সৌম্য সরকার ছন্দে নেই, সৌম্য সরকার ফর্মে নেই – তবু রেকর্ড গড়তে ভোলেননি। ওয়ানডে ফরম্যাটে বাংলাদেশী ব্যাটারদের মধ্যে দ্রুততম ২০০০ রানের কীর্তি স্পর্শ করেছেন তিনি, দুই হাজারী ক্লাবে প্রবেশ করতে তাঁর লেগেছে মাত্র ৬৪ ইনিংস। এর আগে এই রেকর্ড ছিল লিটন দাস এবং শাহরিয়ার নাফিসের দখলে, দু’জনের এক ইনিংস বেশি লেগেছিল।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৬৮ রান করার মধ্য দিয়ে লিটন ও নাফিসকে সরিয়ে শীর্ষে উঠেছেন সৌম্য। পঞ্চাশ ওভারের সংস্করণে নিজের বারোতম হাফসেঞ্চুরি করার দিনে একশর বেশি স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করেছেন তিনি। সবমিলিয়ে তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে এগারোটি চার এবং একটি ছক্কা।
প্রথম ওভারেই লিটনের উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে গিয়েছিল টিম টাইগার্স। তবে প্রথম ম্যাচের মত চাপ বাড়তে দেননি এই বাঁ-হাতি, অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তকে সঙ্গে নিয়ে প্রাথমিক বিপর্যয় সামাল দেন। প্রথম দিকে কিছুটা সংগ্রাম করলেও সময়ের সাথে পাল্টা দিয়ে বোলারদের উপর আধিপত্য দেখাতে শুরু করেন তিনি।
কভার, এক্সট্রা কভার অঞ্চল দিয়ে দুর্দান্ত সব শট খেলতে দেখা যায় তাঁকে। ফর্মে থাকলে এই ওপেনার কতটা নান্দনিক হতে পারেন সেটাই জহুর আহমেদ স্টেডিয়ামে দেখিয়েছেন তিনি। অন্যপ্রান্তে শান্তও তাঁর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে রান করেছেন। দু’জনের ৭৫ রানের পার্টনারশিপে বড় রানের ভিত পেয়েছিল স্বাগতিকরা।
৪০ রান করে টাইগার দলপতি ফিরলেও অবিচল ছিলেন সৌম্য। ৫২ বলে ব্যক্তিগত পঞ্চাশ পূর্ণ করেন তিনি, এরপরেই আগ্রাসী হয়ে উঠার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। কিন্তু ৬৮ রান করে থামতে হয় তাঁকে, অবশ্য ভাগ্য কিছুটা সুপ্রসন্ন হলে সেসময় আউট হতে হতো না।
নিন্দুকের সমালোচনা আর নিজের অধারাবাহিকতা সত্ত্বেও কোচ চান্দিকা হাতুরুসিংহে একের পর এক সুযোগ দিয়েছেন এই তারকাকে। মাঝে মাঝে ঝলক দেখালেও সত্যিকার অর্থে কোচের ভরসার প্রতিদান এখন পর্যন্ত দিতে পারেননি তিনি; তবে পুরনো রূপে ফিরে আসার আত্মবিশ্বাস আবারো ফেলেন, এবার অন্তত ধারাবাহিক হওয়া বড্ড দরকার।
ক্যারিয়ারের মাঝপথে পুরোপুরি হারিয়ে গিয়েছিলেন মিস্টার. ফিফটি নাইন। তবু লাল-সবুজ জার্সিতে সবচেয়ে কম ইনিংস খেলে ২০০০ রানের মালিক বনে গেলেন। ছন্দে থাকলে কতটা ভয়ানক হতে পারেন সেটার আভাস এখান থেকে পাওয়া যায়, তাই তো তাঁর রান মেশিন হয়ে উঠার আশায় রয়েছে পুরো বাংলাদেশ।