হেনরিক ক্লাসেন, রূপকথার ট্র্যাজিক হিরো

কেবল ভাল খেলার সামর্থ্যই আপনাকে সেরাদের সেরা বানানোর জন্য যথেষ্ট নয়; সেরাদের সেরা কিংবা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হতে হলে প্রয়োজন নিজের ওপর বিশ্বাস, প্রয়োজন প্রতিপক্ষকে মুচড়ে দেয়ার সাহস। হেনরিক ক্লাসেনের মাঝে এসব কিছুই ছিল, তাই তো ফাইনালে একাই ভারতের হন্তারক হয়ে উঠতে পেরেছেন তিনি; কিন্তু শেষমেশ চোকার্স হয়েই রইতে হলো তাঁকে।

স্পিনের বিপক্ষে এই ব্যাটারের পরিসংখ্যান ভয় পাওয়ার মতই। তাই তো শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে তাঁর ওপর নজর ছিল সবার, কেননা মাঝের ওভারে স্পিনারদের ব্যবহার করবেই টিম ইন্ডিয়া। সেই অনুমান ঠিক হয়েছে, সম্ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দিয়েছেন তিনি। যদিও মূল লক্ষ্য অর্জিত হয়নি, বিশ্বকাপ ছুঁয়ে দেখা হয়নি তাঁর।

এদিন ২৭ বলে ৫২ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেছেন এই ডানহাতি। দুই চারের পাশাপাশি পাঁচ ছক্কায় এই ইনিংস সাজিয়েছেন তিনি। তাঁর এমন ব্যাটিংয়ের কল্যাণেই প্রোটিয়ারা চালকের আসনে বসতে পেরেছিল, কিছুক্ষণের জন্য হলেও।

উইকেটে এসে খানিক পরেই ছক্কা হাঁকিয়ে কাউন্টার অ্যাটাকিংয়ের সূচনা করেন ক্লাসেন। তারপর আর থামেননি তিনি, সব বোলারকেই উড়িয়ে মেরেছেন বাউন্ডারিতে। চোখের পলকে ভারতকে চাপে ফেলে দিয়েছিলেন। অক্ষর প্যাটেলের এক ওভার থেকেই ২২ রান আদায় করেন এই উইকেটরক্ষক।

সুপার এইট থেকেই কুলদীপ যাদব ধারাবাহিক পারফরম্যান্স করেছিলেন, গুরুত্বপূর্ণ ব্রেক থ্রু এনে দিয়েছিলেন। কিন্তু প্রোটিয়া হার্ডহিটারের সামনে তিনিও অসহায় আত্মসমর্পণ করেছেন; সবমিলিয়ে দুই স্পিনার আট ওভার বল করে ৮৪ রান খরচ করেছেন, যার পিছনে মূল কারণ ক্লাসেনের অতিমানবীয় ব্যাটিং।

এই তারকা পারফরম করেছেন দলকে জেতানোর জন্যই, কিন্তু চিরকাল চোক করে আসা দক্ষিণ আফ্রিকা পারেনি তাঁর গড়ে দেয়া ভিতের উপর দাঁড়িয়ে ইতিহাস গড়তে। তিনি আউট হওয়ার পরেই পথ হারিয়ে ফেলেছিল ডেভিড মিলাররা। তাই আরো একবার হৃদয় ভাঙার দুঃসহ যন্ত্রণা পেতে হলো প্রোটিয়াদের, তবে সেই কষ্ট নিশ্চয়ই ক্লাসেনই সবচেয়ে বেশি পাচ্ছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link