ক্রিকেটের খোঁজখবর রাখলে সন্দীপ শর্মাকে আপনি হয়তো চিনবেন, কিন্তু সন্দীপ ওয়ারিয়রের নামটা অপরিচিতই মনে হবে। অবশ্য আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মাত্র একটা টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলা আর সর্বসাকুল্যে আট ম্যাচের আইপিএল ক্যারিয়ার যে ক্রিকেটার তাঁকে চেনার কথাও নয় কারো। তবে ক্রিকেট জীবনের শেষভাগে এসে হঠাৎ করে নিজেকে চেনাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন তিনি।
আর সেজন্য মঞ্চ হিসেবে বেছে নিয়েছেন ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) চলতি আসর। আরো স্পষ্ট করে বললে, জ্বলে উঠার জন্য দিল্লি ক্যাপিটালসের বিপক্ষেই ম্যাচটাই বেছে নিয়েছেন এই বোলার। আইপিএলে এর আগে সবমিলিয়ে মাত্র চার উইকেট পেয়েছিলেন, অথচ দিল্লির বিপক্ষে এক ম্যাচেই শিকার করেছেন তিন উইকেট।
এদিন তিন ওভার হাত ঘুরিয়ে এই ডানহাতি দিয়েছেন মোটে ১৫ রান, বিনিময়ে ফিরিয়েছেন জেক ফ্রেসার ম্যাকগার্ক, পৃথ্বী শ এর মত ইনফর্ম ব্যাটারদের। বলতে গেলে, ঋষাভ পান্তদের টপ অর্ডার একা হাতেই ধ্বসিয়ে দিয়েছেন তিনি। তাঁর এমন পারফরম্যান্সের কল্যাণে গুজরাট টাইটান্সের আগে বোলিং করার সিদ্ধান্ত আশীর্বাদে রূপ নিয়েছিল।
অধিনায়ক শুভমান গিল নতুন বলে সুযোগ দিয়েছিলেন তাঁকে, সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে কোন ভুল হয়নি। নিজের প্রথম ওভারে অবশ্য ভাল করতে পারেননি এ পেসার, হজম করেছিলেন বারো রান। কিন্তু পরের ওভারেই চিত্র বদলে যায়, বিধ্বংসী ম্যাকগার্কের উইকেট তুলে নেন তিনি। দুই বল পরে তাঁর বাউন্সারে পরাস্ত হয়েই সাজঘরে ফেরেন আরেক ওপেনার পৃথ্বী।
ব্যক্তিগত তৃতীয় ওভারে আবার স্কোরবোর্ডে নাম লেখান সন্দীপ, এবার শিকার করেন শাই হোপকে। এই নিয়ে পাওয়ার প্লেতেই তিন উইকেট অর্জনের কীর্তি গড়েন তিনি, চলতি আসরে এমন কীর্তি রয়েছে কেবল ট্রেন্ট বোল্টের; এছাড়া গুজরাটের ইতিহাসে কেবল মোহাম্মদ শামি এমনটা করে দেখিয়েছিলেন।
বয়সটা ৩৩, ক্রিকেট থেকে প্রত্যাশা এখন কিছুই নেই এই বর্ষীয়ান ক্রিকেটারের। তবু খেলাটার প্রতি ভালবাসা থেকেই লড়াই করে যাচ্ছেন তিনি, সেরাটা উজাড় করে দিচ্ছেন তিনি। হয়তো দিল্লির বিপক্ষে পারফরম্যান্স তাঁকে আত্মবিশ্বাস দিবে শেষটা রঙিন করে রাখার – আপাতত তাঁর কাছে এটাই প্রত্যাশা।