অবশেষে গুঞ্জনই সত্যি হল। আগেই জানা গিয়েছিল, রঞ্জি ট্রফিতে না খেলায় কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে বাদ পড়তে পারেন ঈশান কিষাণ ও শ্রেয়াস আইয়ার। হলোও তাই। বিসিসিআই-এর ঘোষিত কেন্দ্রীয় চুক্তির আওতাভূক্ত চারটি ক্যাটাগরিতে মোট ৩০ জনের সেই তালিকায় ঠাই হয়নি এ দুই ক্রিকেটারের। মূলত, ঘরোয়া ক্রিকেটে না খেলার অপরাধেই শাস্তি পেলেন কিষাণ ও আইয়ার।
এমন ঘটনার পর ভারতীয় ক্রিকেট পাড়ায় এরই মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। কেউ বোর্ডকে এমন কঠোর অবস্থানে অটল থাকায় সাধুবাদ জানাচ্ছে। আবার কেউ কেউ মনে করেছেন, লঘুপাপে গুরুদণ্ড পেয়েছেন এ দুই ক্রিকেটার। তবে এমন দু:সময়ে এ দুই ক্রিকেটারের পাশে দাঁড়িয়েছেন সাবেক কোচ রবি শাস্ত্রী। তাঁর মতে, দারুণ ভাবেই ফিরে আসবে আইয়ার ও ঈশান।
এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে একটি পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘ক্রিকেট মানেই গেম অব স্পিরিট। ক্রিকেটারদের আসল স্পিরিট বোঝা যায় দু:সময়েই। শ্রেয়াস আইয়ার আর ঈশান কিষাণ, আমি দু’জনকেই বলছি ,ভেঙে পড়ো না। বরং আরও বেশি পরিশ্রম করো। সকল প্রতিকূলতাকে ডিঙিয়ে দারুণ ভাবে ফিরে আসো। অতীতে যা করেছো, সেটা সবাই মনে রাখবে। আমি নিশ্চিত, তোমরা আবার রাজত্ব করবে।’
এবারের কেন্দ্রীয় চুক্তিতে পেসারদের আলাদা ভাবে জায়গা দেওয়া কারণে বিসিসিআইয়ের প্রতি নিজের সন্তুষ্টিও জানিয়েছেন শাস্ত্রী। তিনি বলেন, বোর্ডকে সাধুবাদ জানাই পেসারদের জন্য নতুন চুক্তি আনায়। মনে রাখতে হবে, চলতি বছরের শেষ দিকে অস্ট্রেলিয়া সফর রয়েছে। বোর্ড যে টেস্ট, ঘরোয়া ক্রিকেটে জোর দিচ্ছে, এটা আসলেই দারুণ ব্যাপার।’
শ্রেয়াস আইয়ার চলমান ভারত-ইংল্যান্ড সিরিজের প্রথম দুই টেস্টেও একাদশে ছিলেন। কিন্তু অফফর্মের কারণে পরের তিন টেস্টের দল থেকে তিনি বাদ পড়ে যান। সে সময় তাঁকে রঞ্জি ট্রফিতে খেলার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পিঠের চোটের কথা জানিয়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট টুর্নামেন্টটিতে মুম্বাইয়ের হয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে খেলেননি তিনি।
যদিও ন্যাশনাল ক্রিকেট একাডেমি থেকে বোর্ডকে জানানো হয়, আইয়ারের না খেলার মতো কোনো সমস্যা ছিল না। আর এর কিছু দিন বাদেই বিসিসিআই সচিব জানান, কেন্দ্রীয় চুক্তিতে থাকতে হলে ক্রিকেটারদের অবশ্যই ঘরোয়া ক্রিকেটকে প্রাধান্য দিতে হবে।
মূলত তখনই আভাস পাওয়া গিয়েছিল, কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে বাদ পড়তে পারেন আইয়ার। আইয়ারের মতোই রঞ্জি ট্রফিতে অংশ নেননি কিষাণও। অথচ রঞ্জি চলাকালীন সময়েই তাঁকে দুবাইয়ের বেশ কয়েকটি পার্টিতে দেখা গিয়েছে। মূলত এমন শৃঙ্খলাভঙ্গেরই কড়া মাশুল দিতে হলো এ উইকেটরক্ষক ব্যাটারকে।
বিসিসিআইয়ের ২০২৩ সালের চুক্তিতে ছিলেন ২৬ ক্রিকেটার। এবার সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০-এ। তবে শীর্ষ ক্যাটাগরিতে আগের মতো চারজনই রয়েছেন। বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা, জাসপ্রিত বুমরাহ ও রবীন্দ্র জাদেজা থাকছেন এই ক্যাটাগরিতে।
আগের বার বি ক্যাটাগরিতে থাকা মোহাম্মদ সিরাজ, লোকেশ রাহুল ও শুভমান গিলরা উঠে এসেছেন এ ক্যাটাগরিতে। আর প্রথমবারের মতো বিসিসিআই-এর চুক্তিতে এসেছেন যশস্বী জয়সওয়াল।