এলেন, দেখলেন, জয় করলেন – মঈন আলীর গল্পটা এমনই। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) চলতি আসরে নিজের প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমেই বাজিমাত করলেন তিনি, ব্যাটে-বলে অলরাউন্ডিং পারফরম্যান্স করে দলকে এনে দিলেন বড় জয়। এদিন ঝড়ো গতিতে হাফসেঞ্চুরি করার পাশাপাশি ঝুলিতে পুরেছেন চার চারটি উইকেট; একই সাথে পেয়েছেন হ্যাটট্রিকের স্বাদ।
এই ইংলিশ তারকা যখন ব্যাটিংয়ে আসেন তখন কিছুটা ব্যাকফুটে ছিল কুমিল্লা, স্বল্প রানের ব্যবধানে তিন উইকেট হারিয়েছিল তাঁরা। কিন্তু চাপকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেন তিনি, তৃতীয় বলে দারুণ স্টাইলে চার মেরে খোলেন রানের খাতা। এরপর তাঁকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি, টর্নেডোর মত তান্ডব চালিয়েছেন কেবল।
একপ্রান্তে উইল জ্যাকস অতিমানবীয় ব্যাটিং করায় তাঁর কাছে সুযোগ এসেছিল কম, তবু যতটুকু সুযোগ পেয়েছেন সেটা সর্বোচ্চ কাজে লাগিয়েছেন তিনি। মাত্র ২৩ বলে পূর্ণ করেছেন হাফসেঞ্চুরি, শেষপর্যন্ত ২৪ বলে ৫৩ রানে অপরাজিত ছিলেন এই বাঁ-হাতি। এই ইনিংস খেলার পথে দুইটি চারের বিপরীতে পাঁচটি ছক্কা হাঁকিয়েছেন তিনি।
দুইশতের বেশি স্ট্রাইক রেটে ফিফটি করেও লাইমলাইটে আসা হয়নি, তরুণ জ্যাকসের সেঞ্চুরির কারণে আড়ালে পড়ে গিয়েছে অনবদ্য ব্যাটিং। হয়তো এই ব্যাপারটা পছন্দ হয়নি তাঁর, সেজন্যই বল হাতে পুনরায় বাইশ গজে ত্রাস ছড়িয়েছেন এই অফ স্পিনার।
প্রথম ওভারেই তাঁকে আক্রমণে এনেছিলেন অধিনায়ক লিটন দাস, কেবল চার রান দিয়ে সেই ওভার শেষ করেন তিনি। পরের ওভারে একটা ছয় হজম করা সত্ত্বেও নয় রানের বেশি খরচ করেননি। যদি তাঁর বিধ্বংসী রূপ দেখা গিয়েছে ব্যক্তিগত তৃতীয় ওভারে; ভয়ানক হয়ে উঠা সৈকত আলীকে আউট করে পরাজয়ের শেষ শঙ্কা দূর করেছিলেন।
নিজের শেষ ওভারে বল করতে এসে এই তারকা পরপর তিন বলে আউট করে বসেন শহিদুল ইসলাম, আল আমিন হোসেন আর বিলাল খানকে। তাতেই দ্বিতীয় বোলার হিসেবে এই বিপিএলে হ্যাটট্রিক করার কীর্তি গড়েন তিনি; সবমিলিয়ে চট্টগ্রামের বিপক্ষে ২৩ রান খরচায় চার উইকেট গিয়েছে তাঁর ঝুলিতে।
ব্যাট হাতে উইল জ্যাকস এমন অতিমানব হয়ে না উঠলে নিঃসন্দেহে ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরষ্কার পেতেন মঈন আলী। তবে পুরষ্কার না পেলেও যা করেছেন সেটা ম্যাচসেরার চেয়ে কম নয় কোন অংশে, কেন তাঁকে এতটা সমাদর করে ভিক্টোরিয়ান্স পরিবার সেটাই হয়তো আরেকবার মনে করিয়ে দিলেন তিনি।