সিলেট স্ট্রাইকার্স থেকে তাওহীদ হৃদয়কে নিজেদের ডেরায় নিয়ে এসেছিল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। কিন্তু টুর্নামেন্টের প্রথমদিকে তেমন ভাল করতে পারেননি তিনি, নিন্দুকের বাঁকা মন্তব্য ভেসে আসতে শুরু করেছিল। তবে সময় গড়াতেই সব শঙ্কা উড়িয়ে দিয়েছেন হৃদয়, সবশেষ কোয়ালিফায়ারের ম্যাচে রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে খেলেছেন ম্যাচ জেতানো ইনিংস।
এদিন ৪৩ বলে ৬৪ রান করেছেন তিনি, পাঁচটি আর চারটি ছয়ে সাজানো এই ইনিংসে তাঁর স্ট্রাইক রেট ছিল প্রায় ১৫০ ছুঁই ছুঁই। ১৮৬ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করার জন্য দলের যেই ভিত দরকার ছিল সেটাই গড়ে দিয়েছেন এই ডানহাতি।
তিনি যখন ক্রিজে আসেন তখন কেবল এক বল সম্পন্ন হয়েছে। বড় লক্ষ্য, প্রথম বলেই ওপেনারের বিদায় – সবমিলিয়ে খানিকটা চাপে নিশ্চিতভাবেই থাকতে হয়েছে তাঁকে। তাই কিছুটা ধৈর্য দেখিয়েছেন শুরুর দিকে; কিন্তু পঞ্চম ওভারে হাসান মাহমুদ বোলিংয়ে আসতেই বদলে যায় তাঁর রূপ, সেই ওভারে একাই বাইশ রান আদায় করেন।
এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি এই তারকাকে। সাকিব আল হাসান, মোহাম্মদ নবীদের মত অভিজ্ঞ বোলারদের বিপক্ষে সাবলীল ব্যাটিং করেছেন, সেই সাথে অধিনায়ক লিটন দাসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রান করেছেন। মাত্র ৩১ বলেই হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি, খানিক পরে দলীয় সংগ্রহকে নিয়ে যান তিন অঙ্কের ঘরে।
তাঁর অনবদ্য ব্যাটিংয়ের কারণে ক্রমাগত সহজ হয়ে গিয়েছিল কুমিল্লার জয়ের সমীকরণ। শেষপর্যন্ত আবু হায়দার রনির ডেলিভারিতে ধরা পড়েন এই ব্যাটার, ততক্ষণে অবশ্য লিটনের সঙ্গে তাঁর জুটির কল্যাণে ১৪৩ রান জমা হয়েছিল বোর্ডে। এর ফলে সাকিব, সোহানদের হারানোর কাজটা সম্ভব হয় বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের পক্ষে।
সবমিলিয়ে চলতি বিপিএলের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক এখন তাওহীদ হৃদয়। ১৩ ম্যাচ খেলে চল্লিশের বেশি গড়ে ৪৪৭ রান করেছেন তিনি, আছে একটি সেঞ্চুরি এবং একাধিক ম্যাচজয়ী ইনিংস। যেই প্রত্যাশা নিয়ে ডিরেক্ট সাইনিংয়ে দলে নিয়েছিল তাঁকে, সেই প্রত্যাশা নিশ্চিতভাবেই পূরণ হয়েছে তা বলাই যায়।
দিন কয়েক পরেই ফাইনাল, শিরোপা নির্ধারণী মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচেও তাঁর ব্যাটের দিকে চেয়ে থাকবে ভিক্টোরিয়ান্সরা। হৃদয় নিজেও নিশ্চয় চাইবেন সিলেটের হয়ে আগের বারের ফাইনাল হারের যন্ত্রণা ভুলতে।