গাব্বার-কে আর দেখা যাবে না ক্রিকেট ময়দানে। শিখর ধাওয়ান বিদায় জানিয়েছেন সব ধরণের ক্রিকেটকে। বর্ণিল এক ক্যারিয়ারের সমাপ্তিরেখা টেনে দিলেন ভারতীয় এই ব্যাটার। উত্থান-পতনের ক্যারিয়ারকে আর বেশি দীর্ঘায়িত করতে চাইলেন না। এখন বোধ বেশ ক্লান্ত তিনি।
সেই ২০০৪ সালে আলোচনায় এসেছিলেন শিখর ধাওয়ান। তখন তিনি ছিলেন টগবগে তরুণ। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে তিন সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন গোটা ক্রিকেট বিশ্বকে। সেবার তিনি ৫০৫ রান করেছিলেন এক আসরে। সেই রেকর্ড বহুদিন ধরে থেকেছিল অক্ষত।
এরপর অবশ্য তাকে বেশ সংগ্রাম করতে হয়েছে। ভারতের ক্রিকেট ইতিহাসে তুখোড় সব ওপেনারদের ভীড়ে শিখর নিজের জায়গা তৈরি করতে গিয়ে কালক্ষেপণ হয়েছে অনেকটা। ছয় বছর ধরে নিজেকে তিলে তিলে গড়ে তোলেন তিনি। ঘরোয়া ক্রিকেটে ধারাবাহিকভাবে দারুণ পারফরমেন্সের পুরষ্কার তিনি পেয়েছিলেন ২০১০ সালে।
প্রথমবারের মত ভারতের ওয়ানডে দলে সুযোগ পেয়েছিলেন শিখর ধাওয়ান। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অভিষেক ম্যাচটা তিনি নিশ্চয়ই ভুলে যেতে চাইবেন। কেননা সেদিন যে তিনি ফিরেছিলেন শূন্যহাতে। তবে বছর খানেক বাদে ওয়ানডে ক্রিকেটে তার প্রত্যাবর্তন ঘটে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৫১ রানের একটি ইনিংস খেলে নিজের সামর্থ্যের জানান দিয়েছিলেন শিখর ধাওয়ান।
এরপর তো ওয়ানডেতে ১৭ খানা সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন বা-হাতি এই ব্যাটার। ২০১১ সালে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। তারও বছর দুই বাদে বনেদী সাদা পোশাক গায়ে জড়ানোর সুযোগ আসে তার। লাল বলের ক্রিকেটেও ৭টি সেঞ্চুরি রয়েছে তার নামের পাশে। তিনটি সেঞ্চুরি প্রায় ডাবল সেঞ্চুরির কাছাকাছি গিয়ে থমকে গিয়েছে।
তেমনি করেই ২০২২ সালের পর থমকে গিয়েছিল শিখর ধাওয়ানের ক্যারিয়ার। ভারত দলে তরুণদের আধিপত্য তার ফেরার রাস্তাকে করেছে সংকীর্ণ। তাছাড়া পারিবাহিক ঝঞ্ঝাট তাকে বিধ্বস্ত করেছে ভীষণভাবে। তাইতো তিনি আর জোর করে ক্রিকেটকে আকড়ে ধরে রাখতে চাইলেন না। নিজের প্রথম প্রেমের সাথে বিচ্ছেদ ঘটিয়ে ফেললেন শিখর ধাওয়ান।
তাছাড়া বয়সটাও তো কম হয়নি। ৩৮ বছর বয়সে এসে নতুন করে শুরু করার মত এনার্জি হয়ত বাকি নেই। থাকার কথাও নয়। তাইতো বিদায়ের ঘন্টা বাজিয়ে দিলেন শিখর ধাওয়ান। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রায় ১১ হাজার রান নিয়ে তিনি টেনে দিলেন সমাপ্তি রেখা।