লম্বা একটা সময় দলের অটো চয়েজ ছিলেন; এরপর ফর্ম হারিয়ে দল থেকে বাদ পড়েছেন – অন্য দেশ হলে আপনি যাই করার করতেন, তবে বাংলাদেশ হলে নির্ঘাত জড়িয়ে পড়তেন বিতর্কে। ইচ্ছেকৃত বা অনিচ্ছায় সংবাদমাধ্যমে ঝড় তুলতেন বাদ পড়া নিয়ে, কিন্তু মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ভুল প্রমাণ করেছেন সবাইকে। কি করা উচিত আর কি করা যায় না সেই প্রশ্নের উত্তর একদম হাতে কলমে বুঝিয়ে দিলেন।
২০২১ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তাঁর নেতৃত্বেই খেলেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু বছর ঘোরার আগেই আলোচনার বাইরে চলে যেতে হয় তাঁকে। অবশ্য অন্য কিছু নয়, ব্যাট হাতে ছন্দহীন আর শরীরী ভাষা নেতিবাচক হয়ে যাওয়ায় এই ডানহাতিকে পুরোপুরি বাদ দেয়া হয়েছিল জাতীয় দল থেকে!
কিন্তু না, অন্য অনেকের মত নিজের খ্যাতি ব্যবহার করে লাইমলাইটে টিকে থাকার চেষ্টা করেননি তিনি; বরং সরে গিয়েছিলেন মঞ্চের পিছনে। এরপর কাজ করেছেন দুর্বলতা নিয়ে, শক্তির জায়গা গুলো আরো শাণিত করেছেন। একজন তরুণ ক্রিকেটারের মতই ঘরোয়া ক্রিকেটে নিজেকে প্রমাণ করেছিলেন এই তারকা, ফলাফল – প্রত্যাবর্তনের রঙিন কেতন উড়িয়ে লাল-সবুজের জার্সিতে ফিরেছিলেন তিনি।
ওয়ানডে ফরম্যাট দিয়ে ২০২৩ সালের বিশ্বকাপের আগে ক্যারিয়ারে নতুন শুরু পেয়েছিলেন তিনি। সেই বিশ্বকাপে তাঁর ব্যাটই ছিল সবচেয়ে উজ্জ্বল, তাই তো ২০২৩ বিশ্বকাপে দেশের সেরা পারফরমারও বলা হয় তাঁকে। আর এখন দরজায় কড়া নাড়তে থাকা ২০২৪ বিশ্বকাপের আগে তাঁর উপর ক্রিকেটপ্রেমীদের ভরসা সর্বোচ্চ!
ওয়ানডে ক্যারিয়ার শেষ, টি-টোয়েন্টিতে তো অচল – গত বছরের এ সময়টাতেও রিয়াদকে নিয়ে এসব বলা হয়েছিল। কেবল খাদের কিনারায় পৌঁছে যাওয়া নয় বরং সমালোচনার তীব্র স্রোতে খাদেই পড়ে গিয়েছিলেন তিনি। তবে মি.ফিনিশার বুঝিয়ে দিয়েছেন জীবনের মাহাত্ম্য; পরিশ্রমীরা কখনো হারে না সেটিই আরো একবার প্রমাণ করে দিয়েছেন।
সত্যি বলতে, যাদের বাংলাদেশ ক্রিকেটের পাঁচ স্তম্ভ ভাবা হতো তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত বিদায় পেতে যাচ্ছিলেন সাইলেন্ট কিলার। অথচ স্রেফ জেদ আর আত্মবিশ্বাসে ভর করে পাশার দান উল্টে দিয়েছেন – তাই তো দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া যেকারো কাছেই তিনি এখন আদর্শ, যে কেউ এখন ‘রিয়াদ’ হতে চাইবেন।