জাকির হাসানকে নিজের উইকেটে পরিণত করেন। এই দুইজনকেই উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন শরিফুল। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের এবারের যাত্রায় এই কাজটা নিয়ম করেই করে যাচ্ছেন শরিফুল ইসলাম। প্রতিনিয়ত যেন তিনি প্রমাণ করছেন এই মুহূর্তে তিনিই সেরা।

তিনি সেরা বটেই। গেল বছরে তিন ফরম্যাট মিলিয়ে তিনি ছিলেন বাংলাদেশের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি বোলার। লাল ও সাদা বল মিলিয়ে মোট ৫২ উইকেট তিনি শিকার করেছেন স্রেফ একটি বছরে। ৩২ ইনিংসে তিনি বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।

সে ধারাবাহিকতায় জাতীয় দলে তিনি হতেই পারতেন ‘অটোচয়েজ’। সম্ভবত তিনি তাই। তবুও শরিফুল স্বল্পতেই সন্তুষ্টি খুঁজে নিচ্ছেন না। তিনি প্রতিনিয়ত নতুন নতুন চ্যালেঞ্জের দিকে ছুড়ে দিচ্ছেন। নিত্যনতুন বিষয় রপ্ত করতেও কার্পণ্য করছেন না তিনি। এখন একটু রানের চাকা আটকে রাখাটা শেখা প্রয়োজন। সেটাও অবশ্য খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়। একজন উইকেট শিকারি বোলার টুকটাক রান তো খরচা করবেনই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link