গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে নিউজিল্যান্ড সফরে গিয়েছে বাংলদেশ। করোনা বিধির কারণে নিউজিল্যান্ডে পৌছার পর থেকেই নিজ কক্ষে আবদ্ধ ছিলেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। প্রথম তিন দিন হোটেলে বন্দি থাকার চতুর্থ দিন থেকে হাটার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে মুশফিক-তামিমদের।
হাটার সুযোগ পাওয়ার পর সতেজ হয়েছেন ক্রিকেটাররা। ৩০ মিনিট নিয়ম মেনে হাটা চলা ও বাইরের আবহাওয়াতে থাকার পর আবারো হোটেলে ফিরতে হয় সবাইকে। হোটেলে এভাবে বন্দি থাকতে জেলখানায় থাকার মতো অনুভূতি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ।
নিউজিল্যান্ড থেকে এক ভিডিও বার্তায় গনমাধ্যমকে মিরাজ বলেন, ‘দেখেন প্রথম তিনদিন তো রুমের ভেতরেই ছিলাম। তারপর আধাঘণ্টা করে বের হওয়ার সুযোগ পেয়েছি সবাই। আমি যখন প্রথম যেদিন বেরিয়েছিলাম, গতকালকে, শুরুর দিকে মাথা একটু ঘুরতেছিল। তারপর আস্তে আস্তে ১০-১৫ মিনিট পর ঠিক হয়ে গেছিল। আমি মনে করি যে, তিনদিন যে ঘরের ভেতর যে বন্দি ছিলাম, আমার নিজের কাছে মনে হয়েছে যে জেলখানায় আছি বা হতাশা আছে। এরকম একটু অনুভব হচ্ছিলো।’
তিনি আরও বলেন, ‘কিন্তু যখন বাইরে বেরিয়ে আসলাম, আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নিলাম, তখন একটু ভালো অনুভব হয়েছে। যখন রুমে গেছি, তখন নিজেকে একটু সতেজ মনে হয়েছে। আজকেও যখন আধঘণ্টার জন্য বের হতে পেরেছি। সারাদিন রুমে থাকতে তো আর ভালো লাগে না। দেখেন তিন-চারদিন রুমে কাটানো, একই ভাবে, এটা আসলে একটু আমাদের জন্য অস্বস্তিকর। এই যে ৩০ মিনিটের জন্য বাইরে আসতে দেয়, এটা ভালো লাগে যখন রুমে যাই।’
মাঠে নামার আগে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে সফরকারীদের। এর প্রথম ৭ দিন হোটেলে বন্দি থাকা লাগলেও পরের ৭ দিন অনুশীলন করার সুযোগ পাবেন ক্রিকেটাররা। মিরাজ জানিয়েছেন সেই সময় তাদের কাজটা অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে। আপাদত ভিডিও কলে কথা বলেই নিজেদের ভিতর যোগাযোগ রাখছেন তাঁরা।
এ প্রসঙ্গে মিরাজের ভাষ্য, ‘বুঝতেই পারছেন কি রকম কাটছে। এই প্রথম হোটেলের ভেতর এরকম পাঁচটা দিন কাটিয়েছি। প্রথম দিকে সময় কাটছিল না। কারও সঙ্গে দেখাই হয়নি। প্রথম তিনদিন তো কারও সাথে দেখা সাক্ষাৎ হয়নি। ফোনে-ফোনে কথা হয়েছে সবার সাথে, ভিডিও কলে কথা হয়েছে (হাসি) রুম টু রুম। প্রথমদিকে খারাপ লাগছিল, সময় কাটছিল না। এখন যেহেতু পাঁচদিন কেটে গেছে, আশা করি আরও তিনদিন কেটে যাবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘ছয়-সাতদিন পর যখন আমরা জিম এবং মাঠে যেতে পারব, তখন আমাদের ভালো লাগবে। এখন হয়তো সময়টা কাটছে না। জিমের সুবিধা বা আমরা যদি কিছু কাজ করতে পারতাম, তাহলে আমাদের জন্য সহজ হতো, সময়টা কেটে যেত, বডি ফিটনেস ভালো হতো। যেহেতু সুযোগ নেই, দুই-তিনদিন পর শুরু হবে… আশা করি তখন ইনশাআল্লাহ ভালো হবে।’
কোয়ারেন্টাইন শেষে কুইন্সটাউনে পাঁচ দিনের ট্রেনিং ক্যাম্প করবে বাংলাদেশ। ২০ মার্চ ডুনেডিনের ইউনিভার্সিটি ওভালে প্রথম ওয়ানডে দিয়ে শুরু হবে সিরিজ। ২৩ মার্চ সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে অনুষ্ঠিত হবে হ্যাগলি ওভাল, ক্রাইস্টচার্চে এবং ২৬ মার্চ শেষ ওয়ানডে অনুষ্ঠিত হবে বেসিন রিজার্ভ,ওয়েলিংটনে।
ওয়ানডে সিরিজ শেষে ২৮ মার্চ সেডন পার্ক, হ্যামিল্টনে অনুষ্ঠিত হবে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি। ৩০ মার্চ ম্যাকলিন পার্ক, নেপিয়ারে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি শেষে ইডেন পার্ক, অকল্যান্ডে ১ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে শেষ টি-টোয়েন্টি।