বিশ্বাসই শিরোপার সাথে মিলিয়েছে বরিশালকে

টুর্নামেন্টের শুরুর দিকে কটাক্ষই করেছেন অনেকে। টানা তিন হার যেন আরও খানিকটা উষ্কে দিয়েছিল নিন্দুকদের। তবে ঠিক যেভাবে করে নিন্দুকদের মুখ বন্ধ করতে হয়, তাই যেন করে দেখাল ফরচুন বরিশাল। কেউ ভরসা করেনি টুর্নামেন্টের শুরুর দিকে। তবে বরিশালের টিম ম্যানেজমেন্ট অবশ্য নিজেদের উপর রেখেছিল পূর্ণ আস্থা। বিশ্বাস করেছিল প্রতিটা খেলোয়াড়ের উপর।

শিরোপা জয়ের পর তেমনটিই জানিয়েছেন মিজানুর রহমান বাবুল। তিনি বলেন, ‘আমাদের কোন সংশয় ছিল না। আমাদের শুরু থেকেই পরিকল্পনা ছিল, আমাদের অভিজ্ঞ দল ছিল। অনেকে অন্যভাবে বলেছে। কিন্তু আমাদের বিশ্বাস ছিল আমরা চ্যাম্পিয়ন হব, অন্তত ফাইনাল খেলব। আমরা (সবাইকে) ভুল প্রমাণ করে তা করতে পেরেছি।’

ভুল প্রমাণ করতে পারার স্বস্তিটা চোখেমুখেই প্রকাশ পেয়েছে ফরচুন বরিশালের হেডকোচের। বরিশালের পরম আরাধ্য ট্রফিটা এখন শোভা পাচ্ছে সাউদার্ন আর্মিদের হাতে। যার নেপথ্যে ছিলেন তামিম ইকবাল খান। দলের হয়ে ব্যাট হাতে দূর্দান্ত পারফরম করেছেন অধিনায়ক। তাছাড়া গোটা দলকে এক সুতোয় গেঁথে রেখেছিলেন তিনি। তার প্রশংসায় যেন পঞ্চমুখ হেড কোচ।

তামিমকে দেশসেরা আখ্যায়িত করে বাবুল বলেন, ‘অবশ্যই তামিম দেশসেরা। এই বিপিএলের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। শুরু থেকে শেষ অবধি সে তার ধারাবাহিকতা রেখেছে ব্যাটিংয়ে। বাচ্চাদেরকে (জুনিয়র ক্রিকেটার) নিয়ে এবং বিদেশিদেরকে নিয়ে তার রুমে বসে দলকে উৎফুল্ল রাখা- তাতে তামিম অন্যতম সেরা। আমি তাকে কৃতীত্ব দেবো। সে এটা খুব ভালভাবে পালন করে, করেছে এবং করছে।’

তামিম অবশ্য শুরু থেকেই নিজের দায়িত্বটা ভালভাবে পালন করে যাচ্ছিলেন। তবুও শুরুর চার ম্যাচের মধ্যে টানা তিন পরাজয়ের স্বাদ গ্রহণ করতে হয়েছিল ফরচুন বরিশালকে। কোথাও একটা যেন দলের মেলবন্ধনটা হচ্ছিল না ঠিকঠাক। সেই মিসিং লিঙ্কের সমাধান হয়েই হাজির হয়েছিলেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন আর কাইল মায়ার্স। তাদের সংযুক্তিতেই বদলে যেতে শুরু করে সমস্ত দৃশ্যপট।

বাবুল বলেন, ‘প্রথম ম্যাচ আমরা জিতেছি, তারপর কিছুটা আমাদের ছন্দপতন হয়েছিল। কিছু বোলিংয়ের আমাদের ল্যাক ছিল। সাইফুদ্দিন এবং মায়ার্সের ইনক্লুশন হওয়ার পর আমাদের টিম ফুল্লি ব্যালেন্সড হয়ে গেছে। তখন আমরা নিজেরাই মোটিভেটেড হয়েছি এবং আমরা বিশ্বাস করছি যে আমরা কাপ নিতে পারব।’

বুড়োদের দল বলে সবাই ফরচুন বরিশালকে রেখেছিল গননার বাইরে। সেই বুড়োদের উপর ভর করেই বাকি দলগুলোকে পেছনে ফেলে শিরোপা উৎসব করেছে দলটি। ২০২২ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের এক রানের আক্ষেপ ঘুচিয়ে বুনো উল্লাস করেছে গোটা দল। তারুণ্য আর অভিজ্ঞতার মিশেলেই মিলেছে আরাধ্য শিরোপার স্পর্শ।

তাইতো বাবুল মনে করেন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটেও সমন্বয় হওয়া চাই তরুণ ও অভিজ্ঞদের, ‘তরুণরা কোথা থেকে শিখবে? যারা অভিজ্ঞ তাদের কাছ থেকেই তো শিখবে। দু’টোর (অভিজ্ঞতা ও তারুণ্য) সমন্বয়ে যে দল হবে সেটাই ভাল হবে। যখন দেখবেন টিম বিপদে পড়ে যায় তরুণরা সেটা ওভারকাম করতে পারে না। যারা অভিজ্ঞ তারা সেটা ওভারকাম করে যায়। দু’টোর সমন্বয়ে টিম হলেই আমার মনে হয় সবচেয়ে ভাল হয়।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link