তিন তারকা খচিত জার্সিটা গায়ে চাপিয়ে টুর্নামেন্ট জেতার শখ ছিল লিওনেল মেসির। সেই সাথে অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়াও হয়ত চেয়েছিলেন বিশ্বজয়ের প্রাপ্তি নিয়ে হাতে তুলবেন নতুন শিরোপা। গোটা আর্জেন্টিনা দল হতাশ করেনি এই দুই কিংবদন্তিকে। ১২০ মিনিটের ঘাম ও রক্তক্ষয়ী লড়াই শেষে জয়ের হাসি হেসেছে আলবিসেলেস্তারা।
টুর্নামেন্টের দুই অপরাজিত দল মুখোমুখি ফাইনালে। বেশ কঠিন একটা পথ পাড়ি দিয়ে কলম্বিয়া পৌঁছেছে শিরোপার দ্বারপ্রান্তে, তাও আবার ২৩ বছর বাদে। অন্যদিকে, তুলনামূলক রাস্তাটা সহজ ছিল আর্জেন্টিনার জন্য। তবুও সমর্থকদের প্রত্যাশার চাপ মাথায় নিয়ে ফাইনালে আর্জেন্টিনা।
খেলা শুরু হতে দেরী হল প্রায় ১ ঘন্টা ১৫ মিনিট। কলম্বিয়ার সমর্থকরা হয়ত প্রত্যাশাই করতে পারেননি যে কলম্বিয়া উরুগুয়েকে পরাস্ত করে পৌঁছে যাবে ফাইনালে। তাইতো আর্জেন্টিনার সমর্থকদের দখলে ছিল অধিকাংশ টিকিট। অগ্যতা অসদুপায় বেছে নেন কলম্বিয়ান সমর্থকরা। ভিড়ের ব্যবহার করে টিকিট ছাড়াই মাঠে প্রবেশ করতে চাইলেন।
তাতে করে বাঁধে গণ্ডগোল। নিরাপত্তাকর্মীদের সেই গণ্ডগোল সামাল দিতে লেগে যায় অনেকটা সময়। তবুও শুরু হয় সেই কাঙ্ক্ষিত ফাইনাল। কিক অফের বাশি বাজার সাথে সাথে আর্জেন্টিনাকে চেপে ধরে কলম্বিয়া। হাই প্রেসে আর্জেন্টিনার দমবন্ধ করে ফেলার প্রচেষ্টা চালায় হামেস রদ্রিগেজের দল।
ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের কাছে রাখে লুইজ ডিয়াজরা। আর্জেন্টিনাকে একেবারে কোণঠাসা করে ফেলবার চেষ্টা চালিয়েছে কলম্বিয়া। সেই পরিকল্পনায় তাদের প্রধান অস্ত্র ছিল বল দখল ও ফাউল করা। প্রচণ্ড মারকুটে ভঙ্গিমায় খেলার কুখ্যাতি রয়েছে কলম্বিয়ার। আর্জেন্টিনাকে আটকে রাখতে এদিন ১৮ খানা ফাউল করে কলম্বিয়া।
যার একটি ফাউলে গোড়ালি মোচকে যায় লিওনেল মেসির। অগ্যতা ম্যাচ শেষ হওয়ার বহু আগেই মাঠ ছেড়ে উঠে যান মেসি। দলের জন্য কিছু করতে না পারার হতাশায় কাঁদতে কাঁদতে মাঠ ছাড়েন মেসি। তবুও ম্যাচের ভাগ্য কোনদিকেই গড়াল না। বরং ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।
অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধেও গোলের কোন দেখা নেই। সবাই ধরেই নিয়েছিল আরও একটি এমি মার্টিনেজ শো অপেক্ষমান। কিন্তু না, সবাইকে আনন্দের জোয়ারে ভাসিয়ে সব আলো নিজের করে নিলেন আরেক মার্টিনেজ, লাউতারো মার্টিনেজ।
ম্যাচের বয়স যখন ১১২ মিনিট, তখনই গোলের দেখা পেলেন আর্জেন্টাইন এই স্ট্রাইকার। তাতে করে ‘সুপার সাব’ হিসেবে এবারের কোপা জয়ের নায়ক তিনি। তার করা একমাত্র গোলেই জয়ের দেখা পেয়েছে অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়ার দল। কোপা আমেরিকার ১৬ তম শিরোপা নিজেদের করে নিয়েছে আলবিসেলেস্তারা। তাতে করে সর্বোচ্চ কোপা জয়ের মালিক এখন তিন বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।