বিদায়ের ঘন্টা বাজছে। সাকিব আল হাসান কি তা শুনতে পাচ্ছেন? সম্ভবত পাচ্ছেন, কিংবা শুনেও না শোনার ভান করছেন। কিন্তু কতক্ষণ আর টিকে থাকার ব্যর্থ প্রচেষ্টা চালাবেন তিনি? সময়ের সাথে সব কিছু ক্ষয়ে যায়। অলরাউন্ডার সাকিবও ক্ষয়ে যাচ্ছেন। মাটিতে মিলিয়ে যাওয়ার আগে অন্তত তার ক্রিকেট খেলা থেকে সরে আসা উচিত।
চোখের সমস্যাটা গুরুতর। কার্যত কোন সমাধান বা চিকিৎসা নেই। বিরল এক রোগ। তা নিয়ে ব্যাটিংটা হচ্ছে না সাকিব আল হাসানের। তিনি যখন ব্যাটিংয়ের নামছেন, তা মঞ্চায়ন করছে এক ভীষণ দৃষ্টিকটু চিত্রের। কিসের জন্যে সাকিব চেষ্টা চালাচ্ছেন? স্রেফ আর্থিক স্বার্থই কি সব?
সেই সুদূর যুক্তরাষ্ট্রের বুকে তিনি খেলছেন ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেট। লস অ্যাঞ্জেলস নাইট রাইডার্সের হয়ে ব্যাট ও বল হাতে দারুণভাবে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন তিনি। অবশ্য এই ব্যর্থতা ধ্রুব হয়ে জুড়ে গেছে সাকিব আল হাসানের নামের সাথে।
ব্যাটিংটা তিনি করতে পারছেন না ঠিকঠাক। একটু শরীর ঘেষা বল আসলেই তাতে ইতস্তত হতে হয় তাকে। বহু চেষ্টা চালিয়ে সমাধান হচ্ছে না, বরং সমালোচনার রাজদুয়ার হচ্ছে উন্মোচিত। সেই সমস্যা নিয়ে সিয়াটেল অরকাসের বিপক্ষে খেলতে নেমে মোটে ৭ রান করেছেন। টি-টোয়েন্টি ম্যাচে তার সেই ৭ রানের জন্যে খরচ করতে হয়েছে ৭ বল।
এক বলে চার সহ তিনি এই রান করেছেন। অতএব ব্যাটিং করা তার জন্যে দুষ্কর হয়ে যাচ্ছে যত দিন যাচ্ছে। তবে সবচেয়ে ভয়ংকর বিষয় হচ্ছে- বল হাতেও কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলছেন তিনি। গেল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকে শুরু হয়েছে সে ধারা। সিয়াটেলের সাথেও সেই ধারাই থেকেছে অব্যাহত। ২ ওভারে ২৩ রান দিয়েছেন। প্রায় ১১.৫০ ইকোনমি রেট।
এই সাকিবকে আপনারা কেউ চেনেন? সম্ভবত চেনেন না। সেটাই বরং যথেষ্ট। পুরো ক্রিকেট বিশ্ব একটা সময় একা হাতে মাতিয়ে রাখা সাকিব, এখন স্রেফ একজন সাধারণ খেলোয়াড়। তবে আদোতে তার খেলোয়াড় সত্ত্বা এখনও বাকি আছে কি-না সে প্রশ্ন তোলাই যায়। মাঝে মধ্যে অবশ্য টুকটাক ভাল ইনিংস উপহার দিচ্ছেন তিনি। তবে সেসব দিয়ে তো সামগ্রিক চিত্র ঢেকে ফেলা সম্ভব নয়।
রুঢ় শোনালেও সত্য, সাকিবের অবসরের সময় হয়ে গেছে। তিনি হয়ত নানা কারণে সেই অবসরে যেতে চাইছেন না। কিংবা অনুপ্রেরণা নিচ্ছেন লিওনেল মেসির কাছ থেকে। ছাই থেকে উঠে হবেন সর্বেসর্বা। কিন্তু মেসিও কি কখনো এতটা শরীররে বিপরীতে গিয়েছিলেন। সম্ভবত না।